যে কিনা সামান্য একটি মজার ঘটনাতেও চারপাশ কাঁপিয়ে হাসতে ভালোবাসতেন সেই আপনিই আজকাল অসম্ভব রকমের হাসির বা আনন্দের কোন ঘটনাতেও প্রাণ খুলে হাসতে পারেন না! কারণ আপনি হাসলেই আপনার মুখের ফাইন লাইনগুলো আপনার হাসি ছাপিয়ে জ্বলজ্বল করে ওঠে। আপনার মুখের হঠাৎ করেই উড়ে এসে জুড়ে বসা রিংকেল আর অন্যান্য এজিং সাইনগুলো আপনার মুখের মাধুর্য অনেকটাই মলিন করে দিচ্ছে। যেখানে আপনি চাইলেই আপনার মুখের এই অনাকাঙ্ক্ষিত এজিং সাইনগুলোকে দূর করতে পারেন সেখানে কেন বলুনতো নিজের সবচেয়ে অমূল্য যে সম্পদ আপনার সুন্দর হাসিটাকে চেপে রাখবেন? আমার আজকের লেখাটি আপনার ত্বকের এই এজিং সাইন কী করে দূর করবেন তা নিয়েই। আজ বলবো কী করে ঘরে বসেই ত্বকের ধরনভেদে মধুর ৫টি অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্ক তৈরি করতে পারবেন।
আপনার ত্বকের ধরনভেদে মধুর অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্ক
আমি নরমাল স্কিন, অয়েলি স্কিন, ড্রাই স্কিন, নরমাল স্কিন ও সেনসিটিভ স্কিনের জন্য তথা ত্বকের ধরনভেদে মধুর আলাদা আলাদা মাস্ক নিয়ে এখন জানাবো।
১. অ্যাভোক্যাডো ও মধু ফেইস মাস্ক নরমাল স্কিনের জন্য
যা যা লাগবে
-২ টেবিল চামচ অ্যাভোক্যাডো
-২ টেবিল চামচ মধু
-১ টা ডিমের কুসুম
কিভাবে অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্কটি বানাবেন?
সব উপাদান একসাথে নিয়ে একটি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন অথবা হাতের সাহায্যে ভালোভাবে চটকান। আপনার পরিষ্কার করে ধোয়া মুখের ত্বকে এই পেস্ট মাস্ক আকারে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং পরে ধুয়ে ফেলুন।
এই মাস্ক কেবল আপনার ত্বকে অ্যান্টি-এজিং-এর কাজই করবে না বরং আপনার ত্বক লাইটেনিংও করবে।
২. মধু ও ডিম ফেসমাস্ক ড্রাই স্কিনের জন্য
যা যা লাগবে
-১ টেবিল চামচ মধু
-১টি ডিমের কুসুম
-১ টেবিল চামচ দই
-১\২ চা চামচ আমন্ড অয়েল
কিভাবে অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্কটি বানাবেন?
একটি বড় বাটিতে সব উপাদান দিয়ে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না এটি আঠালো আর গাঢ় আকার ধারণ করে। এবার এটা আপনার মুখে লাগিয়ে ৫ মিনিট রেখে পরে একটি মাইল্ড ফেসিয়াল সোপ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
মধু আপনার ত্বক স্মুদ করবে, অ্যালমন্ড ত্বক ময়েশ্চারাইজ করবে, দই ত্বক রিফাইন ও পোরস লক করবে আর ডিমের কুসুম ত্বক মইয়েশ্চারাইজ করার সাথে ত্বক লাইটেন করবে।
৩. মধু ও গাজর ফেইসমাস্ক অয়েলি স্কিনের জন্য
যা যা লাগবে
-১\২টা গাজর
-২\৩ টেবিল চামচ মধু
কিভাবে অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্কটি বানাবেন?
গাজর ভালোভাবে সিদ্ধ করে চটকে মিহি পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার এতে মধু মিশিয়ে ১০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন। এবার এই পেস্ট লাগানোর পূর্বে আপনার ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে ত্বকে লাগান এবং ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ১০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
গাজরকে ভিটামিন এ, সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট-এর পাওয়ার হাউজ বলা যায়, যা ত্বকে অ্যান্টি-এজিং এর কাজ করবে। আর মধুর মিনারেলস, এনজাইম ও সুগার ত্বকের লাবণ্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।
৪. মধু ও কলা ফেসমাস্ক সেনসিটিভ স্কিনের জন্য
যা যা লাগবে
-১টি পাকা কলা চটকানো
-১ কাপ ওটমিল সিদ্ধ দুধ দিয়ে
-১টা ডিম
-১\২ টেবিল চামচ মধু
কিভাবে অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্কটি বানাবেন?
সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে আপনার ত্বকে সমান অনুপাতে লাগান। ১৫ মিনিট এই মাস্ক রেখে দিয়ে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ওটমিল ভিটামিন ও মিনারেলস এ পরিপূর্ণ। এটি ত্বক জেন্টলি ক্লিন ও হিল করে। কলার ভিটামিন এ ও ডিমের লেসিথিন (lecithin) ত্বকের প্রাকৃতিক প্রলেপের কাজ করে। তাছাড়া মধু প্রাকৃতিক ত্বক তরুন রাখে।
৫. মধু ও ল্যাভেন্ডার ফেইসমাস্ক অল টাইপ স্কিনের জন্য
যা যা লাগবে
-১ টেবিল চামচ অরগানিক মধু
-৩ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অ্যাসেনশিয়াল অয়েল
কিভাবে অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্কটি বানাবেন?
এই দুই উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার আপনার ত্বক কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে একটু ধুয়ে নিয়ে এই ফেসিয়াল মাস্ক মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট রেখে দিন ও পরে আবার হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল মাস্ক হিসেবে এই মাস্কটি সব ধরনের ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী।
আপনার ত্বকের ধরনভেদে মধুর যে মাস্কগুলো ব্যবহার করতে উপরে বর্ণনা করেছি সেগুলো আপনি ট্রাই করে দেখুন। আশা করি খুব দ্রুত উপকার পাবেন। তবে আপনি যদি প্রাকৃতিক এই মাস্কগুলো ব্যবহার করার সময় না পান, সাজগোজ আপনার ত্বকের যত্নে বিভিন্ন ফেইস মাস্ক দিয়ে আপনাকে সাহায্য করবে। সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আর অনলাইনে কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে।
ছবি – সংগৃহীতঃ সাটারস্টক