মেক-আপ করার ক্ষেত্রে বা মেক-আপ সামগ্রী কেনার আগে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে সব ধরণের মেক-আপেই আপনাকে মানাবেনা। আপনার গায়ের রঙ, ঠোঁটের ধরণ, চুলের রঙ, চোখের অবস্থা সব কিছুর সাথে মিল রেখে মেক-আপ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী সামগ্রী কিনতে হবে। এখানে মেক-আপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।
Foundation:
Foundation কিনতে গেলে অবশ্যই মুখে কোন কিছু ব্যবহার না করে যাবেন যেন আপনার প্রকৃত গায়ের রঙ এর সাথে মিল রেখে তা কিনতে পারেন। হাতে না লাগিয়ে মুখে অল্প একটু লাগিয়ে পরীক্ষা করুন কারণ আমাদের মুখ আর হাতের রঙ এক নয়। কেনার আগে অবশ্যই তা ন্যাচারাল আলো তে পরীক্ষা করে দেখুন। আপনার ত্বকের সাথে কোন শেড মানাবে সেটা বোঝার জন্য এটা হলো সবচেয়ে ভালো উপায়। কোথাও যাওয়ার আগে Foundation ব্যবহার করলে শুধু মুখেই দিবেন না।এক-ই সাথে গলা, কাঁধের যত টুকু অংশ খোলা থাকে সেই অংশেও ব্যবহার করবেন। ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে লাগাবেন যেন থুতনি আর চোয়ালের পাশে ফাউন্ডেশান জমে সরু লাইনের মত না হয়ে যায়।
ভ্রু এর সাজ:
বিশেষজ্ঞদের মতে eyebrow pencil ব্যবহারের মাধ্যমে অনেকের চেহারায় একটি রুক্ষ ভাব চলে আসে। অনেকের আবার চেহারার কৃত্রিম ভাব চলে আসে। তাই eyebrow pencil ব্যবহার না করে eyebrow powder ব্যবহার করা ভাল। এমন শেড বেঁছে নিন যা আপনার চুলের রঙ এর চেয়ে হালকা হবে। নাহলে পুরো মুখে শুধু ভ্রু গুলো ফুটে উঠবে। eyebrow powder দেয়ার পরে eyebrow brush দিয়ে ভ্রু সমান করে নিন। এর ফলে আপনি বুঝতে পারবেন যে ভ্রুর কোন অংশে ফাঁকা রয়ে গিয়েছে। তারপর আবার সেই ফাঁকা অংশে eyebrow powder দিন। সব শেষে brow gel ব্যবহার করুন যেন আপনার ভ্রুর রঙ আর শেপ একদম ঠিক থাকে।
Tinted ময়েশ্চারাইজার:
অনেকের মুখে সঠিক শেডের foundation দিলেও মানায়না। এক্ষেত্রে তারা Tinted ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। ফাউন্ডেশান আপনার স্কিনের উপর একটি লেয়ার তৈরী করে রাখে কিন্তু Tinted ময়েশ্চারাইজার হালকা তাই সহজেই স্কিনের সাথে মিশে যায়। Tinted ময়েশ্চারাইজারে খুব অল্প এবং হালকা white shade মেশানো থাকে ফলে আপনার স্কিনে অনেক ন্যাচারাল লুক আসবে।
লিপস্টিক আর সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি:
শুধু হাই গ্লস লিপস্টিক আপনার ঠোঁট কে অল্প সুরক্ষা দিবে অর্থাৎ সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি দ্বারা আপনার ঠোঁটের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিবে। দিনের বেলা বাইরে গেলে ঠোঁটে যদি wet look আনতেই চান তাহলে প্রথমে ঠোঁটের উপর অস্বচ্ছ লিপস্টিক দিয়ে নিন তারপর তার উপর gloss ব্যবহার করুন।
যে প্রোডাক্টটি প্রতি ৩ মাসে বদলাবেন:
প্রতি ৩ মাস পর পর mascara বদলাবেন। লিকুইড অথবা creamy মেক-আপ ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের আদর্শ পরিবেশ তৈরী করে। যদি mascara ৩ মাসের আগেই শুকিয়ে যায় তাহলে পানি অথবা মুখের লালা দিয়ে সেটা ভিজিয়ে নিবেন না। কারণ এর ফলে ব্যাক্টেরিয়া প্রস্তুত হতে পারে।
নীল Eye shadow এর ব্যবহার:
অ্যালার্জি, শুষ্কতা, চুলকানি অথবা অনেক দেরী করে ঘুমানোর পর অনেক সকালে উঠলে চোখে লালচে ভাব চলে আসে। এ অবস্থায় চোখের লালচে ভাব লুকাতে অথবা চোখের সাদা অংশ কে আরও বেশি সাদা দেখাতে চাইলে navy blue eye shadow নাহলে navy blue eye liner ব্যবহার করুন। চোখে চারপাশের ফোলা ভাব ঢাকতে ice blue Eye shadow ব্যবহার করতে পারেন।
Eyelash comb ব্যবহার করুন:
Eyelash comb অতিরিক্ত mascara তুলে নেয় ফলে আপনার mascara জট বেঁধে এক জায়গায় থাকবেনা। Mascara শুকিয়ে যাওয়ার আগেই Eyelash comb ব্যবহার করবেন। নাহলে ভালো ফল পাবেন না। যদি আপনার ভয় লাগে সেক্ষেত্রে প্লাস্টিকের তৈরী যেটা সেটা ব্যবহার করতে পারেন।
পাতলা /চিকণ ঠোঁটের সাজ:
আপনার ঠোঁট খুব চিকণ বা পাতলা হলে গাঢ় রঙ এর লিপস্টিক এড়িয়ে চলুন কারণ গাঢ় রঙ এর লিপস্টিকের কারণে আপনার ঠোঁট আরও পাতলা দেখাবে।
যে শেডের concealer চোখের নিচের কালো দাগ ঢেকে দিবে:
আপনার গায়ের রঙ যেরকম-ই হোক না কেন তার থেকে এক শেড হালকা concealer বেঁছে নিন। ব্যবহারের আগে ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে লাগাবেন যেন চোখের কালো circle ঢাকতে গিয়ে চোখের চারপাশে সাদা circle না হয়ে থাকে।
বলিরেখা থাকলে পাউডারের ব্যবহার:
অনেকে মনে করেন বলিরেখার উপর পাউডার ব্যবহার করা ঠিক নয় কিন্তু এটা ভুল ধারণা। এরকম অবস্থায় মুখের পুরোটা অংশে পাউডার না দিয়ে শুধু তৈলাক্ত অংশে puff দিয়ে হালকা পাউডার বুলিয়ে নিন।
লিখেছেনঃ সাবরিনা