কোরবানির ঈদের সাজের কমপ্লিট গাইড - Shajgoj

কোরবানির ঈদের সাজের কমপ্লিট গাইড

mourin

প্রায় দু মাস আগে হয়ে গেল রোজার ঈদ। এর রেশ কাটতে না কাটাতেই কোরবানির ঈদ এসে পড়লো। আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি, এর পরেই ত্যাগের মহান মহিমা আর বাঁধভাঙ্গা উৎসব আনন্দের জোয়ার নিয়ে সবার দুয়ারে এসে উপস্থিত হবে কোরবানির ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে কেমন হবে আপনার সাজগোজের প্রস্তুতি, তা নিয়েই আজকে আমাদের এই পোস্ট।

বলা বাহুল্য, রোজার ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদের প্রস্তুতি কিছুটা ভিন্ন হয়। যেহেতু সকাল থেকে প্রায় অপরাহ্ণ পর্যন্ত আপনাকে কোরবানির মাংস গুছিয়ে ফ্রিজে রাখা, বিলানো এবং অতিথিদের আপ্যায়নের কাজে সরাসরি নিয়োজিত থাকতে হয় অথবা পরিবারের বড়দের এ কাজগুলোতে সাহায্য করতে হয়, তাই আপনার মেক-আপ এবং পোশাক হওয়া চাই ঘরোয়া এবং যথাসম্ভব আরামদায়ক। এবার কোরবানির ঈদে শরৎকাল থাকবে। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় বেছে নিতে পারেন সুতির যেকোনো সালওয়ার কামিজ। এক্ষেত্রে আমার পছন্দের শীর্ষে দেশের ফ্যাশন হাউস গুলোর তৈরি নিজস্ব পোশাক। আমি সালওয়ার কামিজের কথা এ জন্যই বললাম, কারণ কাজ করার জন্য শাড়ি থেকে সালওয়ার কামিজ অনেক বেশি সুবিধার এবং আরামদায়ক-ও বটে। তবে কেউ একান্ত কামিজ না পরতে চাইলে আমাদের দেশি তাঁত অথবা টাঙ্গাইলের সুতির শাড়ি পরতে পারেন। মেক-আপ হবে একদম হালকা। ঘুম থেকে উঠেই গোসল সেরে নেয়া ভালো। মুখে ময়েশচারাইজার লাগিয়ে তার ওপর হালকা ভাবে কমপ্যাক্ট পাউডার বুলিয়ে নিতে হবে। তবে যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা Astringent লোশোন ব্যবহার করবেন, এতে কাজ করার সময় মুখ ঘেমে তেলতেলে হয়ে যাবে না এবং আপনার চেহারার সতেজতা বজায় থাকবে। এরপর চোখের উপরের এবং নীচের পাতায় ঘন করে কাজল দিন এবং সেটা যেন অবশ্যই ওয়াটার প্রুফ হয়। এবার ঠোঁটে নিউট্রাল কালারের লিপস্টিক লাগান। যেকোনো Pink Undertone এর Brown লিপস্টিক এক্ষেত্রে ভালো লাগবে। আর আপনি চাইলে Light pink, Mauve, Mocha, Lilac এ কালারগুলো ট্রাই করতে পারেন। সবশেষে চুল অবশ্যই বাঁধুন। চুল বড় হলে খোপা করতে পারেন অথবা পেছনে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আটকে রাখতে পারেন। কপালের সামনে দিয়ে কাটা ব্যাঙ্গস, ফ্রিঞ্জ অথবা লেয়ারটি ছেঁড়ে রাখুন। কানে ছোট গোল্ড অথবা ইমিটেশনের স্টোন দেয়া টপ পরতে পারেন। গৃহিণীরা হাতে চিকন গোল্ড প্লেটেড অথবা ইমিটেশনের চুড়ি পরতে পারেন। হয়ে গেল আপনার কোরবানির ঈদের দিনের বেলার সাজ।

Sale • Day & Night Cream, Night Cream, Compact & Pressed Powder

    এবার আসা যাক রাতের সাজের প্রসঙ্গে। সারাদিন ব্যস্ত থাকার পর রাতের বেলা জমকালো সাজের জন্য এনার্জি অথবা মানসিকতা কোনটাই কিন্তু থাকে না। তবে রাতে বা সন্ধ্যায় প্রিয়জন অথবা পরিবারের মানুষ গুলোর সাথে ঘুরতে বের হলে আপনার সাজ হওয়া চাই অনেকটাই এ ছবির মত। পোশাক হিসেবে নির্বাচন করুন আপনার পছন্দের এমব্রয়ডারি করা কোন শাড়ি অথবা সালওয়ার কামিজ। প্রথমে মুখ ক্লিনজিং মিল্ক অথবা স্ক্রাব দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী Moisturizer/Astringent lotion লাগিয়ে নিন। কয়েক মিনিট পরে কোন ভালো মানের ম্যাট লিকুইড ফাউন্ডেশন লাগান। এর ওপর লুস পাউডার বুলিয়ে নিন। চোখের পাতায় গাঢ় নীল, কালো অথবা ব্রোঞ্জ এর মত শেড দিতে পারেন। একে একে ভ্রু আঁকুন, চোখের ওপরের এবং নীচের পাতায় কাজল এবং মাস্কারা দিয়ে আপনার চোখের সাজ শেষ করুন। চেষ্টা করুন লিপস্টিক এবং ব্লাশনের রঙ কাছাকাছি রাখতে। ব্রাউন, পিচ অথবা পিঙ্ক হতে পারে আদর্শ চয়েজ। এবার আপনার চুল খোলা রাখুন। চাইলে স্ট্রেইট করতে পারেন। গলায়, কানে এবং হাতে পরুন হালকা কোন গহনা। বাইরে ঘুরাঘুরির ক্ষেত্রে আমি সবসময় ইমিটেশন এর গহনাকে প্রাধান্য দেই। আপনার পছন্দের পার্স অথবা ক্লাচ ব্যাগটি নিয়ে বেরিয়ে পরুন। খেয়াল রাখবেন আপনার জুতো জোড়া যেন আরামদায়ক হয়।

