আপনার লিপস্টিকে কি শুধু রঙ-ই আছে? নাকি আছে আরও কিছু? নামী দামী ব্রান্ড আসলে কতটা নিরাপদ? লিপস্টিকে যে লেড বা সীসা থাকে তা আমাদের প্রায় সবারই জানা। তবে নতুন এক গবেষনায় বের হয়ে এসেছে আরও ভয়াবহ সব তথ্য। জনপ্রিয় সব লিপস্টিক ও লিপগ্লসে আছে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ও ম্যাংগানিজ যা ভয়ানক সব রোগ ও অর্গান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রান্ড গুলোর মধ্যে ৭৫% এ লেড আর ৩০% এ ক্রোমিয়াম আছে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি। এক্সপার্টদের মতে লিপস্টিকের ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ম্যাংগানিজ ও এলুমিনিয়ামের মাত্রা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয়।
উচ্চমাত্রার ক্যাডমিয়াম কিডনীতে জমা হয় যা রেনাল ফাংশন বন্ধ পর্যন্ত করে দিতে পারে। এতটা উচ্চমাত্রা যদিও লিপস্টিক এ একা থাকেনা, তবে প্রতিদিনের খাবারে যে পরিমাণ ক্যাডমিয়াম থাকে তার সাথে লিপস্টিকেরটা যোগ করলে আপনি হয়তো বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছে যেতে পারেন। যাদের কিডনী বা অন্য কোন রেনাল সমস্যা আছে, তাদের জন্য লিপস্টিক মারাত্মক বিপদ বয়ে আনতে পারে।
আবার যারা দিনে একাধিকবার লিপস্টিক বা লিপগ্লস লাগান, তারা অতিরিক্ত মাত্রায় ক্রোমিয়াম শরীরে ঢুকাচ্ছেন। এই ভারী ধাতুটি পাকস্থলীতে টিউমার তৈরীর ঝুঁকি বাড়ায়।
সবচেয়ে ভয়ানক দিক হলো, এই সব ধাতুগুলোর উপস্থিতি কোন লিপস্টিকের লেবেল-এ লেখা থাকেনা। মার্কিন ও ইউরোপীয় আইন অনুযায়ী কোন পণ্যের গায়ে তার কন্টামিনান্ট বা দূষক পদার্থের নাম লেখার প্রয়োজন নেই। আর আইনের এই ফাঁক গলেই বের হয়ে যাচ্ছে নামী-দামী সব ব্রান্ড। বাংলাদেশে যেহেতু এসব ব্রান্ডগুলোই বেশী জনপ্রিয়, তাই এখানকার ব্যবহারকারীরাও আছেন সমান ঝুঁকিতে। আর নামী ব্রান্ডগুলোর-ই যদি হয় এই অবস্থা, তাহলে নন-ব্রান্ড প্রোডাক্টে কী আছে তাও ভেবে দেখার বিষয়।
তাই বলে কী লিপস্টিক ব্যবহার করা ছেড়ে দিবেন? নাকি সাবধানে ব্যবহার করবেন? নীচের টিপগুলো হয়তো আপনাকে সাহয্য করতে পারেঃ
০১. কম কম ব্যবহার করুনঃ
যত কম ব্যবহার, তত কম বিষক্রিয়া। এর চেয়ে সহজ সমাধান আর নেই। মনে রাখবেন, ব্যবহার করলে কিছুটা ধাতু আপনার দেহে ঢুকবেই। তাই সম্ভব হলে শুধু বিশেষ বিশেষ উৎসব বা অনুষ্ঠানেই ব্যবহার করুন।
০২. নিরাপদ রঙ টি খুঁজে বের করুনঃ
কন্টামিনান্ট ধাতুগুলো ছাড়াও আরও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ লিপস্টিকে আছে। এই পদার্থগুলোর নাম কিন্তু লেবেলে লেখা থাকে। খুঁজে বের করুন কোন রঙে এইসব পদার্থ কম। এতে অন্তত জানা ক্ষতিটা কমানো যাবে।
এটা সত্যি যে লিপস্টিক অনেকের জন্যই দৈনন্দিন এক অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়ে গিয়েছে, তবে মনে রাখবেন এর ঝুঁকিটাও একেবারে ফেলনা নয়। তাই সময় থাকতে সতর্ক হন। আর আপনার সন্তানটিকে অবশ্যই লিপস্টিক থেকে দূরে রাখুন।
লিখেছেনঃ মাহমুদ