ব্যস্ত নাজিবা, প্রতিদিন অত সময় পায় না চুলের যত্ন করার। অফিসে যাওয়ার আগে চট করে রুক্ষ শুষ্ক চুলগুলোকে সুন্দর করার জন্য হেয়ার সিরাম (Hair serum) লাগিয়ে বের হয়ে যায়। চুলে প্রায়শই তার হেয়ার স্প্রেও (Hair spray) ব্যবহার করা হয়। এমন করেই চলছে প্রতিদিন। রুক্ষ চুলগুলোকে নিয়ে তার চিন্তার কমতি নেই। সপ্তাহে যেটুকু সময় সে পায় সে সময়ে দামী দামী হেয়ার অয়েল (Hair oil), মাস্ক (Mask), কন্ডিশনার (Conditioner) লাগায়। কিন্তু কোনো কিছুতেই চুল যেন আর আগের মত শাইনি (Shiny) এবং হেলদি হয়ে উঠছে না। কারণটা কী? হেয়ার ডিটক্সিফাই?
এবার আমি বলছি, প্রতিদিন সুন্দর দেখানোর উদ্দেশ্যে আমরা চুলে অনেক প্রোডাক্টস (Products) যেমন- সিরাম (Serum), হেয়ার স্প্রে, ড্রাই শ্যাম্পু (Dry shampoo), ম্যুজ ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। এই প্রোডাক্টসগুলোর ক্ষতিকর উপাদান আমাদের চুল থেকে ওয়াশ করার পড়েও চলে যায় না বরং চুলের উপরে কোটিং (Coating) হিসেবে বসে যায়। এছাড়াও সুইমিং (Swimming) এর সময় পানিতে থাকা ক্লোরিন (chlorine) আমাদের চুলে বসে যায়। যেটাকে প্রোডাক্ট বিল্ডআপ (Product build up) বলে। এর ফলে উপর থেকে যতই দামী দামী তেল, মাস্ক ঢালা হোক না কেন, চুলের ভেতরে তা প্রবেশ করতে পারে না এবং সেটার বেনিফিট (Benefit)- গুলো পায় না। কারণ, মাঝে রয়েছে প্রোডাক্ট বিল্ডআপ। যার ফলে ধীরে ধীরে চুল ময়েশ্চার হারায় এবং রুক্ষ শুষ্ক হয়ে ভেংগে পড়ে।
এখন প্রশ্ন হলো প্রোডাক্ট বিল্ডআপ কিভাবে দূর করা যাবে?
উত্তর হলো- হেয়ার ডিটক্সিফাই (Hair Detoxify) করা।
হ্যাঁ! বডি এবং স্কিনের মতো হেয়ার ডিটক্সিফাই করাটাও সম্ভব। কিভাবে ঘরে বসে ন্যাচারাল উপায়ে হেয়ার ডিটক্সিফাই করবেন? চলুন তা জেনে নেই!
কিভাবে করবেন হেয়ার ডিটক্সিফাই
আজ আমরা ২টি মাস্কের ব্যাপারে শেয়ার করব। যা চুলের প্রোডাক্ট বিল্ডআপ দূর করে চুলকে শাইনি এবং হেলদি (Healthy) বানাতে সাহায্য করবে।
১. কোকো পাউডার এবং কোকোনাট মিল্কের মাস্ক
কোকো পাউডারে (cocoa powder) রয়েছে সালফার (sulfur), যা চুলকে শাইনি বানাতে সাহায্য করে এবং হেয়ার গ্রে (Hair gray) হয়ে যাওয়া রোধ করে। কোকোনাট মিল্কে রয়েছে প্রোটিন এবং ম্যাগনেশিয়াম (Magnesium)। এটি চুলের ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুলকে নারিশ (Nourish) করে।
মাস্কটি বানাতে, ৪টেবিল চামচ কোকো পাউডার এবং ৩টেবিল চামচ কোকোনাট মিল্ক নিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিন। এবার একটি ব্রাশের সাহায্যে পুরো চুলে মাস্কটি লাগিয়ে নিন। ২০মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।
২. কেওলিন ক্লে মাস্ক
এই মাস্কটি বানাতে দরকার পড়বে কেওলিন ক্লে (kaolin clay)। যা ক্লোরিন এবং কেমিক্যাল বিল্ডআপ দূর করতে সাহায্য করে। আপনাদের কাছে কেওলিন ক্লে না থাকলে এর বদলে মুলতানি মাটিও ব্যবহার করতে পারেন।
এই মাস্কটি বানাতে ১০০গ্রাম কেওলিন ক্লে বা মুলতানি মাটি নিয়ে এর মধ্যে পানি যোগ করুন। মাস্কটি বেশ পাতলা হবে। মাস্কটি অ্যাপ্লাই করার আগে চুল হালকা করে ভিজিয়ে নিন। এবার মাস্কটি পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। ৩০মিনিট অপেক্ষা করে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ডিটক্স হেয়ার রিনস :
ডিটক্স হেয়ার রিনস (Detox hair rinse) বানাতে প্রয়োজন পড়বে ৬-৭টা শিকাকাই এবং ২টেবিল চামচ গ্লিসারিন।
শিকাকাই হেয়ার গ্রোথ প্রোমোট (Growth Promote) করতে সাহায্য করে। গ্লিসারিন (Glycerin) চুলকে ময়শ্চারাইজ করে, চুলের ফ্রিজিনেস (freeziness) দূর করে।
ডিটক্স হেয়ার রিনস বানাতে ২০০এম. এল. পানিতে ৬-৭টি শিকাকাই সারারাত ধরে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন বীজগুলো আলাদা করে ফেলুন। এবার, পানির মধ্যে ২টেবিল চামচ গ্লিসারিন যোগ করুন। একটি স্প্রে বোতলে (spray bottle) মিশ্রণটি ঢেলে নিন।মিশ্রণটি পুরো চুলে স্প্রে করুন। ২০মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন।
এক্সট্রা কিছু টিপস
১. চুলে কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে অবশ্যই ক্লারিফাইং শ্যাম্পু (clarifying shampoo) ব্যবহার করবেন।
২. চুলে কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্ট যত কম পারবেন ব্যবহার করবেন। কারণ, চুল একবার নষ্ট হয়ে গেলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন।
এইতো জেনে নিলেন, কিভাবে হেয়ার ডিটক্সিফাই করবেন এবং প্রোডাক্ট বিল্ডআপ দূর করবেন। আশা করছি, আপনাদের অনেক বেশী হেল্প হবে। তো ঘরে বসেই তৈরি করুন সহজ উপায়ে এই মাস্কগুলো এবং আপনার রুক্ষ চুলে ফিরিয়ে আনুন প্রাণ।
আপনি শুষ্ক চুলের রেগ্যুলার কেয়ারে অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে থাকলে সাজগোজ হতে পারে আপনার নির্ভরতার জায়গা। সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি!
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক