চুলের আগায় রুক্ষতা! আঁচড়াতে গেলে এই আগায় এসে সব যেন আটকে যায়। এই জট ছাড়াতে গিয়ে কত চুল যে ছিঁড়ে যায় তার হিসেব নেই। কিন্তু কেন এমন হয়? প্রশ্ন আসে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি আছে? অনেক বেশি নিম্নমানের কমার্শিয়াল হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের কারণে এবং অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার কারণে চুল দুর্বল হয়ে পরার সাথে সাথে আগায় রুক্ষতা চলে আসে। এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে আমরা আগা ছেঁটে নেয়াকে একমাত্র উপায় মনে করি।
কিন্তু চুলের আগা না কেটেও যে এই রুক্ষতা কমানো সম্ভব তা মাথাতেই আসে না। পরিত্রাণের উপায় না থাকলেও এই রুক্ষতায় লাগাম দেয়ার উপায় আছে! চুলের আগা একবার রুক্ষ হলে তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা খুব সহজ হয় না। অনেকেই ভেবে থাকেন একবার চুল রুক্ষ হলে তা আর পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে না। এইটা একেবারেই ভুল ধারণা। ঘরোয়া উপায়েই চুলের আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আগার রুক্ষতা রোধে আজ হেয়ার নারেশিং বামের একটি রেসিপি দেয়া হল। নিচে উল্লেক্ষিত কিছু উপাদান যোগার করে আজই তৈরি করে ফেলুন সুপার নারেশিং হেয়ার বাম। নিয়মিত চুলের রুক্ষ আগায় লাগান। তবে অবশ্যই চুল পরিষ্কার অবস্থায় লাগাবেন।
চুলের আগায় রুক্ষতা নিরাময়ে বাম
যা যা লাগবে
- শিয়া বাটার ৬০ গ্রাম
- ৩০ গ্রাম কোকো বাটার
- নারকেল তেল ৩০ গ্রাম
- ২০ জোজোবা অয়েল
- ২০ গ্রাম ক্যামেলিয়া সিড অয়েল
- ৩ গ্রাম ক্যাস্টর অয়েল
- ১২ গ্রাম আখরোট তেল
- ২২ গ্রাম প্রাকৃতিক মোম
- ১ গ্রাম ভিটামিন ই
- ল্যাভেন্ডার, লেমনগ্রাস এবং রোজমেরী অ্যাসেনসিয়াল অয়েল (৩:২:১ অনুপাতে)
এই উপাদানগুলো যেকোনো মেগাশপে পেয়ে যাবেন।
তৈরির পদ্ধতি
- একটি প্যানে অ্যাসেনসিয়াল অয়েল বাদে সব উপকরণ নিয়ে চুলায় দিন। চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন। একটি চামচ দিয়ে উপকরণগুলো নাড়তে থাকুন। সব উপকরণ একসাথে ভালোভাবে মিশে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন।
- কাঁচ বা টিনের কৌটায় ঢেলে রাখার আগে অ্যাসেনসিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। এবার গরম গরম মিশ্রণটিকে সেট হবার জন্য রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে। এবার আপনার নিজের হাতে তৈরি করা হেয়ার বাম তৈরি ব্যবহার করার জন্য।
ব্যবহারের উপায়
(১) আপনার চুলের আগা খুব বেশি রুক্ষ হলে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও সপ্তাহে ৩/৪ দিন লাগাতে পারেন।
(২) অল্প পরিমাণে হেয়ার বাম আঙ্গুলে নিন। তারপর দুই হাতে দুই আঙ্গুলে মেখে নিয়ে আস্তে আস্তে চেপে চেপে চুলের আগায় লাগিয়ে নিবেন।
(৩) হালকা ভেজা চুলে হেয়ার বাম লাগালে খুব তাড়াতাড়ি চুল শুষে নিবে। চুলে অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব থাকবে না। যদি চুলে তেল চিটচিটে হয়ে যায় তবে বুঝতে হবে আপনি বেশি পরিমাণে বাম চুলে লাগিয়ে ফেলেছেন।
মনে রাখবেন বাড়িতে তৈরি এই হেয়ার নারেশিং বাম ১ মাস রেখে ব্যবহার করতে পারবেন। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের আগায় রুক্ষতা ১০০ ভাগ দূর হবে এমন নয়। তবে চুলের আগায় আগের থেকে কোমলতা আসবে। খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন এই বামটি। তাই ঘরে বসেই তৈরি করুন এই বামটি এবং আপনার চুলের আগায় রুক্ষতা দূর করুন।
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক