আপনার চুলের স্বাস্থ্য কেমন সেটা বোঝার উপায় হলো চুলের ময়েশ্চার শোষণ করার এবং সেই ময়েশ্চার ধরে রাখার ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা। খুব সহজেই ঘরে বসেই আপনি চুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (hair porosity test) করে দেখতে পারেন এবং সে অনুযায়ী চুলের যত্ন নিতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নেই হেয়ার পোরোসিটি টেস্ট সম্পর্কে!
হেয়ার পোরোসিটি টেস্ট কীভাবে করবেন?
হেয়ার পোরোসিটি টেস্ট করার জন্য প্রথমে এক গ্লাস স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি নিন। এবার আপনার মাথা থেকে কয়েকটি চুল নিয়ে সেই পানিতে ফেলুন। খেয়াল রাখবেন চুলগুলো যেন সরাসরি আপনার স্ক্যাল্প থেকে আসে, আগে থেকে ঝরে থাকা চুল বা চুলের মাঝখান থেকে ভেঙ্গে যাওয়া চুল যেন না হয়। এবার চুলগুলো গ্লাসে পানিতে দিয়ে দেখুন কী অবস্থায় থাকে।
• যাদের চুল গ্লাসের পানিতে ডুবে একদম নীচ পর্যন্ত চলে যাবে তাদের চুলের ময়েশ্চার শোষণ করার ক্ষমতা অনেক বেশি। আবার একই সাথে চুলের ময়েশ্চার খুব তাড়াতাড়ি চুল থেকে বের হয়েও যায়, যেহেতু এ ধরনের চুলের কিউটিকলগুলো বন্ধ থাকে না।
• যাদের চুল মাঝামাঝি অবস্থায় থাকে তাদের চুল হলো আদর্শ চুল, কারণ সেটা ঠিক মতো যেমন অ্যাবজর্ব বা শোষণ করে আবার অতিরিক্ত ময়েশ্চার বের করেও দেয়।
• যদি আপনার চুলগুলো পানির উপর ভাসতে থাকে তাহলে এর অর্থ হলো আপনার চুলের ময়েশ্চার শোষণ করার ক্ষমতা অনেক কম, অর্থাৎ চুলের স্বাস্থ্য ভালো না এবং ঝরে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিউটিকলগুলো অনেক কাছাকাছি এবং বন্ধ অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় ময়েশ্চার গ্রহণ করতে চুলের সমস্যা হলেও খুশির কথা হলো এই যে একবার যদি চুলের ভেতরে ময়েশ্চার ঢুকতে পারে তাহলে সেটা সহজে বের হবে না বা শেষ হয়ে যাবে না। তাই যাদের চুল এ পরীক্ষায় পানিতে ভেসে উঠবে তারা দুশ্চিন্তা না করে কীভাবে চুলের ভেতর ময়েশ্চার প্রবেশ করানো যায় সেটা জেনে নিন। কারণ চুল একবার ময়েশ্চার অ্যাবজর্ব করতে পারলে আর চিন্তা নেই। অনেক দিন সেটা ধরে রাখতে পারবে।
চুলের ভেতরে কীভাবে ময়েশ্চার প্রবেশ করাবেন?
১. পার্লারে অথবা বাসায় চুলে স্টিম নিতে পারেন। এর ফলে কিউটিকলগুলো কিছুক্ষণের জন্য রিল্যাক্সড হবে এবং ময়েশ্চার চুলের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে। এ সময় ডিপ কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। বাসায় গরম পানির ব্যবস্থা থাকলে চুল ধোয়ার পরে বাথরুমে শাওয়ারে গরম পানি ছেড়ে ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন যতক্ষণ পর্যন্ত বাথরুমের ভেতর ভাপ দেখা না যায়। খেয়াল রাখবেন যেন গরম পানির ভাপ বাথরুমে সহনীয় মাত্রায় থাকে। এই ভাপে কতক্ষণ অপেক্ষা করুন, যেন আপনার চুল ময়েশ্চার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়। এরপর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
২. কন্ডিশনার ব্যবহারের সময় সামান্য বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। এতে কিউটিকলগুলো রিল্যাক্সড হবে এবং ভেতরে ময়েশ্চার ঢুকবে। তবে চুল ধোয়ার পর অবশ্যই অ্যালোভেরার রস দিতে হবে। এতে কিউটিকলগুলো আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। ফলে ময়েশ্চার চুলে ঢুকে যাওয়ার পর আর বের হতে পারবেনা।
৩. এভাবেও করতে পারেন। সবার আগে চুল শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এরপর পানির সাথে অল্প বেকিং সোডা মিশিয়ে চুলে লাগান। ২/৩ মিনিট রেখে এর উপর কন্ডিশনার দিন। তারপর কিছুক্ষণ পরে অ্যালোভেরা জেল দিয়ে দিন চুলের উপর কিউটিকলগুলোকে সিল করার জন্য। কিছুক্ষণ পরে চুল ধুয়ে ফেলুন।
৪. অতিরিক্ত প্রোটিন ব্যবহার করবেন না। এতে কিউটিকল এর মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই প্রোটিন ট্রিটমেন্ট তখনই করুন যখন আপনার মনে হবে যে চুল ড্যামেজ হয়ে যাচ্ছে।
ছবিঃ সংগৃহীত – Shutterstock