আজকে রিভিউ দিতে যাচ্ছি এমন একটা প্রোডাক্টের যা কিনা Allure Best of Beauty 2013 Winner এবং এ বছর বেষ্ট রিডার চয়েস প্রোডাক্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। প্রথমটুকু পড়েই ইতিবাচক ধারণা হওয়াটাই খুব স্বাভাবিক। আসলেই কী এই ফ্রিম্যানের এই প্রোডাক্টই স্কিনের জন্য ভালো? আসলেই কী ত্বকে গ্লো এনে দিতে সক্ষম? সব ধরনের স্কিনেই কী ব্যবহার উপযোগী? মুখের কালো কালো ছোপ দাগ কী রিমুভ হবে? হ্যাঁ সব কিছুর উত্তর মিলবে আমার আজকের এই রিভিউতে।
Freeman Charcoal & Black Sugar Polish Mask-এর মতে
Charcoal & Black Sugar Polish Mask টি স্কিনের ভেতর থেকে ময়লা, তেল বের করে স্কিনকে শ্বাস নিতে সাহায্য করে। একই সাথে মাস্ক এবং এক্সফলিয়েটর হওয়ায় স্কিনকে পরিপূর্ণভাবে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। এতে থাকা একটিভেটেড চারকোল ত্বককে অতিরিক্ত ড্রাই না করেই ত্বকএর ভিতর থেকে তেল এবং ময়লা অ্যাবজর্ব করে। এবং সুগার স্ক্রাবার ডেড সেল দূর করে ত্বকে সফটনেস এবং গ্লো নিয়ে আসে।সব ধরনের স্কিনে এটা ব্যবহার করা যাবে।
প্যাকেজিং
য়ার টাইট flip-top lid টিউবে মোড়ানো। যার ফলে ড্রেসিং টেবিল অন্যান্য টয়লেট্রিজের সাথে রেস্ট রুমেই রাখতে পারেন। ফ্লিপ টপ লিড থাকায় ময়লা বা জার্ম অ্যাটাকের সম্ভবনা থাকে না। আর অপচয়ও কম হয়।
উপাদানসমূহ
Sucrose, Propylene Glycol, Carbon*, Kaolin, Musa Sapientum (Banana) Fruit Extract , Cocos Nucifera (Coconut) Extract, Zingiber Officinale (Ginger) Root Extract, Psidium Guajava Fruit Extract, Cymbopogon Schoenanthus Extract, Carica Papaya (Papaya) Fruit Extract, Maranta Arundinacea Root Extract, Rubus Idaeus (Raspberry) Fruit Extract, Santalum Album (Sandalwood) Extract, Macrocystis Pyrifera Extract, Nasturtium Officinale Extract, Aleurites Moluccana Extract, Lavandula Angustifolia (Lavender) Oil, Carbomer, Fragrance (Parfum), Iron Oxide (CI 177491).*Activated Charcoal
প্রোডাক্ট ব্যবহারের পর অভিজ্ঞতা
Charcoal & Black Sugar Polish Mask’ ড্রাই টু অয়েলি স্কিনের অধিকারীদের জন্য এটা পারফেক্ট চয়েস! তবে যাদের স্কিন অয়েলি তাদের জন্য সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করা ভালো এতে করে ত্বকের জমে থাকা বাড়তি তেল এবং এটা ভেতর থেকে ময়লা দূর করে বলে ঘন ঘন ব্রণের সমস্যা থেকে শান্তি মিলবে । আর নরমাল এবং ড্রাই স্কিনের জন্য সপ্তাহে একবার ব্যবহারই যথেষ্ট!
