HPV বা হিউম্যান পেপিলোমা নামক এ ভাইরাস যৌন বাহিত রোগের একটি অন্যতম প্রধান কারণ। শতকরা ৮০ জন মহিলা তাদের জীবদ্দশার যেকোন সময় এ ভাইরাসটি দিয়ে সংক্রমিত হতে পারে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এই ভাইরাসজনিত সংক্রমন আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে এ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কোষগুলো অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে ক্যান্সারে পরিনত হয়। জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধী টিকা হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমন থেকে জরায়ুকে রক্ষা করে।
প্রায় ৭০ ধরনের হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এর মধ্যে hpv-16 ও hpv-18 দুই-তৃত্বীয়াংশ জরায়ুর ক্যান্সার করে থাকে। এদের প্রতিরোধে দুই ধরনের টিকা FDA(U.S. Food and Drug Administration) কতৃক অনুমোদিত যা Gardasil ও Cevarix নামে পাওয়া যায়। এ দুটি টিকাই hpv-16 ও hpv-18 প্রতিরোধে প্রায় ১০০ ভাগ কার্যকরী এবং ভবিষ্যতে জরায়ু ক্যান্সারের সম্ভাবনা ৭০ ভাগ পর্যন্ত কমাতে সক্ষম।
১১ থেকে ১৪ বছরের যেকোন বালক-বালিকা এই টিকা নিতে পারবে। অর্থাৎ সেক্সুয়াল এক্সপোজার বা এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমনের পুর্বেই এর টিকা নিতে হয়।তবে ২৬ বছর পর্যন্তও টিকাটি দেয়া যেতে পারে।এরপর যদি কেও এ টিকাটি নিতে চায় তবে hpv DNA টেস্ট করে দেখে নিতে পারে ইতিপুর্বেই সে এই জীবানুটি দ্বারা সংক্রমিত কিনা। দুই বা তিন ডোজে ভাক্সিনটি দেয়া হয়। প্রথম ডোজ টি দেয়ার এক মাস এবং ছয় মাস পর পরবর্তী ডোজগুলো দিতে হয়। এটি দেয়ার পর বড় কোন শারীরিক সমস্যা হয় না, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইঞ্জেক্সনের স্থানে ব্যাথা ও প্রদাহ,ঝিমুনি ভাব,মাথা ব্যাথা বা এলার্জির সমস্যা হতে পারে।
যেহেতু ৩০% ক্ষেত্রে জরায়ুর টিকা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয় না তাই এ টিকা নেয়ার পরও জরায়ু ক্যান্সার সনাক্তকরণের জন্য স্ক্রিনিং টেস্ট( পেপ বা ভায়া টেস্ট) করে যেতে হবে।
ডাঃ নুসরাত জাহান
সহকারী আধ্যাপকা(অবস-গাইনি)
ডেলটা মেডিকেল কলেজ,মিরপুর ১,ঢাকা।
ছবি – এক্টিভিস্টপোস্ট.কম