হেয়ার ফল কমাতে বায়োটিন কেন ও কতটুকু হেল্পফুল?

হেয়ার ফল কমাতে বায়োটিন কেন ও কতটুকু হেল্পফুল?

biotin capsule

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে চুল কে না চায়? কিন্তু চাইলেই কি আর মনের মতো চুল পাওয়া যায়? চুল ঘন ও লম্বা হবে, চুলের গোড়া শক্ত থাকবে, সহজে ঝরে পড়বে না- এমনটাই তো আমরা চাই। আর যদি চুল যদি সুন্দর হয়, তাহলে নিজেকে দেখতেও বেশ আকর্ষণীয় লাগে। বেশিরভাগ মানুষ প্রায়শই তাদের চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং চেহারার সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা এবং সমাধান খোঁজেন। বায়োটিন একটি ভিটামিন-বি, যা সাধারণত ভিটামিন এইচ নামে পরিচিত। হেয়ার গ্রোথ এবং অন্যান্য হেয়ার প্রবলেম কমাতে এর বেশ সুনাম রয়েছে। চুল পড়া রোধে প্রায়শই ডার্মাটোলজিস্টরা বায়োটিন সেবনের উপদেশ দিয়ে থাকেন। আজকের লেখায় আমরা হেয়ার ফল কমাতে বায়োটিন কেন ও কীভাবে হেল্প করে এবং ওভারঅল চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এর ভূমিকা সম্পর্কে সামগ্রিক বিষয়ে আলোচনা করব।

বায়োটিন কী?

বায়োটিন হলো একটি পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন যা আমাদের চুল, ত্বক এবং নখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি একটি কোএনজাইম হিসেবে কাজ করে, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি এবং প্রোটিনের বিপাককে সহায়তা করে- যা স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। চুলের শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে প্রাথমিক প্রোটিন হিসেবে মূল ভূমিকা বজায় রাখে কেরাটিন। এই কেরাটিন উৎপাদনেও বায়োটিন এর অবদান অনেক।

হেয়ার ফল কমাতে বায়োটিন

হেয়ার ফল কমাতে বায়োটিন এর ভূমিকা

১) বায়োটিন চুলের ফলিকলকে স্টিমুলেট করে কেরাটিনোসাইটের উৎপাদনকে সাহায্য করে, যা চুলের নতুন কোষের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।

২) এটি চুলের ফলিকলগুলিতে অক্সিজেন ও পুষ্টি সাপ্লাই করতে সাহায্য করে চুলের বৃদ্ধির জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করে।

৩) ধারণা করা হয় যে, বায়োটিন চুলের কোষের বিস্তারের হার বাড়ায়, যা মজবুত, লম্বা এবং স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার

হেয়ার ফল কমাতে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট নেয়ার আগে প্রতিদিনের খাবারের মেন্যুতে এমন কিছু খাবার রাখতে পারেন, যেগুলোতে প্রকৃতিগতভাবেই বায়োটিন মজুদ থাকে। প্রাকৃতিকভাবে আপনার দেহে বায়োটিন বৃদ্ধির এটাই সর্বোত্তম উপায়। প্রাকৃতিক বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে-

  • গরুর কলিজা
  • ডিম
  • মিষ্টি আলু
  • আমন্ড বা কাঠবাদাম
  • ব্রকলি
  • বিভিন্ন জাতের শিম
  • মাশরুম
  • কলা
  • অ্যাভোকাডো

বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার

সাপ্লিমেন্ট এর উপকারিতা

খাবার থেকে পর্যাপ্ত বায়োটিন ইনটেক করা না গেলে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হয়। তবে এর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট এর উপকারিতাগুলো চলুন জেনে নেয়া যাক-

১) চুল পড়া কমায়

অনেকে বলেন, বায়োটিন ডেফিসিয়েন্সি হলে চুল পড়ার হার বেড়ে যায়। এই তথ্যের আসলে তেমন কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। কারণ বায়োটিন বেশ কিছু কমন ফুড থেকেই পাওয়া যায়। যার কারণে ডেফিসিয়েন্সি হওয়ার চান্স একদমই কম থাকে। হতে পারে, বডি হয়তো খুব অল্প পরিমাণে বায়োটিন গ্রহণ করতে পারছে। তবে হ্যাঁ, এই ভিটামিনের অপর্যাপ্ত মাত্রা চুল পড়ার হার বৃদ্ধি করতে পারে। এই ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করতে পারে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট। এটি সম্ভাব্য চুল পড়া কমায় এবং চুলের পুনঃবৃদ্ধি বাড়ায়।

২) চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়

যাদের চুলের বৃদ্ধি খুব ধীর বা যাদের চুলের ঘনত্ব কম, তাদের জন্যই সাধারণত বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে উপদেশ দেয়া হয়। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বায়োটিন সরবরাহের মাধ্যমে এই সব সাপ্লিমেন্ট চুলের নতুন কোষ বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।

চুলের বৃদ্ধিতে বায়োটিন

৩) চুলের গোড়া মজবুত করে

বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট চুলের শক্তি ও ঘনত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কেরাটিন উৎপাদনে এই ভিটামিনের ভূমিকা অনেক বেশি। চুলের গোড়া মজবুত করে বলে ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এর ফলে চুলের গঠন এবং হেয়ার টেক্সচার ইমপ্রুভ হতে পারে।

কিছু বিশেষ সতর্কতা

হেয়ার কেয়ার রুটিনে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট সংযুক্ত করার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন-

১) পুষ্টিকর খাবার খাওয়া 

পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। যদিও বায়োটিন একটি ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, তবুও এর সাথে সাথে অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে। একটি ব্যালেন্সড ডায়েটের পাশাপাশি বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ডিম, বাদাম, শস্য জাতীয় খাবার এবং শাক-সবজি খাওয়া চুলের সর্বোত্তম স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে।

২) ডার্মাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করা 

প্রথমে অবশ্যই একজন পেশাদার ডার্মাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করুন। যদি আপনার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চুল পড়তে থাকে অথবা চুল নিয়ে অন্য কোনো সমস্যায় ভোগেন, তবে একজন পেশাদার চিকিৎসকই পারবে আপনার মূল সমস্যা নির্ণয় করতে এবং সেই অনুযায়ী উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে।

বায়োটিন গ্রহণের আগে ডার্মাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করা

৩) সঠিক ডোজ মেনে চলা

সঠিক ডোজ মেনে চলতে হবে। বায়োটিন সাপ্লিমেন্টগুলো বিভিন্ন মাত্রায় বিভিন্ন রূপে বাজারজাত করা হয়। প্রস্তুতকারক অথবা পেশাদার চিকিৎসকের নির্দেশনাবলি মেনে সঠিক মাত্রায় বায়োটিন সেবন করতে হবে। কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় বায়োটিন সেবনের ফলে স্কিনে র‍্যাশ, রক্তে সুগারের পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যাওয়া, ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন সি কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যেতে পারে।

৪) লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনা 

মোডিফিকেশন আনতে হবে লাইফস্টাইলে। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও অনিয়মিত ঘুমের কারণেও প্রচুর চুল পড়ে। সেক্ষেত্রে কোনো প্রকার সাপ্লিমেন্টই কাজে দিবে না।

৫) ধৈর্য ধারণ করা 

ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের ফলে এক একজনের ফলাফল একেক রকম হয়। কারো খুব দ্রুত কাজ করে, কারো আবার একটু সময় লাগে। তবে সাধারণত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করতে সময় লাগে। কারো কারো ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে, সেক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করেত হবে।

৬) বায়োটিন শ্যাম্পু ব্যবহার করা 

চুলের যত্নে হেয়ার কেয়ার রুটিনে অ্যাড করতে পারেন বায়োটিন যুক্ত শ্যাম্পু। এতেও চুল পড়ার হার অনেকটাই কমে যাবে।

স্কিন ক্যাফে বায়োটিন শ্যাম্পু

স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধির জন্য এবং চুল পড়া কমাতে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট একটি সম্ভাবনাময় চিকিৎসা হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। যদিও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য বায়োটিনের সুবিধাগুলোকে সমর্থনকারী গবেষণা এখনও সীমিত। অনেক ব্যক্তি এর ব্যবহার থেকে ইতিবাচক ফলাফলের কথা জানিয়েছেন। যাই হোক, চুলের যত্নের সামগ্রিক পদ্ধতির অংশ হিসেবে বায়োটিন সাপ্লিমেন্টেশনের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। যার মধ্যে সুষম খাদ্য, সঠিক চুলের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং প্রয়োজনে পেশাদার পরামর্শ চাওয়া অন্যতম।

SHOP AT SHAJGOJ

     

    সঠিক লাইফস্টাইল মেনে চলা, সুষম খাদ্য খাওয়া ছাড়াও হেয়ার কেয়ারে যে প্রোডাক্টগুলো ইউজ করছেন, সেগুলো অথেনটিক কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। অথেনটিক হেয়ার কেয়ার, স্কিন কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

    ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক

    5 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort