ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন, এই নামটি শুনলেই আমরা মনে করি এটি অ্যাপ্লাই করলে বেইজ মেকআপ অনেক হেভি দেখাবে আর সাথে প্যাচিনেস তো আছেই! এই ধারণাটা কিন্তু মোটেও ঠিক না। কয়েকটি ট্রিকস ফলো করলে ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশনের সাহায্যেই একদম ন্যাচারাল ও ফ্ললেস বেইজ মেকআপ ক্রিয়েট করা পসিবল। আজকের ফিচারে জানাবো ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার ৫টি হ্যাকস ও ট্রিকস, যেগুলো ফলো করলে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করা নিয়ে আপনাদের আর স্ট্রাগল করতে হবে না! একইসাথে বেইজ মেকআপটাও হবে পিকচার পারফেক্ট।
বিভিন্ন ধরনের ফাউন্ডেশন
মেকআপ আইটেমের মধ্যে ফাউন্ডেশন মাস্ট হ্যাভ প্রোডাক্ট হিসেবেই পরিচিত। মার্কেটে নানা রকম ব্র্যান্ডের ভিন্ন ভিন্ন শেইডসের ফাউন্ডেশন অ্যাভেইলেবল, যেগুলোর কভারেজও ডিফারেন্ট হয়ে থাকে। যেমন- লাইট কভারেজ, মিডিয়াম কভারেজ কিংবা ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন। ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন হচ্ছে সেই ফাউন্ডেশন যেটা ব্যবহার করলে একনে, একনে স্পটস, হাইপারপিগমেন্টেশন, রেডনেস কিংবা ব্লেমিশ একবারেই কভার হয়ে যায়। এই কারণে ম্যাক্সিমাম মেয়েদের মেকআপ কালেকশনে একটি ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন থাকেই!
ফ্ললেস ও পারফেক্ট লুক কীভাবে পাবো?
অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে তাদের স্কিনে ফাউন্ডেশন ঠিকমতো ব্লেন্ড হচ্ছে না। অথবা এমনও হয় যে তারা ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার পর তাদের বেইজ দেখতে ন্যাচারাল তো লাগেই না, বরং অনেকটা আর্টিফিশিয়াল আর হেভি দেখায়। কেন এমন হয় জানেন? সঠিকভাবে ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই না করার কারণে! তাহলে কীভাবে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করলে ফ্ললেস মেকআপ ফিনিশ পাওয়া যাবে? বলছি! চলুন জেনে নেওয়া যাক ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার ৫টি দারুণ হ্যাকস ও ট্রিকস!
ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার নিয়ম
১) স্কিন ময়েশ্চারাইজড রাখা
এই ধরনের ফাউন্ডেশনের ফিচার হলো এর ফর্মুলা বা টেক্সচার একটু থিক হয়ে থাকে। এই কারণে যেকোনো ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন যেন স্কিনে প্রোপারলি ব্লেন্ড হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য মেকআপ শুরুর আগে আপনার স্কিনে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করুন৷ এই স্টেপটি ড্রাই, অয়েলি বা কম্বিনেশন – যেকোনো স্কিন টাইপের ক্ষেত্রেই অ্যাপ্লিকেবল। স্কিন ময়েশ্চারাইজড থাকলে যখন ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করবেন, তখন সেটা স্কিনে ভালোমতো ব্লেন্ড হয়ে যাবে। আর ফাউন্ডেশন ব্লেন্ডিং যত ভালো হবে, বেইজটা দেখতে তত বেশি ন্যাচারাল ও পারফেক্ট লাগবে।
২) পোর মিনিমাইজিং প্রাইমার ইউজ করা
মেকআপের শুরুতে প্রাইমার ইউজ করতে হয় এটা তো সবাই জানেন৷ কিন্তু এটা কি জানেন যে ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশনের সাথে কোন প্রাইমার অ্যাপ্লাই করা উচিত? আমিই বলে দিচ্ছি, পোর মিনিমাইজিং প্রাইমার! কারণ এই প্রাইমার আমাদের স্কিনের পোরস ব্লার করতে হেল্প করে৷ তাই পোর মিনিমাইজিং প্রাইমারের পর যখন ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করা হয়, তখন একদম স্মুথ বেইজ ক্রিয়েট করা পসিবল। পাশাপাশি মেকআপ লং লাস্টিং রাখতেও এই প্রাইমার বেশ হেল্প করে।
