সোনামণি খাবে নিজের ইচ্ছাতেই - Shajgoj

সোনামণি খাবে নিজের ইচ্ছাতেই

31673_1356625408505_3102915_n

আজকাল মায়েদের মুখে প্রায়ই একটা অভিযোগ শুনতে পাওয়া যায়- তার বাচ্চা খেতে চায়না বা যুদ্ধ করে অনেকক্ষণ ধরে খাওয়াতে হয়। আসলেই কি তাই? খিদে পেলেও খেতে চায়না বাচ্চা? নাকি মা হিসেবে আপনারই বাচ্চার চাহিদাটা বুঝতে ভুল হচ্ছে কোথাও?  কী করা যেতে পারে? আসুন জেনে নিই-

[picture]

Sale • Baby Care, Bath Time, Creams, Lotions & Oils

    মা কীভাবে বুঝবেন তার শিশুটির সত্যিই পেট ভরেছে?

    সদ্যোজাত শিশু মাতৃদুগ্ধ ঠিক মতো পেলে তা খেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে। জেগে থাকলেও কাঁদে না। জন্মের পর থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধই শিশুর একমাত্র খাদ্য। এমনকি পানি পর্যন্ত প্রয়োজন নেই। অনেকে দুধ ঠিক মতো দিতে জানেন না। অর্থাৎ বাচ্চার যে খেতে অসুবিধা হচ্ছে, সে টানতে পারছেনা এটা অনেক সময় মা বুঝতে পারেন না। এক্ষেত্রে ডাক্তার বা বাড়ির অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিতে পারেন। সাধারণত বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় হাতের চারটা আঙ্গুল স্তনের নিচে আর একটা ওপরে রেখে খাওয়ানো হয়। কিন্তু এই সহজ নিয়মটা না জানার কারণে অনেক সময় বাচ্চার খেতে সমস্যা হয়। মায়ের বুকে দুধ নেই এই কথা টাও ঠিক না। বাচ্চা যত বেশি টানবে ততবেশি দুধ আসবে। অর্থাৎ বাচ্চা যখন জন্মেছে, মায়ের বুকে দুধ থাকবেই। এটা তো হরমোনের স্বাভাবিক সিক্রিয়েশন। কাজেই চেষ্টা করতে হবে বার বার। শরীরের গঠনগত কারণে নিপল অর্থাৎ স্তনের বোঁটা ঠিকমত না থাকলে দুধ টানতে শিশুর অসুবিধা হয়। অনেকেরই নিপল ভেতরের দিকে বসা থাকে। এক্ষেত্রে সন্তান গর্ভে থাকাকালীন সময় থেকেই স্তনের যত্নের ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে। তবে হ্যাঁ, সবার আগে মায়ের পুষ্টির যেন কোন কমতি না হয় সেই ব্যাপারটাও নিশ্চিত করতে হবে।

    তারপরেও যদি মায়ের মনে হয় কম খাচ্ছে?

    যত যাই হোক মায়ের মন বলে কথা। বাচ্চা কম খাচ্ছে, মায়ের এমনটা মনে হতেই পারে। মা সবসময়ই ভাবেন আরও একটু খেলে বা স্বাস্থ্য আরও একটু ভালো হলে সব কিছু ঠিক আছে। বাচ্চার সত্যিই পেট ভরেছে কিনা বা তার ঠিক মতো বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা টা বুঝার সহজ উপায় হল বাচ্চাটি দিন রাত মিলিয়ে ছয়বার ইউরিন পাস করছে কিনা দেখা। এর চেয়ে বেশি হয় হোক তাতে ক্ষতি নেই এতটুকু। তাছাড়া নির্দিষ্ট কোনও সময় ধরে নয়, বাচ্চার যখন আর যতক্ষণ মন চাইবে ততক্ষণ খাওয়াতে হবে। মনে রাখতে হবে এখানে মায়ের ইচ্ছাপূরণ নয় , বাচ্চার ইচ্ছাপূরণের সুযোগ প্রাধান্য পাবে।

    বাচ্চার বৃদ্ধি বা বুদ্ধির বিকাশ ঠিক মতো হচ্ছে কিনা মা কীভাবে বুঝবেন?

