দেখতে দেখতে মাহে রমজান শেষে খুশির ঈদ এর সাড়া জেগে যাবে সবার মাঝে। নিজেদের নতুন রূপে সাজিয়ে তুলতে ইতোমধ্যে সবার ভেতরই প্ল্যানিং শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ হয়ত নিউ হেয়ার কাট দিবেন, হয়ত কেউ চুল রাঙিয়ে তুলবেন নতুন রঙে। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘন কালো চুলের ফ্যাশনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখনকার যুগের মেয়েরা আর এত লম্বা কালো চুল পছন্দ করে না। চুলে বিভিন্ন কালার করার পূর্বে কয়েকটি জিনিসের উপর বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। কারণ সব ধরনের রঙ সব গড়ন ও রঙের চেহারায় ভালো লাগে না। যদি মুখের গড়ন, রঙ বা চুলের আকারের সাথে মিলিয়ে রঙ করা হয় তবে দেখতে কিন্তু বেশ লাগে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই ঠিকমতো এবং ভালো কোন পার্লার থেকে এইসব চুলের রঙ করার কাজটি করা হয় না বলে চুল রঙ করে বিপদে পড়েন অনেকেই। কিন্তু মুখের গড়ন ও রঙের সাথে মিলিয়ে চুল কালার করলে অনেক স্টাইলিশ লাগে। সাধারণ লম্বা চুলের চেয়ে ছোট চুলে কালার করলে বেশি ভালো মানায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যাতিক্রমও আছে। তাই আজ আমরা মুখের গড়ন ও রঙের উপর ভিত্তি করে কোন রঙটি আপনার চুলে বেশ ভালো মানাবে তা নিয়ে আলোচনা করব।
রিচ ব্রুনেটঃ
ব্রুনেট হচ্ছে চকলেটের চেয়েও ডার্ক একটা রঙ। সাধারণত যাদের ত্বকের রঙ কালো অথবা শ্যামলা তাদের এই রঙটি বেশ মানিয়ে যায় এবং এতে তাদের আরো উজ্জ্বল লাগে। লম্বা স্ট্রেইট চুলে কালার করলে সামনের দিকের চুলে লেয়ার করে নিতে পারেন। আবার কার্ল চুলেও অনায়াসে এই রঙটি ব্যবহার করতে পারেন।
ডার্ক চকলেটঃ
চুলের রঙের জন্য ডার্ক চকলেট রঙটি অনেক পুরোনো। যেকোনও রঙের ত্বকেই এই রঙটি বেশ মানিয়ে যায়। এক্ষেত্রে চুল লম্বা হলে কালার করার আগে নিচের দিকে লেয়ার, লেজার অথবা স্টেপ লেয়ার কাট দিয়ে নিতে পারে। এই রংটির একটি বিশেষ সুবিধা হচ্ছে এটি ব্যবহারে চুলের রঙের পার্থক্য খুব বেশি বোঝা যায় না। তাই যারা নিজেদের ফর্মাল লুকে একটু পরিবর্তন আনতে চান তারা অনায়াসে এই রঙ ব্যবহার করতে পারেন।
ব্রোঞ্জ কালার এবং গোল্ডেন হাইলাইটঃ
চুলে একটু গর্জিয়াস এবং উজ্জ্বল লুক চাইলে সফট ব্রোঞ্জ রঙের সাথে সোনালী হাইলাইট রঙ পছন্দ করতে পারেন। এই রংটি ফর্সা ত্বকের অধিকারী মেয়েদের অনেক বেশি ভালো লাগে। প্রথমে চুলে ব্রোঞ্জ কালার করে নিন। এরপর চুলের পেছনে ও সামনের দিকে কিছু চুল বাছাই করে গোল্ডেন রঙের হাইলাইট করে নিন। এটি স্ট্রেইট চুলে বেশি মানানসই হয়। বিশেষ করে যেসব মেয়েদের চোখের রঙ হালকা বাদামি তাদের চেহেরায় এই রঙটি বেশ মানিয়ে যায়।
বারগোন্ডি রঙঃ
চুলের রঙের জন্য বারগোন্ডি রঙটি সবচেয়ে ভালো হয়। কারণ এটি যেকোনও গড়ন ও রঙের স্কিন টোনের সাথে মানিয়ে যায়। এই রংটির বিশেষত্ব হচ্ছে এটি আলোতে তার নিজস্ব রঙ প্রকাশ করে। বিশেষ করে যারা চাকরিজীবী তারা অনায়াসে এই রংটি পছন্দ করতে পারেন।
গোল্ডেন কপারঃ
এই রঙটি উজ্জ্বল রঙের মেয়েদের জন্য ভালো হয় বিশেষ করে যাদের গোলাপি, পার্পেল ও সবুজ রঙের পোশাকে অনেক ভালো লাগে। কারণ চুলের এই রঙটি সব ধরনের পোষাকের সাথে মানায় না। বিশেষ করে কার্ল মাঝারি সাইজের চুলে এই রঙটি বেশ ভালো লাগবে।
শেড রঙঃ
চুলের রঙের ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্টাইলিশ হচ্ছে শেড রঙ। এটি উপরেরে দিকে গাঢ় হয়ে ক্রমাগত হালকা হতে হতে চুলের আগায় নেমে আসে। আপনার চেহারার ধরন অনু্যায়ী যেকোনও শেড পছন্দ করে নিতে পারেন। যেমন ফর্সা ত্বকের জন্য বাদামি, ব্রুনেট, গোল্ডেন কপার, সাম্বার, পার্পেল বারগোন্ডি ইত্যাদি। আবার একটু ডার্ক স্কিনের জন্য ডার্ক চকলেট, ব্রুনেট, কপার ইত্যাদি। চুলে শেড করতে চাইলে চুল একটু ছোট অর্থাৎ কাঁধ পর্যন্ত থাকলে বেশি ভালো হয়। এক্ষেত্রে যাদের চুল স্ট্রেইট তারা কালার করার পর চুলের নিচের অংশে হালকা কার্ল করে নিতে পারেন। এতে আরো স্টাইলিশ লাগবে।
সবসময় চেষ্টা করবেন দক্ষ কারো কাছ থেকে চুল কালার করার কাজটি করিয়ে নেয়ার। নতুবা আপনার সাধের হেয়ার কালার করার আশা গুঁড়ে বালি হবে আর অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের হেয়ার কালার ব্যবহার করবেন।
লিখেছেনঃ রোজেন
ছবিঃ হেয়ারকালারঅনশো.কম