ওপেন পোরস কি নিমিষেই ভ্যানিশ করা সম্ভব?

ওপেন পোরস কি নিমিষেই ভ্যানিশ করা সম্ভব?

Untitled-1

সাজগোজের ইনবক্সে অনেকেই জানতে চান ওপেন পোরস এর সমস্যার সমাধান কীভাবে হবে আর কী কী প্রোডাক্ট ইউজ করলে দ্রুতই এই প্রবলেমটা কমে আসবে। মুখের ত্বকের ওপেন পোরস নিয়ে অনেকেই চিন্তিত, এটা বেশ বিব্রতকর ও কমন একটি স্কিন কনসার্ন। আসলে আমাদের স্কিনে পোর জিনিসটার কাজ কী, পোরস বড় হয়ে যাওয়ার কারণগুলো কী, এটা কি আদৌ একেবারে কমানো সম্ভব, কীভাবে পোরস ক্লিন রাখতে হয় বা মিনিমাইজ করা যায়, এ বিষয়গুলো সম্পর্কে কতটুকু জানা আছে? সমস্যার সমাধান পেতে হলে অবশ্যই আগে একটু গভীরভাবে এই বিষয়ে জানা প্রয়োজন। এছাড়া আমরা জানি যে, বয়স অনুযায়ী স্কিনকেয়ার রুটিন আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। চলুন তাহলে জেনে নেই!

পোরস কী এবং এটার কাজ কী?

পোর মানে রোমকুপ, এটা জন্মগতভাবে সব মানুষেরই থাকে। বয়সের সাথে সাথে এবং অন্যান্য কারণে এটা যখন মুখে, বিশেষ করে নাকের চারপাশে ও গালে ভিজিবল হতে শুরু করে, তখনই আমরা বলি যে পোরস বড় হয়ে গেছে বা ওপেন পোরসের প্রবলেম হয়েছে! আমাদের মুখের স্কিনে কমবেশি প্রায় ২০ হাজার রোমকুপ আছে, আর সারা শরীরে তো আছেই, এটা ন্যাচারাল। কিন্তু মুখে যখনই কয়েকটা বড় বড় খোলা রোমকূপ দেখি, তখনই আমাদের চিন্তা শুরু হয়ে যায়! আচ্ছা, জানেন কি এই রোমকুপ বা পোরের কাজ কী? চলুন একনজরে সেগুলো দেখে নিই।

১) রোমকুপের প্রধান কাজ হলো আমাদের শরীর থেকে ঘাম বের করে দেওয়া

২) সেবাম সিক্রেশনের মাধ্যমে ত্বকের অয়েল প্রোডাকশন ও ময়েশ্চার লেভেল ব্যালেন্স করা

৩) স্কিনের টেম্পারেচার কন্ট্রোল করা

তাহলে বুঝতেই পারছেন, পোরস আমাদের জন্য কত দরকারি একটি জিনিস! পোরস পারমানেন্টলি রিমুভ করা পসিবল না, কিন্তু এটাকে মিনিমাইজ করা যায়, এর ভিজিবিলিটি কমানো যায়। তাই আমাদের টার্গেট হওয়া উচিত কীভাবে রোমকুপ ক্লিন রাখা যায়, বড় বড় পোরগুলো কীভাবে কমানো যায়, সর্বোপরি সঠিকভাবে স্কিনের যত্ন নেওয়া যায়।

SHOP AT SHAJGOJ

     

    পোরস বড় হওয়ার কারণ 

    সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্কিনের ইলাস্টিন ও কোলাজেন লুজ হতে শুরু করে, তখনই ত্বকের পোরস চোখে পড়ে। এছাড়া সান ড্যামেজ, ব্ল্যাক হেডস, অতিরিক্ত সেবাম ক্ষরণ অর্থাৎ অয়েলি স্কিন, হরমোনাল ইস্যু, স্কিন কেয়ার না করা এসব কারণে খোলা রোমকুপের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

    কীভাবে পোর সাইজ কনট্রোল করা যায়?