    বয়স অনুপাতে বাচ্চার ওজন ঠিক থাকলেই বাচ্চার বৃদ্ধি হচ্ছে বোঝা যাবে। বুদ্ধির বিকাশ নানাভাবে বোঝা যায়। তার সঙ্গে কথা বললে, নানা রকম আওয়াজ করলে তার প্রতিক্রিয়া দেখে বোঝা যাবে। আপনার আওয়াজে সে আপনার দিকে তাকাবে, সাড়া দেবে। বোঝা যাবে আপনি তার সামনে থেকে একটু সরে গেলে তার আপনাকে খোঁজার আকুতি থেকে, তাঁর একা একাই খেলা বা হাসি দেখে (এসব একদম ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে)। বুদ্ধির বিকাশের সবচেয়ে বড় ওষুধ হল মাতৃদুগ্ধের ব্যবহার। যে শিশু যত বেশি মায়ের দুধ পানের সুযোগ পাবে সে ততবেশি বুদ্ধির বিকাশের পরিচয় দেবে। এছাড়া তার শরীরেও গড়ে উঠবে অদ্ভুত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। স্বাভাবিক বৃদ্ধিও হবে খুব তাড়াতাড়ি। প্রকৃতির নিয়মে সন্তানের জন্য মায়ের দুধ এমনভাবেই তৈরি হয়ে আসে যে তা শিশুর জন্য সব দিক থেকেই উপকারী।

    বাচ্চা একটু বড় হলে অর্থাৎ হাঁটতে বা কথা বলতে শেখার পর খাওয়া নিয়ে বায়না করলে কী করা উচিত?

    বাচ্চার বয়স এক বছর হলেই তাকে নিজে নিজে খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে। বাচ্চাকে নিজে নিজে খেতে বললে সে সবচেয়ে বেশি খুশি হয় ও আনন্দ পায়। খেতে গিয়ে সে খাবার কিছুটা নষ্ট করে ফেলুক, দুই হাতে-মুখে-শরীরে মেখে ফেলুক, এদিক ওদিক ঘুরে ঘুরে খাক, বাধা দেবেন না একদমই। বরং অমন করেই সে খাওয়ার মাঝে আনন্দ খুঁজে নেবে। এভাবেই সে তার শরীরের জন্য প্রয়োজনমত খাবার টুকু নিয়ে খেয়ে নেবে। ৫-৬ মাস বয়স থেকে আস্তে আস্তে অন্যান্য খাবার দেওয়া যেতে পারে। এই সব খাবার দেওয়ারও পদ্ধতি আছে। মায়ের দুধের তুলনায় একটু ঘন খাবার অর্থাৎ সব রকম সেদ্ধ সবজি সামান্য লবণ দিয়ে চটকানো, পাতলা সুজি ইত্যাদি। এতে অভ্যস্ত হলে আরও একটু শক্ত যেমন সবজির সাথে ডাল ভাত চটকানো এসব। এছাড়া বাড়িতে বানানো ফলের রস, পাকা কলা নরম করে দেওয়া যেতে পারে। সে খেতে চাক বা না চাক, খাওয়ার অভ্যাস তৈরির জন্য আর সাধারণ খাবারে অভ্যস্ত করার জন্য সব খাবারই তার সামনে দিতে হবে। বড়দের খাওয়ার সময় তাকেও সবার সঙ্গে খেতে বসার সুযোগ করে দিতে হবে। এভাবেই সে অভ্যস্ত হবে।

    সমস্ত নিয়ম মেনেও যখন শিশু না খেতে চায় বা ওজন দিন দিন কমে যায় তখন কী করা উচিত?

    দেরি না করে তখন অবশ্যই ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে। শিশুটির কোনও অসুখ হয়েছে কিনা, অবসাদ কাজ করছে কিনা, ডাক্তাররা বলবেন। খেতে না চাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। কোন কারণে শিশুর মনে কোন অবসাদ থাকলে তা থেকে খাওয়ায় অনীহা আসে। এই ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

    মডেলঃ সানিকা ।

    লিখেছেনঃ চৌধুরী তাহাসিন জামান

    ছবিঃ প্যারেন্টসডিশ.সিএ

    1 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort