চশমার ফ্রেম বাছাই করতে যেয়ে কনফিউজড হন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ এত এত চশমার ফ্রেমের মধ্যে নিজের জন্য পারফেক্ট ফ্রেম সিলেক্ট করা আমাদের কাছে যেন একটি চ্যালেঞ্জ! ফেইস শেইপের সাথে মানাবে কিনা, আবার দেখতেও স্টাইলিশ হবে কিনা – এমন চশমা কীভাবে সিলেক্ট করা যায় সে ব্যাপারে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন৷ আজকের ফিচারে আপনাদের জন্য থাকছে ফেইস শেইপ অনুযায়ী চশমার ফ্রেম সিলেকশন গাইডলাইন।
কীভাবে চশমার ফ্রেম সিলেক্ট করা উচিত
নিজের ফেইস শেইপ অনুযায়ী পারফেক্ট ফ্রেম চুজ করলে ফেইসের বেস্ট ফিচারগুলো খুব ইজিলি হাইলাইট করা পসিবল হয়। চশমা কেনার সময় বেশিরভাগই শুধুমাত্র কালার দেখে ফ্রেম চুজ করে ফেলেন। সেই সাথে দেখা যায়, কিছু ডিজাইনের চশমা বেশ ট্রেন্ডি বলে সেগুলোও ঝোঁকের বশে অনেকে পারচেজ করে ফেলেন। অথচ সেই চশমা ফেইস শেইপের সাথে মানাচ্ছে কিনা সে বিষয় নিয়ে তারা একদমই কনসার্নড থাকেন না। এই কারণে পরবর্তীতে দেখা যায়, চশমা পরার পর ফেইস ফিচার এনহ্যান্সড হয় না অথবা মানায় না। তাই যখনই চশমা কিনতে যাবেন, ফেইস শেইপের সাথে মানানসই চশমার ফ্রেম বেছে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
ফেইস শেইপ অনুযায়ী ফ্রেম সিলেকশন
সাধারণত পাঁচটি ডিফারেন্ট ফেইস শেইপ দেখা যায়। যেমন- রাউন্ড, ওভাল, হার্ট, স্কয়ার ও ডায়মন্ড। চলুন এবার জেনে আসা যাক এই পাঁচ ধরনের ফেইস শেইপে কোন ধরনের চশমা সবচেয়ে বেশি মানানসই সে সম্পর্কে।
১) রাউন্ড বা গোলাকার ফেইস শেইপ
যদি আপনার ফেইস শেইপ রাউন্ড হয়ে থাকে, তাহলে স্ট্রেইট লাইনযুক্ত কিংবা শার্প কর্নার রয়েছে এমন চশমার ফ্রেম বেছে নিতে পারেন। বিশেষ করে যে ফ্রেমগুলো ওয়াইড ও স্কয়ার শেইপের, সেগুলো রাউন্ড ফেইসকে খুব ভালো কমপ্লিমেন্ট করে। তবে রাউন্ড ও ওভাল শেইপের চশমা পরবেন না, কারণ এতে কিন্তু ফেইস আরো বেশি গোলাকার দেখায়।
২) ওভাল বা ডিম্বাকার ফেইস শেইপ
ওভাল ফেইস শেইপ হলে মুখ পুরোপুরি গোলাকার দেখায় না, তবে চিকবোন এরিয়াতে ফেইসের চওড়াভাব সবচেয়ে বেশি থাকে। সেই সাথে এই ফেইস শেইপে কপাল ও থুতনির অংশটুকু রাউন্ড শেইপের হয়। সাধারণত এই শেইপের ফেইস যতটুকু চওড়া হয়, তার চেয়ে একটু বেশি লম্বা হয়ে থাকে।
