গত লেখাটির জেড় ধরেই আজকের লেখাটি। এটি সেই সব পাঠক বন্ধুদের জন্য যারা শাড়ির লেখা দেখে কিছুটা মন খারাপ করেছিলেন-শাড়ি পরার অপারগতার জন্য। চিন্তার কিছু নেই,আজকের লেখাটি আপনাদের জন্যে।
সালোয়ার-কামিজঃ
সদ্য কিশোরী বা কিছু তরূণীরাও আছে যারা শাড়িতে তেমন একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। আর পরার অভ্যাস নেই বলে বেশিক্ষণ শাড়ি পরে থাকতেও পারে না। তাই তরুণিদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সালোয়ার কামিজ।
চিরাচরিত কাটের সালোয়ার কামিজ ছাড়াও এখন নানা ঢঙ্গে ও স্টাইলে পাওয়া যায় এ সালোয়ার কামিজ। নরমাল কামিজের সাথে সালোয়ারের পরিবর্তে চুরিদার, পালাজো, চোস্ত, ডিভাইডার বা প্যান্ট কাট সালোয়ার নেওয়া যেতে পারে। আজকাল ডিজাইনার পালাজো খুব চলছে।তাই চাইলে ঐ রকম একটা পালাজো কিনে তার সাথে ম্যাচিং কামিজ ও ওড়না করে নিতে পারেন।
যদি চান প্লেইন সালোয়ার এর সাথে ডিজাইনার কামিজ পরবেন তাও করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ভিন্ন কাটের কামিজ ট্রাই করুন। যেমন-কামিজের সামনের ও পেছনের অংশের ভিন্নতা আনতে পারেন, লেংথ সামনে-পেছনে বা ডানে-বামে দুই রকম মানে ছোট বড় করতে পারেন। অথবা সেমিজের কাপড় প্রিন্টেড বা কাতানের নিয়ে ট্রান্সপারেন্ট কন্ট্রাস্ট কামিজ বানাতে পারেন বা হাফ বডি ডিজাইন করতে পারেন। এখন শেরোয়ানি কাটের কামিজ ও ভীষণ চলছে। সিঙ্গেল বা ডাবল ডিজাইন্ড শেরোয়ানি কাট কামিজ তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। করতে পারেন কোটি স্টাইলের কামিজ ও, এটিও এখন বেশ জনপ্রিয়।
স্লীভলেস না করে থ্রি-কোয়ার্টার বা ফুল স্লীভের ড্রেসে বেশি ভালো লাগবে। টিসু, প্লেইন নেট বা মসলিন কাপরের স্লীভ ও ব্যবহার করতে পারেন। এতে ফুল স্লীভ ডিজাইনের পাশাপাশি স্লীভলেস একটা ইফেক্টও দেবে।
সেগুলোর সাথে লেইস, ফিতা, স্টোন, বাটন, ইয়োক ও ব্রোচের ব্যবহারে আনতে পারেন নতুনত্ব তথা ব্যক্তিত্বের ছোঁয়া । এছাড়াও এপ্লিক, এমব্রয়ডারি, কাট ওয়ার্ক তো রয়েছেই। যারা হিজাব করেন তারা চাইলে কামিজের সামনের অংশের পরিবর্তে হাতা ও নিচের ঘেরের দিকে প্রাধান্য দিতে পারেন। তবে যাই করুন না কেন কোন কিছুই মিশিয়ে ফেলবেন না। যেমন একই কামিজে লেস,ইয়োক,বাটন সব কিছু ব্যবহার করতে যাবেন না।
কাপড় হিসেবে নজর দিন আরামের দিকে। সুতির কাপর বেছে নিতে পারেন নির্দ্বিধায়। তাছাড়া জর্জেট, শিফন, আমেরিকান ক্রেপ, লিলেন, সিল্কও ট্রাই করতে পারেন। ডিজাইনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারেন ডাবল নেট, সিকোয়েন্স, ভেলভেট ও সাটিন কাপড়ও।
আপনার পছন্দের যে কোন রঙেই তৈরি করিয়ে নিতে পারেন পছন্দমত কামিজটি। হলুদ, নীল, বেগুণী, কমলা, সবুজ শেড বা মিশেল কোন প্রিণ্টেড অথবা তৈরি করা কামিজও কিনে নিতে পারেন।
অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই সালোয়ার-কামিজের বেশি প্রাধান্য দেন ওড়নার দিকে। আপনি যদি এ দলে পড়ে থাকেন তবে তো কোন কথাই নেই। রেডিমেড ওড়না তো পাবেনই চাইলে করিয়ে নিতে পারেন মন মত ওড়না। ব্লক, বাটিক বা টাইডাই ছাড়াও এখন ওড়নাতে এমব্রয়ডারি, হাতের কাজ, সুতা বা সিকোয়েন্সের কাজ, জরি,পুঁতি ও জারদৌসি ও করানো হয়। তাছাড়া লেস, ঝুমকা ও মিরর ব্যবহারেও ওড়নাকে বানিয়ে ফেলতে পারেন অসাধারণ। গুজরাটি ও লাখনৌ কাজের ওড়না গুলোও বেশ সুন্দর।
সালোয়ার কামিজের সাথে অনেক বেশি গহনা ব্যবহার করতে যাবেন না। যে কোন এক দিকে জোড় দিন। কানে ভারী কিছু পরলে গলা খালিই রাখতে পারেন। দু হাতে চুরি পরুন। এক হাতে ব্রেসলেট ও অন্য হাতে ঘড়িও পড়তে পারেন। সে ক্ষেত্রে ফ্যাশনেবল কোন ঘড়ি বেছে নিন। দু হাতেই পরতে পারেন ফিঙ্গার রিং, ড্রেস এর সাথে ম্যাচ করে তো বটেই কন্ট্রাস্ট কালারের রিংও খুব ভালো মানিয়ে যায়।
বড় ব্যাগ মানিয়ে যাবে সহজেই। সেই সাথে ঝোলা, ক্লাচ বা বটুয়াও মানানসই হবে। যে কোন ধরনের আরামদায়ক জুতা বেছে নিন। ভিন্ন কিছু চাইলে ব্যালেরিনা বা নাগরা ও পরতে পারেন।
রেডিমেড সালোয়ার কামিজ কিনতে যেতে পারেন বিপনী বিতান গুলোতে। কিংবা অনলাইনেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের পোষাকটি।আর নিজে ডিজাইন করতে চাইলে চলে যান চাঁদনী চকে । সেখানে সব ধরনের কাপড়, লেস ও অন্যান্য জিনিস পেয়ে যাবেন সহজেই।
(এটিই শেষ নয়; ফিউশন ও ওয়েস্টার্ণ নিয়েও লেখা থাকবে আশা করি)
লিখেছেনঃ রোজা স্বর্ণা
ছবিঃ ভিআইওয়ালপেপার.কম, হোয়াইট ম্যাঙ্গো.ইন