আজকে আমরা গল্প করবো লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার দেনায়েতপুর নামক স্থানে অবস্থিত প্রায় ১৫০ বছর পুরনো জ্বীনের মসজিদ নিয়ে। এটি একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। পর্যটকদের জন্য খুবই আকর্ষনীয় স্থান এই জ্বীনের মসজিদ। ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে ঘুরে আসার জন্য খুবই সুন্দর জায়গা এইটি। চলুন জেনে নেই কোথায় থাকবেন, খাবেন এবং কিভাবে যাবেন আকর্ষনীয় এই স্থানটিতে।
জ্বীনের মসজিদ পরিচিতি
ঐতিহাসিক জ্বীনের মসজিদ লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার দেনায়েতপুর নামক স্থানে অবস্থিত। আকর্ষনীয় এই মসজিদটি ১৮৮৮ সালে ৫৭ শতাংশ জমির উপর নির্মিত। এই মসজিদের দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট এবং এর প্রস্থ ৭০ ফুট। এই মসজিদের ছাদে রয়েছে আকর্ষনীয় ৩টি গম্বুজ। দিল্লীর শাহী মসজিদের নকশায় নির্মিত এই জ্বীনের মসজিদ। ঐতিহাসিক এই মসজিদের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক হচ্ছে এর তলদেশে প্রায় ২৫ ফুট গভিরে অবস্থিত ৩ কামরা বিশিষ্ট একটি গোপন ইবাদতখানা। এর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল্লাহ এই ইবাদতখানার নির্জন স্থানে বসে আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। কিন্তু বর্তমানে এই ইবাদতখানাটি পানিপূর্ণ কূপে পরিনত হয়েছে। মসজিদের সামনে একটি মিনার রয়েছে। জরাজীর্ণ এই মিনারটির উচ্চতা ২৫ ফুট। কথিত আছে এই মসজিদটি রাতের অন্ধকারে জ্বীনদের দিয়ে নির্মান করা হয়েছে এবং বেশকিছু বছর জ্বীনরা এই মসজিদে ইবাদত করেছে। গভীর রাতে স্থানীয়রা এই মসজিদ থেকে জ্বীনদের জিকিরের আওয়াজ শুনতে পেত। আর এইজন্যই ১৫০ বছর পুরনো এই ঐতিহাসিক মসজিদটি জ্বীনের মসজিদ নামে পরিচিত।
কিভাবে যাবেন জ্বীনের মসজিদ
ঢাকা কিংবা দেশের যেকোন প্রান্ত থেক জ্বীনের মসজিদ যেতে প্রথমেই আপনাকে লক্ষীপুর যেতে হবে। ঢাকা থেকে লক্ষীপুর যাওয়ার জন্য সরাসরি বাস রয়েছে। সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে বেশকিছু বাস যেমন আলবারাকা, রয়েল, ইকোনো, গ্রীনল্যান্ড এক্সপ্রেস ও ঢাকা এক্সপ্রেস সহ আরও অনেক বাস রয়েছে যা সরাসরি লক্ষীপুর যায়। সেক্ষেত্রে ভাড়া হবে ৪৫০ থেকে ৮৫০ পর্যন্ত। ঢাকা থেকে লক্ষীপুর যেতে ৩-৫ ঘন্টার মতো সময় লাগতে পারে।
লক্ষীপুর নামার পর স্থানীয় পরিবহন যেমন বাস, সিএনজি কিংবা অটোরিক্সা দিয়ে রায়পুর দিয়ে মাওলানা আবুল খায়ের রোডে অবস্থিত জ্বীন মসজিদে যেতে পারেন। লক্ষীপুর থেকে মাত্র ২১ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত এই মসজিদটি।
কোথায় থাকবেন
লক্ষীপুরের দেনায়েতপুরে থাকার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। এই গ্রামে তেমন কোন হোটেল কিংবা গেস্ট হাউজ নেই। কিন্তু লক্ষীপুরে বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। আপনি চাইলে এইসব হোটেলে গিয়েও থাকতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে কিছু রেস্ট হাউজ। চাইলে এসব রেস্ট হাউজগুলোতে গিয়েও থাকতে পারেন।
কোথায় খাবেন
দেনায়েতপুরে ভালো কোন খাবারের হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্ট নেই। কিন্তু লক্ষীপুরে বেশকিছু খাবারের ভালো হোটেল, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, ফাস্টফুড এবং কফি শপ রয়েছে। আপনি এসব রেস্টুরেন্টগুলোতে গিয়েও খেতে পারেন।
ছুটির দিনে পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ঐতিহাসিক এই মসজিদটিতে। বড় কিংবা ছোট সবারই খুব ভালো লাগবে। ব্যস্থময় জীবনে একটু স্বস্তি আনতে এবং প্রাচীন সৌন্দর্যের নিদর্শন উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন অপার সৌন্দর্যের ঐতিহাসিক নিদর্শন জ্বীনের মসজিদে।
ছবি- সংগৃহীত: পয়েন্টপ্রতিদিন.কম