গ্রে হেয়ার কভার করতে বা ট্রেন্ডের সাথে নিজের লুককে আপডেটেড রাখতে হেয়ার কালার অনেকেই করে থাকেন। তবে হেয়ার কালার করার চিন্তা মাথায় আনলেই কিছু কনসার্ন কিন্তু চলেই আসে, যেমন কোন কালার আমাকে স্যুট করবে, হেয়ার কালারের পরের ইফেক্ট নিয়ে অনেকেরই অনেক প্রবলেম হয়। তাই বলে তো হেয়ার কালার করা বাদ দেয়া যাবে না। আবার অনেকেই হেয়ারের ড্যামেজ কমানোর জন্য অ্যামোনিয়া ফ্রি কালার চুজ করে থাকেন। কিন্তু আসলেই কি তাই? আগে থেকেই কিছু ফ্যাক্ট সঠিকভাবে জেনে নিলে এসব কনফিউশন এড়ানো সম্ভব।
হেয়ার কালার কী এবং কীভাবে কাজ করে?
পার্মানেন্ট হেয়ার কালারে আমাদের হেয়ারের ন্যাচারাল কালার চেইঞ্জ করে পছন্দের হেয়ার কালার করার জন্য মূলত কেমিক্যাল দিয়ে হেয়ারকে ট্রিট করা হয় । আমাদের হেয়ারে তিনটি লেয়ার থাকে। কিউটিকল, কর্টেক্স ও মেডুলা। এর মধ্যে কিউটিকল সবচেয়ে বাইরের লেয়ার, মাঝের লেয়ার কর্টেক্স এবং সবশেষে মেডুলা।
হেয়ার কালার প্রোডাক্ট এর ইনগ্রেডিয়েন্টগুলোর মধ্যে দুটি কমন ইনগ্রেডিয়েন্ট হলো অ্যামোনিয়া ও পার-অক্সাইড। অ্যামোনিয়া হেয়ারের কিউটিকল ওপেন করে প্রোডাক্টকে কর্টেক্সে অর্থাৎ সেকেন্ড লেয়ারে প্রবেশ করতে হেল্প করে এবং পারঅক্সাইড অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসেবে হেয়ারের কেমিক্যাল বন্ডকে ব্রেক করে হেয়ারের নিজস্ব কালারকে রিমুভ করে নিউ কালার ডিপোজিট করে বন্ড ক্রিয়েট করে।
অ্যামোনিয়া ফ্রি হেয়ার কালার যেভাবে কাজ করে
অনেক ব্র্যান্ডের কালারিং প্রোডাক্টস এর ক্ষেত্রে আমরা শুনি যে অ্যামোনিয়া ফ্রি হেয়ার ডাই। কিন্তু অ্যামোনিয়া যেহেতু কর্টেক্স ওপেন করে পেনিট্রেশনে হেল্প করে, তাহলে আসলে অ্যামোনিয়া ফ্রি হেয়ার কালার আমাদের হেয়ারে কীভাবে কাজ করে?
মেইনলি কিউটিকল ওপেন করার জন্যে অ্যালকালাইন গ্রুপের উপাদান হেল্প করে যার দুটি টাইপস হলো অ্যামোনিয়া এন্ড MEA (Mono-Ethalonamine)। এই দুটি টাইপ কিউটিকলকে ওপেন করে ব্লিচিং এজেন্ট ও কালারকে কর্টেক্সে রিচ করতে হেল্প করে। তাই অ্যামোনিয়া ফ্রি হেয়ার কালারে হেয়ারের কর্টেক্স ওপেন করতে অ্যালকালাইন হিসেবে অ্যামোনিয়া ব্যবহার না করলেও অন্য উপাদান হিসেবে অ্যালকালি গ্রুপেরই আরেক কম্পাউন্ড MEA কে ইউজ করা হয়। অ্যামোনিয়া MEA এর চেয়ে কিছুটা দ্রুত পিএইচ লেভেল বাড়াতে হেল্প করে। তবে দুটোই অ্যালকালাইন এবং হেয়ার কালারের ক্ষেত্রে একই কাজ করে থাকে।
ব্লিচ ছাড়া হেয়ার কালার যেভাবে কাজ করে
এছাড়াও অনেক সময় প্রি লাইটেনিং স্টেপ স্কিপ করে অর্থাৎ কোনো ব্লিচ ব্যবহার না করে হেয়ার কালার করাকে আমরা মনে করি ব্লিচ ফ্রি হেয়ার কালার যা ব্লিচের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে হেয়ারকে সেইভ করবে। কিন্তু কালার টিউব মিক্সিং প্রসেসে যেসব এজেন্ট ইউজ করা হয় তার মধ্যেই পার-অক্সাইড অ্যাড করা থাকে যা একটি ব্লিচিং এজেন্ট। তাই ব্লিচ ফ্রি হেয়ার কালার এই কথাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয় কারন ব্লিচিং এজেন্ট আপনার হেয়ার কালার করার একটি অ্যাসেনশিয়াল পার্ট।
কালার করার আগে হেয়ার কন্ডিশন জানা ইম্পরট্যান্ট
স্কিনে কিছু অ্যাপ্লাই করার আগে আমরা যেমন স্কিনের কন্ডিশন বুঝে ইউজ করি, তেমনি হেয়ার কালার করতে চাইলে আমাদের হেয়ার আসলেই এই কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট নিতে পারবে কিনা তা ভেবে দেখি না যার কারনে নানা রকম প্রবলেমে পরতে হয়। সাধারণত ড্যামেজড হেয়ারের কমন কিছু সাইনস হলো চুল ভেঙ্গে যাওয়া, আগা ফেটে যাওয়া, ড্রাইনেস, ফ্রিজিনেস ও জট লেগে যাওয়া।
হেয়ারের কন্ডিশন বুঝে প্রোডাক্ট চুজ করলে পোস্ট হেয়ার কালারিং রিস্ক বা ড্যামেজ অনেকটাই রিডিউস হয়ে যায়। প্রি লাইটেনিং বা ব্লিচিং এর জন্যে পারঅক্সাইডযুক্ত যে প্রোডাক্ট ইউজ করা হয় তা সাধারণত ডেভেলপার ফর্মে বা ব্লিচ হিসেবে আমরা চিনে থাকি যা ৩%-১২% বা ২০-৬০ ভলিউম পর্যন্ত এ্যাভেইলেবল। আবার অ্যামোনিয়া ফ্রি হেয়ার কালার বলা হলেও তা আসলে ব্লিচ ফ্রি না। তাই কালারের টাইপ এবং চুলের কন্ডিশন অনুযায়ী স্যুইটেবল পারসেন্টেজ ইউজ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে হেয়ার কালার করার জন্য একজন এক্সপার্টের সাজেশন অবশ্যই জরুরি।
অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার কিংবা হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট পারচেজ করার জন্য সাজগোজ হতে পারে ভরসার জায়গা। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
লেখাঃ নাফিসা নাওয়াল।
ছবিঃ সাজগোজ।