৩) অল্প অল্প করে ফাউন্ডেশনের কভারেজ বিল্ড আপ করা
ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার সময় অনেকেই ট্রাই করেন একবারে অনেকখানি প্রোডাক্ট স্কিনে অ্যাপ্লাই করার। এটা কিন্তু একটি বড় মিসটেক। বেশি পরিমাণে ফাউন্ডেশন কখনোই স্কিনে প্রোপারলি ব্লেন্ড হতে চায় না এবং বেইজ মেকআপে সাথে সাথেই প্যাচিনেস চলে আসে। অল্প করে প্রোডাক্ট স্কিনে ব্লেন্ড করার মাধ্যমে ধীরে ধীরে কভারেজ বিল্ড আপ করুন। তাহলেই আর এই প্রবলেমগুলো ফেইস করতে হবে না।
৪) ব্রাশ ও বিউটি ব্লেন্ডার ঠিকমতো ইউজ করা
ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার মূল উদ্দেশ্য হলো স্কিনের সব দাগ বা হাইপারপিগমেন্টেশন একটি প্রোডাক্ট দিয়েই কভার করে ফেলা। ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করার জন্য আমরা বিউটি ব্লেন্ডার অথবা ব্রাশ যেকোনো একটি ইউজ করি। আমার সাজেশন হচ্ছে যখন ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করবেন, তখন ব্রাশ আর বিউটি ব্লেন্ডার দু’টোই ইউজ করুন।
কীভাবে ব্যবহার করতে হবে ব্রাশ ও বিউটি ব্লেন্ডার?
সাধারণত ফ্ল্যাট মেকআপ ব্রাশ দিয়ে ব্লেন্ড করলে ফাউন্ডেশনের বেস্ট কভারেজ পাওয়া পসিবল হয়। কারণ ফাউন্ডেশন ব্রাশ বিউটি ব্লেন্ডারের মতো প্রোডাক্ট সোক করে না বা শুষে নেয় না। আবার একইসাথে ব্রাশের সাহায্যে এই ধরনের ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করলে তা দেখতেও আর্টিফিশিয়াল লাগে না। তাই পুরো ফেইসে প্রথমে ব্রাশের সাহায্যে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করে নিন।
এরপর চোখের নিচে, নাক ও ঠোঁটের দু’পাশের অংশে ভেজা বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে ড্যাব ড্যাব করে নিন। সাধারণত এই এরিয়াগুলোতেই আমাদের ফাউন্ডেশন ক্রিজ করে। যখন ভেজা বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে এই এরিয়াগুলো ড্যাব করা হয়, তখন এক্সট্রা ফাউন্ডেশনটুকু সেই ব্লেন্ডার সোক করে নেয়। ফলে আর ক্রিজিংয়ের চান্স থাকে না। এভাবে ব্লেন্ড করলে আপনার বেইজ মেকআপ দেখতে একেবারেই হেভি মনে হবে না এবং ক্রিজ করা নিয়ে টেনশনও করতে হবে না।
৫) ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার দিয়ে ফাউন্ডেশন সেট করা
ফাউন্ডেশন সেট করার জন্য যেকোনো ভালো ব্র্যান্ডের ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার বেছে নিন এবং পাউডার ব্রাশের সাহায্যে অ্যাপ্লাই করুন৷ এই পাউডার স্কিনের এক্সট্রা শাইন ও অয়েল কন্ট্রোল করে। তাই ফাউন্ডেশন সেট করতে এই পাউডারের বিকল্প নেই। চাইলে প্রেসড বা কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়ে টাচ আপ করে নিতে পারেন। এতেও সেইম বেনিফিট পাবেন।
শেষে বলতে চাই সবসময় ট্রাই করবেন ভালো কোয়ালিটির ও অথেনটিক মেকআপ আইটেমস ইউজ করতে। ড্রাই স্কিন হলে ডিউয়ি ফর্মুলার আর অয়েলি স্কিন হলে ম্যাট ফর্মুলার ফাউন্ডেশন বেছে নিন। সাজগোজে পেয়ে যাচ্ছেন মেকআপ, স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টের বিশাল কালেকশন। এখান থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। তাই ভিজিট করুন সাজগোজের অ্যাপ, ওয়েবসাইট কিংবা আউটলেটে।
অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, ইস্টার্ন মল্লিকা, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