ওভাল ফেইস শেইপের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যেকোনো প্যাটার্নের চশমাই নিশ্চিন্তে বেছে নেওয়া যায়। আপনারা চাইলে আয়তাকার, স্কয়ার কিংবা একটু কার্ভি প্যাটার্নের চশমার ফ্রেম চুজ করতে পারেন। আবার যদি একটু বড় সাইজের চশমা পরতে ইচ্ছা হয়, তাহলে সেটাও করতে পারেন। মোটামুটি সব ধরনের ফ্রেমই এই ফেইস শেইপের সাথে মানিয়ে যায় বলে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন নিশ্চিন্তে।
৩) স্কয়ার ফেইস শেইপ
সাধারণত স্কয়ার ফেইস শেইপে কপাল ও চোয়াল বেশ চওড়া থাকে। স্কয়ার শেইপড ফেইসে থুতনির এরিয়াটুকুতে কোনো কার্ভ থাকে না এবং সেই সাথে জ’লাইনের এরিয়াটুকু একদম ডিফাইনড থাকে। রাউন্ড, ওভাল কিংবা ক্যাটস আই প্যাটার্নের ফ্রেম স্কয়ার শেইপের ফেইসের জন্য একদম পারফেক্ট। সেই সাথে চেষ্টা করবেন একটু থিন প্যাটার্নের ফ্রেম সিলেক্ট করতে। এতে আপনার ফেইসের কোনো ফিচার অতিরিক্ত ফোকাসড হবে না এবং ওভারঅল লুকেও ব্যালেন্স আসবে।
৪) হার্ট ফেইস শেইপ
যারা হার্ট ফেইস শেইপের অধিকারী, তাদের কপালের অংশটুকু চওড়া হলেও ফেইসের নিচের দিকটা ন্যারো থাকে। যাদের এমন ফেইস প্যাটার্ন রয়েছে, তাদের থুতনির অংশটুকু তুলনামূলক সরু হয়, অনেকটা হার্ট শেইপের মতো আর কী! খেয়াল করলে দেখবেন, রিমলেস ও সেমি রিমলেস চশমায় তাদেরকে দারুণ মানিয়ে যায়। আবার ওভাল শেইপের ফ্রেম পরলেও মানিয়ে যাবে অনায়াসেই। সেই সাথে চেষ্টা করুন একটু ছোট সাইজের ফ্রেম চুজ করতে। এতে আপনার ফেইসের ফিচারগুলো সুন্দরভাবে হাইলাইট করতে পারবেন।
৫) ডায়মন্ড ফেইস শেইপ
ডায়মন্ড শেইপ বেশ রেয়ার একটি ফেইস শেইপ। এই ফেইস শেইপে গালের ও চোখের দু’পাশের এরিয়াটুকু চওড়া থাকলেও কপাল ও চোয়ালের দিকটা বেশ ন্যারো হয়ে থাকে এবং সেই সাথে থুতনির আকৃতিও ছোট থাকে। ও হ্যাঁ, ডায়মন্ড ফেইস শেইপের অধিকারীদের চিকবোন একদম ডিফাইনড থাকে। এই ফেইস শেইপে ক্যাটস আই ও ওভাল শেইপের ফ্রেম পারফেক্টলি স্যুট করে। কারণ এই ধরনের ফ্রেম পরলে ফেইসের ন্যারো অংশে কিছুটা ব্যালেন্স আসে এবং দেখতেও সুন্দর লাগে।
এই ছিলো আজকের আলোচনা। আশা করি এখন থেকে আপনারা খুব সহজেই নিজের ফেইস শেইপ অনুযায়ী চশমার ফ্রেম সিলেক্ট করতে পারবেন। প্রয়োজনের জন্য তো রেগুলার গ্লাসেস পরা হয়ই, স্টাইলের জন্য ডিজাইন ও কালারে ভ্যারিয়েশন আনতে পারেন। আজ তাহলে এই পর্যন্তই। আবারও চলে আসবো নতুন কোনো টপিক নিয়ে। ভালো থাকবেন।
ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক
মডেলের চশমা- Luxotix