যাদের শুষ্ক ত্বক, তাদের মুখে ঠিক মতো মেকআপ বসতে চায় না। মেকআপ করার পর মুখের মরা কোষগুলো দেখা যায়, যেটা খুব বিব্রতকর। শুষ্ক ত্বকের বেইজ মেকআপ নিয়ে অনেকেই ঝামেলায় পড়েন। শুষ্ক ত্বকে মেকআপ করার আগে কিছু জিনিস খেয়াল রাখলেই, এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর কথা না বাড়িয়ে কিভাবে শুষ্ক ত্বকের বেইস মেকআপ করতে হয় সেটা জেনে নেই তাহলে?
শুষ্ক ত্বকের বেইজ মেকআপ করতে করণীয় ধাপসমূহ
১) স্ক্রাব করুন
যেহেতু শুষ্ক ত্বকে মরা কোষ বেশি দেখা দেয়, তাই মেকআপ করার আগে ভালো করে মুখ স্ক্রাব করতে হবে। যেকোনো ফলের তৈরি স্ক্রাব অথবা চালের গুঁড়া, মধু, চিনি দিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের ব্রাশ দিয়ে মুখে ঘড়ির কাটার উল্টো দিকে যেভাবে ঘুরবে ঠিক সেভাবে পুরো মুখ ভালোভাবে স্ক্রাবিং করুন। এতে করে মুখের সব মরা কোষ উঠে যাবে। ব্ল্যাকহেডস দূর হবে। তারপর ক্রিম-যুক্ত যেকোনো ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এবার একটু বরফ কুঁচি নিয়ে মুখের টি জোন-এ ৫ মিনিট ঘষুন। মুখে টোনার লাগিয়ে ফেলুন। এরপর নিজের ত্বকে স্যুট করে এমন কোন ক্রিম লাগিয়ে ফেলুন।
২) শুষ্ক ত্বকের বেইস মেকআপ করতে ফেইস প্রাইমার লাগান
ত্বকে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য প্রাইমার অনেক জরুরী। আর যেহেতু শুষ্ক ত্বকে এমনিতে মেকআপ বসে না, তাই মুখে মেকআপ বসার জন্য প্রাইমার অবশ্যই দরকার পড়বে। যাদের প্রাইমার নেই তারা বিবি ক্রিম দিয়ে মুখের বেইজ করে নিতে পারেন। প্রাইমার-এর পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে। প্রাইমার অবশ্যই ক্রিম বেইজড হতে হবে (ক্রিম লাগানোর ৫ মিনিট পর প্রাইমার লাগাবেন)।
৩) ফাউন্ডেশন
শুষ্ক ত্বকের বেইজ মেকআপ করার জন্য ক্রিম বেইজড অথবা জেল বেইজড লিকুইড ফাউন্ডেশন ভালো। যারা ফাউন্ডেশন পছন্দ করেন না অথবা সকালে, দুপুরে ভারি মেকআপ দিতে চান না, তারা টিনটেড ময়েশচারাইজার ব্যবহার করতে পারেন অথবা বিবি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। বাসায় টিনটেড ময়েশচারাইজার অথবা বিবি ক্রিম কোনটাই নাই? কোন সমস্যা নেই! ত্বকে স্যুট করে এমন ক্রিম-এর সাথে অয়েল যুক্ত ফাউন্ডেশন সমপরিমাণ মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ফেলুন, হয়ে যাবে টিনটেড ময়েশচারাইজার অথবা বিবি ক্রিম-এর কাজ। টিনটেড ময়েশচারাইজার অথবা বিবি ক্রিম, আপনাকে ন্যাচারাল লুক দিবে। যেহেতু শুষ্ক ত্বকে মুখে অয়েল কম উৎপাদন হয়, তাই ফাউন্ডেশন অবশ্যই অয়েল বেইজড হতে হবে।
৪) ফেইস পাউডার
শুষ্ক ত্বকের জন্য মিনারেল বেইজড ফেইস পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের বেইজ মেকআপ ফিনিশিং-এর জন্য ফেইস পাউডার অবশ্যই দরকার।
৫) ঠোঁট
শুষ্ক ত্বকের বেইস মেকআপ করার মধ্যে লিপস্টিকও পরে কিন্তু! যাদের শুষ্ক ত্বক তারা ঠোঁটে লিপস্টিক দেয়ার পর, মরা কোষ দেখা দেয়। তাই লিপস্টিক দেয়ার আগে টুথব্রাশ দিয়ে ঠোঁট ঘষে মরা চামড়াগুলো উঠিয়ে ফেলুন অথবা চিনি, লেবু দিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব করুন। এতে করে ঠোঁটের মরা কোষ উঠে যাবে এবং ঠোঁটের কালো দাগ-ও থাকবে না। তাছাড়া লিপস্টিক দেওয়ার আগে ঠোঁটে ভেসলিন লাগিয়ে লিপস্টিক দিবেন। যদি খুব তাড়াহুড়া থাকে তাহলে লিপগ্লস অথবা ক্রিম-যুক্ত লিপস্টিক ব্যবহার করবেন।
৬) সেটিং স্প্রে অথবা টোনার
মুখের মেকআপ করা শেষ হয়ে গেলে, সেটিং স্প্রে অথবা টোনার মুখে স্প্রে করুন ২/৩ বার। সেটিং স্প্রে অথবা টোনার কোনটাই নেই?? তাহলে শুধু পানি ২/৩ বার মুখে স্প্রে করে, স্পঞ্জ দিয়ে ট্যাপ করে নিন। এতো করে মুখ হাইড্রেট থাকবে অনেকক্ষণ। মেকআপ করার ৩/৪ ঘণ্টা পরেও মুখে কোন মরা কোষ দেখা যাবে না। তাছাড়া ব্যাগ-এ একটি টোনার অথবা সেটিং স্প্রে রেখে দিন। মেকআপ-কে ৪/৫ ঘণ্টা পর সেট করার জন্য এটি কাজে দিবে।
শুষ্ক ত্বকের বেইজ মেকআপ করার রেগ্যুলার কিছু টিপস
১) খুব বেশি মুখ শুষ্ক থাকলে ফেইস সিরাম ব্যবহার করুন।
২) অনেক বেশি পানি পান করুন। প্রতিদিন ১০ গ্লাস।
৩) চা, কফি পরিহার করুন।
৪) মেকআপ ভালো করে উঠাবেন যেকোনো ক্লিঞ্জিং মিল্ক দিয়ে। অথবা অলিভ অয়েল , নারিকেল তেল দিয়ে।
৫) মেকআপ উঠানোর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে, নাইট ক্রিম লাগান।
তো শুষ্ক ত্বকের বেইজ মেকআপ করা নিয়ে আর কিসের টেনশন? মেকআপ করুন এখন নিশ্চিন্তে। আর ড্রাই স্কিন মেকআপ প্রোডাক্টস আপনি মার্কেট-এ প্রচুর পাবেন। তবে আমার মতো যদি কারো অথেনটিসিটি নিয়ে কনসার্ন থাকে তবে আপনি চাইলে সাজগোজ- এর ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার এই দুই জায়গা থেকে কিনতে পারেন। আর যদি অনলাইন-এ কিনতে চান, তবে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কালেক্ট করতে পারেন! তবে দেখে নিন কিছু ফাউন্ডেশন-
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ, সাটারস্টক