    এইতো গেল ঈদের দিন-রাত্রির সাজের নমুনা। তবে কোরবানির ঈদের আসল ঘুরাঘুরির মজা কিন্তু ঈদের দ্বিতীয় দিন। যদিও, অনেক পরিবারে বিশেষ করে পুরান ঢাকার কিছু এলাকায় ঐতিহ্য অনুযায়ী ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানি হয়, তবুও বেশির ভাগ মানুষই বিনোদনের জন্য ঈদের দ্বিতীয় দিনটিকে বেছে নেন। তাদের জন্য রইল আমার “জমকালো” সাজের কিছু টিপস। আমি রাতের কথা মাথায় রেখে টিপস গুলো দিচ্ছি। ভালো হয় যদি সবার আগে ত্বকে তার ধরন অনুযায়ী ভালো কোন ফেস প্যাক লাগানো যায়। মুখ মেক-আপের জন্য প্রস্তুত করে panstick অথবা pancake লাগান। এর উপর কমপ্যাক্ট/প্রেসড/লুজ পাউডার লাগান, এতে আপনার মেক-আপ উঠে অথবা গলে যাবে না। চোখের জন্য আপনার গরজিয়াস পোশাকের সাথে মিলিয়ে যেকোনো শেড নিন। তবে কিছু শেড আছে যেমন, কালো, ব্রাউন, ব্রোঞ্জ, মেরুন, কপার এগুলো যেকোনো পোশাকের সাথে সহজে মানিয়ে যায়। ইচ্ছে করলে একাধিক কালার চোখের পাতায় লাগাতে পারেন তবে খেয়াল রাখবেন এক্ষেত্রে ব্লেন্ডিংটা যেন খুব ভালো ভাবে হয়। চোখের নীচের পাতায় সবুজ অথবা নীল শেড দিন। এতে আপনার সাজে কিছুটা ড্রামাটিক ভাব আসবে। এবার ব্রাও বোনে হাইলাইটার অর্থাৎ যেকোনো সাদা, ক্রিম অথবা সিল্ভার শেড দিন এবং ভ্রু টাও এঁকে ফেলুন। টানা করে অথবা ক্যাটস আই স্টাইলে আই লাইনার দিন, খুব বেশি মোটা যেন না হয়। চোখের নীচে কাজল দিন। মাস্কারা দিয়ে চোখের সাজ শেষ করুন। এবার আসা যাক পরবর্তী ধাপে। নাক, থুঁতনি, জও লাইন, চিক বোন ব্রোঞ্জার দিয়ে কন্টউর করুন। গালের হাড়ে ব্লাশন লাগান। ম্যাজেন্টা অথবা ডার্ক ব্রাউন রঙ এক্ষেত্রে ভালো মানাবে। এর ওপর শিমার পাউডার ব্রাশ দিয়ে বুলিয়ে নিন, এতে মুখটা খুব-ই গ্লেজি লাগে। লিপ লাইন করে লিপস্টিক লাগান। আপনি সিমপ্লিসিটি পছন্দ করলে নিউট্রাল কালার আর সাহসী কালার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে চাইলে রুবি রেড, ডার্ক ফুশিয়া অথবা ডিপ ওয়াইন কালারে আপনার ঠোঁট রাঙ্গিয়ে নিন। আপনার পছন্দ অনুযায়ী গহনা পরুন। পার্স নিন এবং চেস্টা করুন মিডিয়াম হিলের জুতা পরার। সব শেষে আপনার পছন্দের সুগন্ধি লাগিয়ে বেরিয়ে পরুন।

    raat

    বাইরে থেকে এসে মেক-আপ তুলতে ভুলবেন না যেন। আশা করি পোস্টটি আপনাদের কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। কেমন লাগল কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের ঈদ হোক আনন্দময় এই কামনায় আজ শেষ করছি।

    লিখেছেনঃ সামিরা মৌরিন

    মডেলঃ সামিরা মৌরিন

    ফটোগ্রাফিঃ ইউসুফ ফরহাদ

    0 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort