ঋতু বদলের পালায় সময়টা এখন শীতকালের। ধীরে ধীরে ঠান্ডার ভাব বেড়ে চলেছে বাতাসে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঠান্ডার প্রভাব আমাদের শরীরে পড়ে অনেক বেশি। নিজেকে তাই শীতকালের উপযোগী করে নিতে খানিকটা বাড়তি খেয়াল রাখার দরকার আছে।
খুব বেশি অদলবদল করা লাগবে না নিত্যদিনের জীবনধারায়, তবে কিছু বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে একটু বেশি। শরীর নামের যন্ত্রটা যাতে ঠিকঠাক মতন চলতে থাকে সেই নিশ্চয়তাটুকু করে নিতে হবে নিজেরই।
কোন বিষয়গুলোতে বেশি নজর দেয়া লাগবে দেখে নিন তবে-
ঘুম
সুস্বাস্থ্যের অন্যতম চাবিকাঠির নাম হলো ঘুম। সুস্থ থাকতে, সুস্থ জীবন যাপন করতে পরিমিত ঘুমের যে কোন বিকল্প হয় না তা সবাই মানবেন। দৈনিক সাত থেকে আট ঘন্টার ঘুমের আদর্শ হিসেব বছরের অন্যান্য সময় ঠিক না থাকলেও শীতকালে একটু বেশি ঘুমিয়ে পুষিয়ে নিতে পারেন সেটা। ঠান্ডা আবহাওয়ায় এমনিতেই ঘুমঘুমভাব থাকে বেশি, তাছাড়া দিন ছোট আর রাত বড় হয়ে যায় বলে ঘুমের সময়টা দীর্ঘ হয়ে আসে প্রকৃতির নিয়মেই। তাই শীতকালে মনের আনন্দে ঘুমান, একটু বেশিই, আপনার শরীর খুশী থাকবে।
দুধ
দুধের সাথে খুব বন্ধুত্ব থাক বা চরম শত্রুতা, শীতকালের জন্য দুধকে জায়গা করে দিন আপনার নিত্যের খাদ্যতালিকায়। এমনি এমনি তো আর নয়! কারন হলো, এই সময়টায় আমাদের শরীর যেকোন অসুখবিসুখে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা রাখে বেশি। আপনি যতোই শক্তসমর্থ মানুষ হন, শীতের মৌসুমে হুট করেই বিচ্ছিরি ঠান্ডা বাঁধিয়ে বসবেন না যে এই কথা হলপ করে বলতে পারেন না। দুধ এই নাজুক সময়টায় ভীষণ উপকারী বন্ধু হয়ে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অটুট থাকতে সাহায্য করবে। দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে আস্থা রাখুন তাই। এসব খাদ্যবস্তু প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ভিটামিনের বিশাল ভান্ডার।
আরো আছে ফল ও সবজি
যাবতীয় ফল এবং সবজি, যা যা হাতের কাছে পাবেন, বিনা ভাবনায় পেটে চালান করুন। শীতের সবজি তো খাবার টেবিলে অবশ্যই থাকতে হবে। সাথে ফল এবং ফলের তৈরি ভিন্ন ধরনের কোন খাবারে নাশতার চাহিদা মিটিয়ে নিন। এসব খাবার আপনার শরীরকে ভেতর থেকে মজবুত রাখবে শীত মোকাবিলা করার জন্য।
স্নান
স্নান করুন মধ্যবেলা থাকতেই। দিনের শেষভাগে অথবা রাত করে যাদের গোসল করার অভ্যাস তারা এই মৌসুমে অভ্যাস পাল্টানোর জন্য প্রস্তুত থাকুন। দিনের পূর্ণ আলোয় গোসল সারুন, শরীরে হালকা রোদের ছাঁট লাগতে দিন, তবেই না শরীর আপনার প্রাণবন্ত থাকবে!
পরিচ্ছন্নতা
এই বিষয়ে খেয়াল রাখুন একটু বেশি। বাতাসে কতো কতো রোগজীবাণু ভেসে বেড়ায়, তাদের থেকে বাহ্যিকভাবেও দূরে থাকতে সতর্ক থাকুন। সবসময় ব্যবহারের জামাকাপড় নিয়মিত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন রাখুন। ঘরদোরও জীবাণুমুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন যতোটা পারা যায়।
একটু বাড়তি যত্নে রাখুন নিজেকে ও আপনজনদের। এই শীতে সব দুশ্চিন্তা আর জড়তা ভুলে সুস্থ থাকুন, সতেজ থাকুন। শীতকালের এই ভিন্ন আমেজ উপভোগ করুন প্রাণ খুলে।
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব
ছবি – হিরোটা.কম