পহেলা ফাল্গুনকে কেন্দ্র করে পোষাক নির্বাচনী ধারাবাহিক লেখার এটিই শেষ অংশ। আজকের লেখাটি থাকবে পশ্চিমা ধাচ ও পূর্ব-পশ্চিমের সম্মিলনে যে সব ফিউশন ড্রেস হতে পারে সেগুলো নিয়ে। যদিও পহেলা ফাল্গুন বাংলা ক্যালেন্ডার থেকে আগত এবং সব সময় বাঙালীয়ানা ধাঁচে পালন করতেই সবাই বেশি পছন্দ করে থাকে, আজকাল তরুনীরা সব ধরনের পোষাক ট্রাই করতেই ভালোবাসে।
গাউনঃ
কম বয়সী মেয়েদের কাছে গাউন খুব পছন্দের একটি পোষাক, সেই সাথে সব বয়সী মেয়েদেরই এখন গাউন পরতে দেখা যায়। গত ২-৩ বছরে গাউন তার নিজস্ব জায়গা বেশ পোক্তভাবেই করে বসেছে। ফ্লোর টাচ লং গাউন পহেলা ফাল্গুনেও অনায়াসেই পরতে পারেন, যদি আপনি কমফরটেবল হয়ে থাকেন। এর আগে যদি গাউন পরার অভ্যাস না থাকে তবে হুট করে শুধু পহেলা ফাল্গুনের জন্য গাউন কিনতে যাবেন না যেন। বাজারে অনেক রকম গাউন পাওয়া যায়। এক সময় সুন্দর গাউন গুলো বাইরে থেকে আনানো লাগত। তবে এখন আর সে সমস্যা নেই। আমাদের দেশেই বিভিন্ন শপিং মলে বেশ ভালো ভালো গাউন পাওয়া যায় । এছাড়া দর্জিরাও এখন গাউন বানিয়ে অভ্যস্ত। তাই আপনি চাইলেই মন মত ডিজাইনে বানিয়ে নিতে পারবেন আপনার গাউনটি।
গাউন বিভিন্ন ফেব্রিকে ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। তবে পিউর ওয়েস্টার্ন গাউন গুলোতে অত চাকচিক্যময় কিছু থাকে না। এগুলো বেশ আরামদায়ক জার্সি কাপড়ে তৈরি করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিফন ও জর্জেটের ব্যবহারও লক্ষণীয়। অনেক রকম কাটের হয়ে থাকে এ গাউন গুলো। শর্ট স্লীভ, স্লীভ লেস আবার কখনো কখনো ফুল স্লীভেরও পাওয়া যায় (যদিও এর সংখ্যা খুব কম)। ফ্লোর লেংথ তো বটেই এর চেয়ে কম লম্বার গাউনও এ আওতাধীন। আর যদি ইন্দো-ওয়েস্টার্ণ গাউন দেখতে চান তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফেব্রিক হিসেবে পাবেন নেট এবং স্টোন, জরি, জারদৌসি কাজ করা থাকে সেগুলোতে। এগুলো সাধারণত আনারকলি কাট এর হয়ে থাকে এবং ফ্লোর পর্যন্ত হয়।
বিদেশি ওয়েবসাইট তো আছেই, তাছাড়া বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক এর বিভিন্ন দোকান, স্কিকোসো, তাহুর, শো-কেস, ভায়োলা সহ আরো কিছু নিজস্ব আউটলেটে পাবেন রেডিমেড ও কাস্টম মেড গাউনগুলো। ক্যাজুয়াল ওয়েস্টার্ন গাউনগুলোর দাম পড়বে ৩০০০-১০,০০০ পর্যন্ত। ইন্দো-ওয়েস্টার্ণ গাউন গুলো ২০০০-২০,০০০ পর্যন্ত।
আর আপনি যদি চান তবে বানিয়েও নিতে পারেন পছন্দ মত গাউন। জার্সি, লিনেন, শিফন, ক্রেপ কাপড় ট্রাই করতে পারেন গাউন বানানোর ক্ষেত্রে। মোটামুটি ঘেড়ের মধ্যে ৫২-৫৪ ইঞ্ছি লেংথের গাউন বানাতে ৬-৭ গজ কাপড় লাগবে (সাড়ে ৩ হাত বহর) । আর ঘেড় বেশি চাইলে ১০ গজ কাপড় লাগে।
জাম্পসুটঃ
প্রিন্টেড জাম্পসুট গুলো বসন্ত কালের জন্য আদর্শ। এক রঙা জাম্পসুটও পরতে পারেন সাথে প্রিন্টেড কোটির সাথে।জাম্পসুটও কয়েক ধরনের হয়। তবে স্লীভ লেস জাম্পসুটই বেশি দেখা যায়। আপনি চাইলে এভাবেই পরতে পারেন নয়ত একই রঙের বা কন্ট্রাস্ট কালারের কোটি ব্যবহার করতে পারেন। আবার ট্রান্সপারেন্ট হাতার কোটিও ব্যবহার করতে পারেন নতুনত্ব আনতে। একটা দিকে খেয়াল রাখবেন যেন জাম্পসুটও কোটি দুই টাই প্রিণ্টেড না হয়। একটা প্রিন্টেড নিলে অন্যটা সলিড কালারের সাথে ব্যলেন্স করবেন।
আমাদের দেশেই পাওয়া যায় জাম্পসুট। ক্যাটস আই, ইস্টেসি, স্কিকোসোর শো রুমে তো আছেই তাছাড়া বাটারফ্লাই বাই সাগুফতা, বিউটিফুল ইউ নামক ফেসবুক পেজেও কিনতে পাবেন জাম্পসুট। এগুলোর দাম (কাপড়ের কোয়ালিটি ভেদে) ১৪০০-৬০০০ পর্যন্ত।
ফাল্গুনকে সামনে রেখে ফ্লোরাল প্রিন্টেড জাম্পসুট বাছাই করতে পারেন। কিংবা ফাল্গুনের কোন কালার কে মাথায় রেখে জাম্পসুট তৈরি করে নিলেন আর সাথে নিন ফ্লোরাল কোট । তাহলেই দেখবেন ওয়েস্টার্ন আউটফিটেও আপনাকে স্নিগ্ধ ও অনন্য লাগছে।
আশা করছি ফাল্গুনের পোষাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে আর্টিকেল গুলো আপনাদের অনেক সাহায্য করবে। আপনার ব্যস্ত রুটিনের ঝক্কি কিছুটা কমাতে পারলেও আমার লেখা স্বার্থক। সবার সুসাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করে শেষ করছি।
লিখেছেনঃ রোজা স্বর্ণা
ছবিঃ ইন্ডিয়ানরুটস.কম