    রাতারাতি পোরস বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যা কমানো সম্ভব না, মানে নিমিষেই যে এটা রিমুভ হয়ে যাবে এমনটা না! তবে এর ভিজিবিলিটি অনেকটাই কমানো যেতে পারে। বয়স অনুযায়ী সঠিক স্কিন কেয়ার করে ঠিকঠাক যত্ন নিলে বয়স বাড়লেও ওপেন পোরসের প্রবলেম নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না।

    টিনেজে স্কিনকেয়ার

    এখন অনেকেই বলতে পারেন যে, এত অল্প বয়সে তো ওপেন পোরসের প্রবলেম হয় না, টিনেজে স্কিন এমনিতেই সুন্দর থাকে। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে এই বয়সে স্কিনে ন্যাচারাল গ্লো থাকে আর বেসিক স্কিনকেয়ার ছাড়া আর কিছু করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু হরমোনাল চেঞ্জের কারণে বা অনেকক্ষণ রোদে থাকলে বা ঠিকমতো ফেইস পরিস্কার না করলে খুব দ্রুতই স্কিনে খোলা রোমকুপ চোখে পড়তে পারে। পোরসের হেলথ ভালো রাখতে এই বয়সে কী কী করা যেতে পারে সেগুলো জেনে নেই চলুন।

    ১) ২০ বছরের আগে স্কিনকেয়ারে সিরাম রাখা যাবে না। ডাবল ক্লেনজিং, টোনিং, ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজিং, সানস্ক্রিন এগুলোই যথেষ্ট।

    ২) সপ্তাহে ১ বার মাইল্ড এক্সফোলিয়েটর দিয়ে ডেড সেলস, ব্ল্যাক হেডস, হোয়াইট হেডস ক্লিন করে নিতে হবে, এতে পোর ক্লগড হওয়ার ভয় থাকবে না।

    ৩) সাপ্তাহিক রূপচর্চায় ১-২ দিন মুলতানি মাটি, রোজ ওয়াটার, অ্যালোভেরা জেল ও টকদই দিয়ে প্যাক বানিয়ে ফেইসে লাগানো যেতে পারে। এতে স্কিন সুন্দর, টানটান আর পরিস্কার থাকবে।

    SHOP AT SHAJGOJ

       

      ২০ এর পর স্কিনকেয়ার

      আমাদের সবার স্কিন টাইপ, ত্বকের কোয়ালিটি যেমন আলাদা, তেমনি পোরসের গঠন বা স্ট্রাকচারও আলাদা। অনেকের খুব অল্প বয়সেই মুখে ওপেন পোরস দেখা যায়। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের ইলাস্টিন ও কোলাজেনের লেয়ারকে ড্যামেজ করে দেয়, তাই যারা ঠিকমতো সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করেন না তাদের ক্ষেত্রে এই প্রবলেমটা বেশ তাড়াতাড়ি চলে আসে। আর অতিরিক্ত অয়েলি স্কিনের অধিকারী যারা, তাদের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড অনেক বেশি অ্যাকটিভ হওয়ায় পোরসের ভিজিবিলিটি বেশি হয়, বিশেষ করে নাকের চারপাশে। তরুন বয়সে কীভাবে স্কিনের যত্ন নেওয়া যায়, সেটাই এখন আমরা জানবো।

      ১) বেসিক স্কিন কেয়ারের পাশাপাশি ত্বকের প্রয়োজন অনুসারে সিরাম বেছে নিন এবং বিউটি কনসালটেন্ট বা এক্সপার্টের সাথে কথা বলে সিরাম ব্যবহারের নিয়ম বুঝে নিতে ভুলবেন না।

      ২) পোরস মিনিমাইজ করতে নিয়াসিনামাইড দারুণ কাজ করে। রেটিনয়েড স্কিন সেলস রিপেয়ার করতে হেল্প করে পোরসের সাইজ কমিয়ে আনে। স্যালিসাইলিক এসিড আর গ্লাইকোলিক এসিড ক্যামিকেল এক্সফোলিয়েটর হিসাবে কাজ করে স্কিনের ডেড সেলসের বন্ড ভেঙ্গে দেয়, ত্বক হেলদি রাখে, অতিরিক্ত সেবাম প্রোডাকশন কমিয়ে আনে। ফলে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস আর ওপেন পোরসের সমস্যা দূর হয়। আপনাকে আগে বুঝতে হবে যে আপনার স্কিন টাইপের সাথে কোন ইনগ্রেডিয়েন্সটি ভালো কাজ করবে।

      ৩) রেগুলার স্কিন পরিস্কার করতে অয়েল ক্লেনজার ও ফোম ফেইসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে, ডাবল ক্লেনজিং করলে পোরস ভেতর থেকে ক্লিন থাকবে। নাকে ব্ল্যাক হেডস হলে সপ্তাহে ১ দিন নোস পোরস স্ট্রিপ দিয়ে সেগুলো পরিস্কার করে নিন।