প্রথমেই আমি বলে দিতে চাই যদিও এটা এক্সফলিয়েশনের পাশাপাশি ফেসিয়াল মাস্ক কিন্তু এটাকে আমার কাছে ফেসিয়াল মাস্ক হিসেবে নয় বরং এক্সফলিয়েটর হিসেবে বেশী পছন্দ। কারণ এটা ফেসিয়াল মাস্কের মতো ইভেঞ্চুয়ালি স্প্রেডঅ্যাবল নয়। পুরো মুখে মাস্কের মতো এপ্লাই করার জন্য হাত আগে ভালো করে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে আঙ্গুলে বেশ খানিকটা নিয়ে তারপর দিতে হয়। তবে আমার কাছে মজার লেগেছে যে মুখে দেয়ার পর সাথে সাথে এটা মেল্ট হতে শুরু করে যার ফলে স্ক্রাবিং এ বেশ সুবিধা হয়।
উপরে দেয়া ছবি দেখেই বুঝতে পারছেন এই প্রোডাক্টের ঘনত্ব অনেকটা ট্র্যাডিশনাল ফেশিয়াল স্ক্রাবারের মতো। এটা বেশ থিক হওয়া সত্ত্বেও মুখে খুব সুন্দরভাবে প্রলেপ লাগিয়ে নেয়া যায়। একবার যখন আপনি মুখে লাগাতে শুরু করবেন দেখবেন পুরো মুখে পাতলা স্তরের মতো ছেয়ে গেছে। এর চিনির দানাগুলোর আকার মাঝারি ধরনের (না খুব বড়, না ছোট) দানার সাথে লিকুইড বেজটার কন্সিসটেন্সি ঘন হওয়ার কারণে এক্সফলিয়েশন খুব স্মুদলি হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক্সফলিয়েটরের বেজ পাতলা/ওয়াটারি হলে দানাগুলো পড়ে যায় কিন্তু এক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। কাজেই দুশ্চিন্তা কোন কারণ নেই। এই প্রোডাক্টটি আপনাকে নিঃসন্দেহে স্ক্রাবিংয়ের রিয়েল ফিলিং দিবে। তবে একটি কথা আগেই বলে দেই, তা হল এটা একটা ওয়ার্মিং মাস্ক/স্ক্রাব। কাজেই প্রথমবার স্কিনে দেয়ার সাথে সাথে একটু ওয়ার্ম ফিল করবেন। তবে এটা স্কিন জলে (বার্ন আউট) যাওয়ার মতো বা হার্মফুল এমন কোন ব্যাপার নয়। অ্যাপ্লাইয়ের ৬০ সেকেন্ড এর মধ্যে আমার এই ওয়ার্ম ফিলিং চলে গিয়েছিল।
[picture]
আগেই তো বলেছি মাস্কের থেকে এটা আমার স্ক্রাবার হিসেবে বেশী পছন্দ। তাই আমি আগে মুখটা ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে খানিকটা পুরো মুখে লাগিয়ে নেই। এরপর হালকাভাবে সার্কেল আকারে পুরো মুখে স্ক্রাবিং করতে থাকি। ৫ মিনিট পর হালকা পানির ঝপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলি। ধোয়ার পর মুখে একটুও বাড়তি তেল, আঠালোভাব থাকে না, বেশ ফ্রেশ এবং গ্লোয়িং একটা লুক চলে আসে।
এটা ইউজ করার প্রথমে আমার ধারনা ছিল যেহেতু এটাতে সুগার রয়েছে কাজেই ধরে নিয়েছিলাম চিনির যে একটা আলাদা মিষ্টি গন্ধ রয়েছে তেমন কিছু পাব। কিন্তু প্রথমবার টিউবটা খোলার সাথে সাথে খুব সুন্দর একটা ফ্রেশ, হারবাল প্রোডাক্টের মতো সুবাস পেলাম। কাজেই যারা খুব স্ট্রং ফ্রেগ্রেন্স পছন্দ করেন না তাদের জন্য পারফেক্ট! ২ মাস ব্যবহারে আমি আশানুরূপ ফল পেয়েছি। মুখের অতিরিক্ত তেল, ময়লা দূর করার সাথে সাথে স্কিনে গ্লো এনে দেয়। আমার মুখে পুরনো ব্রণের কিছু দাগ ছিল সেই সব দাগ অনেকটা হালকা হয়ে এসেছে। এক কথায় বলা যায়, এট আমার গুড বুকে সামিল হতে পেরেছে।
সবশেষে এটাই বলব এই পর্যন্ত আমার ইউজ করা ড্রাগ ষ্টোর এক্সফলিয়েটরগুলোর মধ্যে এটাই আসলে বেষ্ট চয়েস ছিল। এটা ঠিক তেমনই একটা এক্সফলিয়েটর মাস্ক যেমনটা আমি খুজছিলাম। খুব বেশী হার্শ না আবার সুগার থাকার পরেও সটীকি না। এটা ইউজ যেমনই খুব সহজ ঠিক তেমনই রিমুভের সময় খুব বেশী ধকল নিতে হয় না। কেবল কয়েক ঝাপটা পানি। ব্যস! এরপর স্কিন এতোটা স্মুথ হয় যে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। যদিও আমি একটু হেভি স্ক্রাবিং পছন্দ করি কিন্তু এই প্রডাক্টটা ইউজ করার পর আমি আসলেই এর ফ্যান হয়ে গেছি। কাজেই বলব একবার ট্রাই তো মাস্ট!
কোথায় পাবেন?
১৭৫ এমএল এর দাম পড়বে ৭৫০ টাকা। শপ.সাজগোজ.কম-এর সীমান্ত স্কয়ার এবং যমুনা ফিউচার পার্ক ব্রাঞ্চ থেকে আপনি নিজে দেখে কিনতে পারবেন অথবা তাদের ওয়েবসাইট থেকে ঘরে বসেও অর্ডার করতে পারবেন।
লিখেছেন – মরিয়ম আকতার