ত্বকের যত্নে নিজের স্কিন টাইপ জানা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি চুল হেলদি ও শাইনি রাখতে হেয়ার টাইপ জানাও ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ৷ নিজের চুলের ধরন না জানলে যত হেয়ার কেয়ারই করা হোক না কেন, কখনোই এক্সপেকটেড রেজাল্ট পাওয়া যায় না। থিক ও থিন -এ দু’টো হেয়ার টাইপ সম্পর্কে মোটামুটি সবার আইডিয়া থাকলেও ফাইন হেয়ার নামেও একটি হেয়ার টাইপ রয়েছে – তা অনেকেরই অজানা। ফাইন হেয়ার vs থিন হেয়ার নিয়ে আজকের ফিচার।
ফাইন হেয়ারের যত্ন নেওয়া বেশ ট্রিকি। তার উপর কিছু মিসটেকস এর কারণে হেয়ার ড্যামেজ হওয়ার পসিবিলিটিও থাকে! আজকের ফিচারে এটাও জানাবো ফাইন হেয়ার হেলদি রাখতে কোন মিসটেকগুলো একদমই করা উচিত না।
ফাইন হেয়ারের কিছু ফিচারস
চলুন শুরুতেই কোন হেয়ার টাইপকে ফাইন হেয়ার বলা হয় তা জেনে নেওয়া যাক। যখন সিঙ্গেল হেয়ার স্ট্র্যান্ডের ডায়ামিটার বা প্রশস্ততা অনেক কম থাকে, তখন সেই হেয়ার টাইপকেই ফাইন হেয়ার বলা হয়। ফাইন হেয়ার আইডেন্টিফাই করার খুব ইজি একটি হ্যাক শেয়ার করি। একটি হেয়ার স্ট্র্যান্ড নিয়ে দু’ আঙুলের মাঝে আলতো করে চেপে ধরুন। এবার যদি হেয়ার স্ট্র্যান্ডটি সেভাবে ফিল করতে না পারেন, তাহলে ধরে নিতে হবে আপনি ফাইন হেয়ার টাইপের অধিকারী।
ফাইন হেয়ার ন্যাচারালি বেশ স্মুথ হয়ে থাকে। তবে হেয়ার ডায়ামিটার কম থাকার কারণে এ ধরনের চুলে ড্যামেজ হওয়ার চান্স খুব বেশি। সেই সাথে ফাইন হেয়ার খুব দ্রুতই গ্রিজি হয়ে যায়। আবার দেখা যায়, ভলিউম কম থাকে বলে নিজের পছন্দের হেয়ারস্টাইল করতে গেলেও স্ট্রাগল করতে হয়।
ফাইন হেয়ার vs থিন হেয়ার
এবার এই কনফিউশন ক্লিয়ার করি। অনেকেই মনে করেন, ফাইন হেয়ার ও থিন হেয়ার বোধহয় একই! কিন্তু না, এ দু’টো হেয়ার টাইপে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। প্রতিটি হেয়ার স্ট্র্যান্ডের প্রশস্ততা কম ও একইসাথে স্ট্র্যান্ডগুলো লাইট ওয়েট হয়ে থাকলে সেটিকে ফাইন হেয়ার বলে। তাই যাদের এই টাইপের হেয়ার, তাদের চুল বেশি থাকলেও দেখতে সেভাবে ভলিউমিনাস লাগে না৷ স্ক্যাল্পও দেখা যায় অনেক সময়, হেয়ারে স্লিক অ্যাপেয়ারেন্স ভিজিবল হয়।
অন্যদিকে যদি কারো হেয়ার ডেনসিটি বা ঘনত্ব কম থাকে, তখন সেই হেয়ার টাইপকে থিন হেয়ার বলে। অর্থাৎ চুলে যদি হেয়ার স্ট্র্যান্ডের সংখ্যা কম থাকে এবং এ কারণে ভলিউম পাওয়া যায় না, তখন সেটিকে থিন হেয়ার বলে ধরে নেওয়া হয়।
ফাইন হেয়ারের যত্নে যে ভুলগুলো করা যাবে না
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ফাইন হেয়ারের যত্ন ও স্টাইলিংয়ে যে ভুলগুলো করা থেকে সবসময় বিরত থাকতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
১) মাইল্ড প্রোডাক্টস ইউজ না করা
এই ধরনের হেয়ার বেশ ডেলিকেট। তাই না বুঝে হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টস ইউজ করলে হেয়ার ফল, রাফনেস, ড্যানড্রাফ, স্প্লিট এন্ডসের মতো সমস্যা এক ধাক্কায় বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে সবসময় চেষ্টা করবেন হার্শ কেমিক্যাল ফ্রি শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, হেয়ার মাস্ক ইত্যাদি ইউজ করতে, যেটা চুলের জন্য জেন্টল হবে। রেগুলার ইউজের জন্য সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু চুজ করুন, সবচেয়ে ভালো হয় ভলিউমাইজিং শ্যাম্পু বেছে নিলে। উইকে একবার ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু ইউজ করা যেতে পারে।
২) খুব বেশি কন্ডিশনার ইউজ করা
চুলে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চার রিস্টোর করতে কন্ডিশনার খুব ভালো কাজ করে। সেই সাথে এটি আমাদের হেয়ার সিল্কি ও শাইনি করে তুলতেও হেল্প করে। তবে এই হেয়ার টাইপে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি অ্যামাউন্টে কন্ডিশনার ইউজ করা হলে হেয়ার স্ট্র্যান্ডগুলো আরো বেশি ফ্ল্যাট মনে হয়, গ্রিজি হয়ে থাকে অনেক সময়। তাই চুলের লেন্থ কেমন সেটা বুঝে কন্ডিশনার নিন এবং চুলের মাঝের অংশ থেকে নিচের অংশে অ্যাপ্লাই করুন। এবার ভালোভাবে ওয়াশ করে নিন।
৩) হেয়ার ট্রিম না করা
হেয়ার টাইপ যেমনই হোক না কেন, চুল হেলদি রাখতে নিয়মিত ট্রিমিং করা জরুরি। ফাইন হেয়ারের ক্ষেত্রে যদি লম্বা সময় ধরে কোনোরকম ট্রিমিং না করেন, তাহলে খুব সহজে স্প্লিট এন্ডসের সমস্যা দেখা দেয় বা চুলের আগা ফেটে যেতে শুরু করে। তখন চুল দেখতেও হেলদি লাগে না, আবার নিজের কনফিডেন্সও কমে যেতে থাকে। তাই প্রতি দুই থেকে তিন মাস পরপর ট্রিম করুন, এতে চুল হেলদি থাকবে।
৪) সঠিক হেয়ার লেন্থ মেনটেইন না করা
এই ধরনের হেয়ার থাকলে শর্ট বা মিডিয়াম লেন্থ রাখতে পারেন। কারণ এই হেয়ার টাইপে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, চুল লম্বা করতে চাইলে চুলের নিচের দিকে কোনো ভলিউমই থাকে না। এতে চুল দেখতে একদমই ফ্ল্যাট লাগে এবং হেয়ারস্টাইল করতেও প্রবলেম হয়। তাই যাদের ফাইন হেয়ার কিন্তু লম্বা চুল পছন্দ, তারা চুল ভালো রাখতে এই দিকটি একটু স্যাক্রিফাইস করুন!
চুলের যত্ন নিশ্চিত করতে সব সময় চুলের ধরন বুঝে অথেনটিক প্রোডাক্টস ব্যবহার করুন। যেকোনো ধরনের মেকআপ, স্কিন কেয়ার কিংবা হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কেনার জন্য সাজগোজ আমার গো-টু প্লেস। আপনারাও সাজগোজকে ভরসা করতে পারেন নিশ্চিন্তে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্ট।
ছবি- সাটারস্টক, সাটারস্টক