“চোখ যে মনের কথা বলে”… সৌন্দর্যের অন্যতম অংশ হলো চোখ। আর এই চোখের চারপাশেই কিন্তু আগে আগে বলিরেখা বা রিংকেলস দেখা দেয়। চোখের চারপাশের ত্বক অনেক বেশি সেনসিটিভ হয়ে থাকে, তাই এই অংশে এজিং সাইনস দেখা দেয় দ্রুত। সেই সাথে আরেকটি কমন প্রবলেম হচ্ছে আই পাফিনেস! চোখের নিচের ফোলাভাব দূর করার কোনো ইনস্ট্যান্ট সল্যুশন আছে কি? জানি, এই প্রশ্নটা অনেকেরই! চলুন আজ জেনে নেই কীভাবে আই পাফিনেস বা আই ব্যাগ দূর করা যায় মাত্র কয়েক মিনিটেই।
কেন হয়?
যখন চোখের চারপাশের পেশি ও টিস্যু দুর্বল হয়ে যায়, তখন চোখের নিচের অংশ ফুলে যায়। এটাকেই আমরা পাফি আই বলি। অনেক সময় স্কিন লুজ হয়ে চোখের চারপাশের থাকা ফ্যাট নিচের অংশ চলে আসতে পারে। আবার বিভিন্ন কারণে চোখের নিচে অংশ ফোলা দেখায়। যেমন-
- বয়স বৃদ্ধি
- ভালো ঘুম না হলে
- অতিরিক্ত লবণ খেলে
- অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনে
- বংশগত কারণে
- খুব দ্রুত ওজন কমানোর ফলে
- হরমোন লেভেলের ওঠা নামা ইত্যাদি
আই পাফিনেস দূর করার ইনস্ট্যান্ট সল্যুশন
বাইরে বের হওয়ার আগে আয়নায় দেখলেন যে চোখের নিচের অংশটুকু একটু বেশিই ফোলা। রাতে ঠিকমতো ঘুম হয়নি! এখন উপায়? কিছু কুইক সল্যুশন আছে যার মাধ্যমে চোখের চারপাশের স্কিন হাইড্রেটেড রাখা আর চোখের ফোলাভাব কমানো সম্ভব। তবে হ্যাঁ, যদি কোনো অসুখ বা মেডিকেল কন্ডিশনের কারণে এমনটা হয়, তাহলে কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ মতো চলতে হবে।
১) কাঁচা আলুর স্লাইস
কাঁচা আলু আই পাফিনেস খুব দ্রুত কমাতে পারে। কেননা এতে আছে স্টার্চ, আর এই স্টার্চ টিস্যু থেকে অতিরিক্ত লিকুইড বের করতে সাহায্য করে। আলু পাতলা স্লাইস করে কেটে ফ্রিজে রাখুন কিছুক্ষণ। এবার চোখের উপরে রাখুন ১০ মিনিট। চাইলে পটেটো জুস কটন প্যাডের সাহায্যেও অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
২) অ্যালোভেরা জেল
ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অ্যালোভেরা জেল স্কিনে সুদিং ইফেক্ট দেয় এবং স্কিন সেলস রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। আর অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ পাফিনেস কমিয়ে আনে। ফ্রিজে রাখা অ্যালোভেরা জেল দিয়ে আলতো হাতে চোখের নিচে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। এতে পাফিনেস দূর হবে, সেই সাথে রিংকেলসও কমে আসবে। তবে চোখে যেন না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৩) ঠান্ডা টি ব্যাগ
ব্ল্যাক অথবা গ্রিন টি, ব্যবহার করা যেকোনো টি ব্যাগ ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিন। এবার চোখে দিয়ে রাখুন ৫ মিনিট। চায়ে আছে ক্যাফেইন যা চোখের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। ক্যাফেইন আই এরিয়ার টিস্যুর মধ্যে স্ফীত রক্তনালীকে সংকুচিত করে। এতে ইনফ্ল্যামেশন ও পাফিনেস কমে আসে অনেকটাই।
৪) ঠান্ডা চামচ
চামচ তো খাবার খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়, এটি আবার কীভাবে আই পাফিনেস কমাবে? জানি, অনেকেই কনফিউজড! এটি খুবই ইফেক্টিভ সল্যুশন। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা মেটাল স্পুন পাফি এরিয়াতে ধরে রাখুন কয়েক মিনিট। এতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে আর চোখের ফোলাভাবও কমে আসবে। নিজেই একবার ট্রাই করে দেখুন!
৫) ঠান্ডা আই ক্রিম
মেকআপের আগে এই ট্রিকস অ্যাপ্লাই করতে পারেন। আই ক্রিম ফ্রিজে রেখে দিন। ঠান্ডা ক্রিম দিয়ে চোখের নিচের এরিয়া জেন্টলি ম্যাসাজ করুন। এতে পেশির রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আই পাফিনেস বা চোখের ক্লান্তিভাব সাথে সাথে দূর হবে। সেই সাথে আন্ডার আই এরিয়া ময়েশ্চারাইজড থাকবে, মেকআপও ক্রিজ করবে না।
৬) কনসিলার
মেকআপের মাধ্যমেও ছোট ছোট খুঁতগুলো কিন্তু কভার করা যায়। কনসিলার চোখের ফোলাভাবে কমাতে সাহায্য করে না, কিন্তু এটি ইনস্ট্যান্টলি আইব্যাগ হাইড করতে পারে। মেকআপের সময় চোখের নিচে পিচ, অরেঞ্জ বা ইয়োলো কালারের কনসিলার ব্যবহার করুন, এটি পাফিনেস আর ডার্ক সার্কেল কভার করে ফ্ললেস লুক ক্রিয়েট করতে হেল্প করবে।
বোনাস টিপস
চলুন এবার কিছু টিপস জেনে নেই যেগুলো ফলো করলে পাফিনেস বা আই ব্যাগ প্রিভেন্ট করা সম্ভব।
-
- চোখের চারপাশের এরিয়ার যত্নে আই ক্রিম ব্যবহার করুন
- ঘুমানোর সময় উঁচু বালিশ ব্যবহার করুন, এতে চোখের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে
- ছয় থেকে আট ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন
- লবণ ও সোডিয়ামযুক্ত খাবার যেমন- আলুর চিপস, প্রসেসড ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
- আই এক্সারসাইজ ও ফেসিয়াল ইয়োগা করুন ঘরে বসেই
নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত আই ক্রিমের ব্যবহার এগুলো সঠিকভাবে মেনটেইন করুন। আর ইনস্ট্যান্ট সল্যুশনগুলো তো আজ জানিয়েই দিলাম। আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য হেল্পফুল ছিলো। অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে আপনারা ভিজিট করতে পারেন সাজগোজের ওয়েবসাইট (শপ.সাজগোজ.কম), অ্যাপ কিংবা যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভারে সাজগোজের ফিজিক্যাল স্টোরে। আজ এই পর্যন্তই।
ছবি- সাজগোজ