দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে আমরা সকলেই তৎপর। সেজন্য আমাদের চেষ্টারও যেন অন্ত নেই। ওজন কমাতে ডায়েট চার্ট মেনে চলার জন্য বিভিন্ন রকম খাবার খেতে গিয়েও চলে আসে বাধ্যবাধকতা। তবে শুধু খেয়ে না খেয়ে ডায়েট করলেই যে আপনার ওজন কমে যাবে সে আশা করবেন না যেন। ডায়েটের পাশাপাশি মেনে চলতে হবে আরো কিছু টিপস যা আপনাকে পৌঁছে দিবে কাঙ্খিত লক্ষ্যে। ওজন কমাতে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস জেনে নিন।
ওজন কমাতে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস
১। আপনার ডায়েট চার্টে খাবারের তালিকায় কী কী খাবার রাখছেন সে সম্পর্কে সচেতন থাকুন। এমন সব খাবার রাখুন যেগুলোতে খুব কম ক্যালরি রয়েছে এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট সম্পন্ন খাবার ত্যাগ করুন এবং প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খান।
২। হালকা গরম পানিতে ১ চা চামচ লেবুর রস এবং আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন। এটি খুব দ্রুত শরীরের মেদ ঝরাতে কার্যকরী।
৩। আপনার ডায়েট চার্টে এমন সব ফল রাখুন যেগুলোতে কম ক্যালরি এবং প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। এমন সব ফলের মধ্যে রয়েছে তরমুজ, বাঙ্গি, পেঁপে ইত্যাদি।
৪। ডায়েটে থাকা কালে কার্বোনাইজড ড্রিঙ্কস বা সফট ড্রিঙ্কস পান করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন। বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদানে তৈরী এই উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন ড্রিঙ্কস গুলো শরীরের ওজন বাড়িয়ে শেইপ নষ্ট করে দেয়। তাই পেপসি, কোকাকোলা, লাইম সোডা ইত্যাদি পান করার পরিবর্তে কচি ডাবের পানি, গ্রিন টি বা বিভিন্ন ফলের জুস করে খেতে পারেন।
৫। অনেকেই দেখা যায় তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর আশায় একবেলা না খেয়ে থাকেন। এই কাজটি ভুলেও করবেন না। না খেয়ে কখনোই ওজন কমানো সম্ভব নয়। একবেলা না খেয়ে থেকে পরবর্তীতে যখনই আবার খেতে যাবেন তখন ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যাবে এবং দ্বিগুন পরিমাণ খাবার খাওয়া হয়ে যাবে। তাই যা খাবেন অল্প পরিমাণে খাবেন এবং কখনোই খালি পেটে থাকবেন না।
৬। চা বা কফির পরিবর্তে এখন থেকে গ্রিন টি পান করার অভ্যাস করুন। গ্রিন টিতে খুবই কম পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে। নিয়মিত গ্রিন টি পানের অভ্যাস করার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব। এছাড়াও সকালে খালি পেটে গ্রিন টি পানের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং এটি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাও দূর করে।
৭। দ্রুত ওজন কমাতে আরো একটি প্রয়োজনীয় ধাপ হচ্ছে প্রচুর পানি পান করা। সারাদিনে কমপক্ষে ৪-৫ লিটার পানি পান করুন। পানি পানের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ ইউরিনের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায় যার ফলে শরীরের সিস্টেম স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। এছাড়াও পানি শরীরের মেটাবোলিজম রেট বাড়াতেও বেশ কার্যকর।
৮। আমরা সকলেই চাই ওজন কমাতে কিন্তু নিয়ম মতো ব্যায়াম করতেই যেন সব কষ্ট। ওজন কমাতে হলে ব্যায়াম করার বিকল্প নেই। সারাদিনে যে পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করছেন তা যদি বার্ন না করতে পারেন তাহলে এই ক্যালরি চর্বিতে পরিণত হবে এবং স্বভাবতই ওজন বাড়বে। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ এবং হাঁটার অভ্যাস করুন।
সর্বশেষ একটি কথাই বলার আছে যেটি হল সবসময় নিজের লক্ষ্যে অটুট থাকুন। আমরা অনেকেই আছি কয়েকদিন ডায়েট করে হাল ছেড়ে দেই বা মজাদার খাবার দেখলেই ডায়েট ভুলে গিয়ে খাওয়া শুরু করি। ওজন কমিয়ে ফিগার আকর্ষণীয় শেইপে আনতে এটুকু কষ্ট মানতেই হবে। তাই নিজের লক্ষ্যে অটুট থেকে ডায়েট চার্ট এবং উপরের টিপস গুলো ঠিকমতো অনুসরণ করলে আশা করি খুব দ্রুত শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে হয়ে উঠতে পারবেন আকর্ষণীয় ফিগারের অধিকারী।
লিখেছেনঃ নাহার
ছবিঃ সাটারস্টক .