      ৪) সপ্তাহে ১ বা ২ দিন ক্লে বেইজড মাস্ক ইউজ করতে পারেন যেগুলো পোরসের সাইজ কমাতে কার্যকরী। আইস ম্যাসাজও বেশ ভালো হবে আপনার জন্য। ওপেন পোরসের সমস্যা থাকলে বা অয়েলি স্কিন হলে হিলিং ক্লে, মুলতানি মাটি, ভল্কানিক অ্যাশ এই উপাদানগুলো আপনার স্কিনের জন্য ভালো কাজ করবে এবং ইনস্ট্যান্টলি আপনি ফিল করবেন যে পোরের ভিজিবিলিটি অনেকটাই কম লাগছে।

      ৫) টোনিং করলে ত্বকের পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে, পোরস টাইটেনিং হয়। তাই টোনার স্কিপ করা যাবে না! সেই সাথে দিনের বেলায় এস ফি এফ ৫০ যুক্ত সানক্রিন ইউজ করা কিন্তু মাস্ট।

      SHOP AT SHAJGOJ

         

        প্রেগনেন্সিতে স্কিনকেয়ার 

        হরমোনাল কারণে এই সময়ে ত্বকের তৈলগন্থি অতিরিক্ত অ্যাকটিভ হয়ে যেতে পারে, ফলে স্কিনে বেশ কিছু সমস্যা আপনার চোখে পড়বে যেগুলো হয়তো আগে ছিল না! তো এই সময়ে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট সিলেকশনে আপনাকে সচেতন হতে হবে, কারণ অনেক ইনগ্রেডিয়েন্টস প্লাসেন্টা ভেদ করে গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এই ব্যাপারে এবং স্কিনের জন্য মাইল্ড ও ন্যাচারাল উপাদানযুক্ত প্রোডাক্ট ইউজ করুন। চিন্তার কোনো কারণ নেই, হরমোনাল কারণে যদি স্কিনে প্রবলেম হয় সেটা বেবি ডেলিভারির পর আপনাআপনি চলে যাবে!

        মধ্যবয়সে স্কিনকেয়ার

        আগেই বলেছিলাম যে বয়সের সাথে সাথে স্কিনে বড় বড় পোরস দেখা যায়, তবে আপনি যদি সঠিকভাবে স্কিনের যত্ন নিয়ে থাকেন তাহলে এই সমস্যাটি আপনাকে বেশি ভোগাবে না! ২২-২৫ বছর থেকেই যদি অ্যান্টি এজিং স্কিন কেয়ার রুটিন আপনি ফলো করে থাকেন, তাহলে ৪০ বছর বয়সেও আপনার ত্বক ৩০ এর মতই দেখাবে। অনেকের আবার জেনেটিক্যাল কারণেও ওপেন পোরসের প্রবলেম হতে পারে। এই বয়সে স্কিনকেয়ার কীভাবে করবেন সেটাই আমরা এখন জানবো।

        ১) ক্লেনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং, সানস্ক্রিন, অ্যান্টি এজিং রেঞ্জ অ্যাপ্লাই এগুলো তো করতেই হবে নিয়মমতো। সপ্তাহে দুই বার স্ক্রাবিং করবেন। স্কিনকেয়ারে সিরাম রাখবেন ত্বকের ধরন ও প্রবলেম বুঝে।

        ২) শসার রস, রোজ ওয়াটার, অ্যালোভেরা জেল এগুলো দিয়ে আইস কিউব করে রাখবেন। পোর মিনিমাইজ করতে আইস ম্যাসাজ বেশ ভালো কাজ করে।

        ৩) স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে রেটিনল, স্যালিসাইলিক এসিড, গ্লাইকোলিক এসিড বা নিয়াসিনামাইড এসব উপাদান আছে কি না সেটা দেখে নিবেন, এগুলো আপনার স্কিনের জন্য ভালো কাজ করবে। এই উপাদানগুলো হিট এবং সান সেনসিটি হয়ে থাকে, তাই রান্নার আগে বা বাইরে গেলে সানস্ক্রিন ইউজ করতে ভুলবেন না। 

        শেষকথা 

        এই ছিল পোরস নিয়ে আলোচনা। আমরা জানলাম পোরসের কাজ কী, কীভাবে এটা ক্লিন রাখা যায় এবং বয়স অনুযায়ী সঠিক স্কিনকেয়ার গাইডলাইন। সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন নিতে পারলে অনেক ধরনের স্কিন প্রবলেমকে আপনি দূরে রাখতে পারবেন। সেই সাথে প্রচুর পানি পান করবেন, হেলদি ফুডচার্ট মেনে চলবেন, ঠিকমতো ঘুমাবেন।

        SHOP AT SHAJGOJ

           

          অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর ( জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর থাকবেন।

           

          ছবি- cdnparenting, সাজগোজ, সাটারস্টক

           

           

          116 I like it
          11 I don't like it
          পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

          escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort