সামনেই আসছে বাঙালির প্রাণের উৎসব, পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। আমরা অনেকেই বৈশাখে বাসার বাইরে ঘুরতে বের হই, বন্ধুদের সাথে, পরিবারের সাথে। অনেকে আবার বাসাতেই সারাদিন থাকা হয়, তবুও একটু ভালোমন্দ রান্নাবান্না, একটু সাজগোজ কিন্তু করাই হয়, তাই না? কে না চায় বাংলা বছরের প্রথম দিনটিতে তাকে সুন্দর দেখাক!
গার্নিয়ার লাভারদের জন্য বিউটি ইনফ্লুয়েন্সার বাসমা সম্প্রতি খুব সিম্পল এবং একইসাথে গ্ল্যামারাস একটা বৈশাখী মেকআপ লুক করে দেখিয়েছেন। আমরা আজকে এই মেকআপ লুকটা কিভাবে তৈরি করা যায়, সে বিষয়ে একটু জানবো।
(১) মেকআপ শুরু করার আগে প্রথমে যেটা করা উচিত, সেটা হলো মুখটা ভালো করে ধুয়ে নেয়া। আর সেজন্য বাসমা গার্নিয়ার লাইট কমপ্লিট হোয়াইট স্পিড ফেইসওয়াশ-টা দিয়ে ভালো করে উনার ফেইসটাকে পরিষ্কার করে নিয়েছেন। এই ফেইসওয়াশটা স্কিনের মলিনতা, নির্জীব ভাবটা দূর করে স্কিনকে একটা রিফ্রেশিং ফীল দিতে সাহায্য করে।
(২) মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। আর আজকে বাসমা যে ময়েশ্চারাইজারটা ব্যবহার করেছেন, সেটা হলো গার্নিয়ার লাইট কমপ্লিট ময়েশ্চারাইজার। এই ময়েশ্চারাইজারটি একদম বাজেট ফ্রেন্ডলি। আর এর নিয়মিত ব্যবহারে এটা স্কিনের নির্জীব আর মলিন ভাবটাকে দূর করতে সাহায্য করে। সেই সাথে ধীরে ধীরে স্কিনের বিভিন্ন দাগ আর অসামঞ্জস্যতাকে দূর করে স্কিনকে একটা ইভেন টোন দিতে সাহায্য করে।
(৩) এইবার সানস্ক্রিন ব্যবহারের পালা। সূর্যের ক্ষতিকর ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মি থেকে স্কিনকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করাটা খুবই জরুরী। গার্নিয়ার সান কন্ট্রোল সানস্ক্রিনটি সবরকম স্কিনের জন্যই ভালো আর নিঃসন্দেহে বাজেট ফ্রেন্ডলি। আপনার ত্বকের যত্ন সবার আগে। কারণ স্কিন যদি ভালো না থাকে, আপনি অনেক মেকআপ করলেও কম সুন্দর লাগবে।
(৪) এবার মেকআপ শুরু করার পালা। মেকআপ স্টার্ট করার আগে প্রাইমার অ্যাপ্লাই করে নেয়াটা জরুরি। প্রাইমার স্কিনের উপরে সারফেসটাকে স্মুদ করে এবং সেই সাথে ফাউন্ডেশন আর স্কিনের মাঝে একটা প্রোটেক্টিভ লেয়ার তৈরি করে, ফলে ফাউন্ডেশনের উপাদান আর স্কিনের ন্যাচারাল অয়েল মিশে গিয়ে স্কিনের রোমকূপগুলোকে বন্ধ করে ফেলতে পারে না এবং মেকআপ-টা লং লাস্টিং হয়।
(৫) প্রাইমারের পর এবার কালার কারেক্টিং এর পালা। স্কিনের যেখানে যেখানে ডার্ক স্পটস, পিগমেন্টেশন আছে, সেসব জায়গায় কালার কারেক্টরের সাহায্যে সেই ইমপারফেকশন-গুলোকে ঢেকে দেয়া যায়।
(৬) যেহেতু বৈশাখে প্রচণ্ড গরম থাকে এবং হালকা মেকআপেই স্বস্তি মেলে তাই চাইলে বেইজ মেকআপের জন্য ফাউন্ডেশন ইউজ না করে গার্নিয়ার বিবি ক্রিম ইউজ করা যায়। হাতের আঙুল বা ফাউন্ডেশন ব্রাশ অথবা ভেজা বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
(৭) এবার চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল ঢাকতে কন্সিলার অ্যাপ্লাই করে নেয়া হলো।
(৮) পুরো মুখের বেইজ মেকআপ-টা ভালোভাবে পাউডারের সাহায্যে সেট করে নেয়া হলো।
(৯) চোখের উপরের অংশে আই প্রাইমার বা কনসিলার লাগিয়ে পাউডার দিয়ে সেট করে নেয়া হলো। এবার গ্লিটার আইশ্যাডো দিয়ে ক্রিজটা কমপ্লিট করে আইলাইনার আর মাস্কারা লাগিয়ে নেয়া হলো। আপনারা চাইলে আপনাদের পছন্দমত অন্যভাবেও আই মেকআপ-টা করতে পারেন।
(১০) আমাদের ফেইসে ন্যাচারালি কিছু আলো আর ছায়ার কারণে শেইড পড়ে। ফলে ফেইসটা ন্যাচারাল দেখায়। বেইজ মেকআপ করার পর কন্ট্যোরিং-এর মাধ্যমে ফেইসটাকে আরেকটু ডিফাইন করা যায়। ফলে ফেইসটা ভিজিবলি অনেক শার্প আর আকর্ষণীয় দেখায়। তাই দু গালে, দুই জ লাইনে, নাকে কন্ট্যোরিং করে নেয়া হলো।
(১১) এবার দু গালে সামান্য ব্লাশের ছোঁয়া আলতো হাতে বুলিয়ে নেয়া যাক।
(১২) চোখের নিচে, গালের উপরের অংশে, নাকের উপরে, হাইলাইটার ইউজ করে নেয়া হলো।
(১৩) এবার গাড় লাল রঙের লিকুইড লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করে নেয়া হলো।
ব্যস! আপনি রেডি!
পহেলা বৈশাখে বন্ধুবান্ধব আর প্রিয়জনকে চমকে দিতে এই বৈশাখী মেকআপ লুকটি ট্রাই করতে পারেন। আর অবশ্যই কিছু জিনিস মাথায় রাখবেন – মেকআপের চেয়ে কিন্তু অনেক অনেক বেশি জরুরি হলো স্কিনকেয়ার। আপনার ত্বক সুন্দর না হলে কিন্তু সব সাজ মাটি। নিয়মিত ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়া, টোনার ব্যবহার করা, ময়েশ্চারাইজার আর সানস্ক্রিন ইউজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আর এজন্য যে খুব বেশি খরচ করতে তা কিন্তু একদম নয়। গার্নিয়ারের লাইট কমপ্লিট রেইঞ্জের প্রোডাক্ট কিন্তু একদম বাজেট ফ্রেন্ডলি এবং প্রায় সব টাইপের স্কিনেই ব্যবহার করা যায়। আপনার স্কিন হেলদি থাকলেই আপনাকে সুন্দর লাগবে।
সবাইকে অগ্রিম পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ।
Take Care.
লিখেছেন – ফারহানা প্রীতি
ভিডিও টিউটোরিয়াল – সাজগোজ ডট কম