সুন্দর এক জোড়া চোখ আরও বেশি সুন্দর, আকর্ষণীয় ও মোহনীয় হয়ে উঠতে পারে কাজলের ছোঁয়ায়। সব মেয়েই কম-বেশি কাজল লাগাতে পছন্দ করে, অনেকে আছেন যারা কখনো মেক-আপ করেন না, তারাও অনায়াসে ও স্বাচ্ছ্বন্দে কাজল ব্যবহার করে থাকেন। মায়েরা বাচ্চাদেরকে অশুভ শক্তি থেকে রক্ষার্থেও কাজল দিয়ে নজর টিপ দিয়ে থাকেন, সে কাজলের সাথে মিশ্রিত হয় মায়ের মমতাও। আগের দিনে তেল ও আঙড়া দিয়েই তৈরি হত কাজল, কিন্তু এখন নানা রকমের, ব্র্যান্ডের ও দামের কাজল পাওয়া যাচ্ছে। চলুন আজ তবে জেনে নেই কী কী ধরনের কাজল আছে আমাদের নাগালের মধ্যে –
পেন্সিল লাইনারঃ
পেন্সিল লাইনারই হচ্ছে সবচেয়ে সহজে ব্যবহৃত ও সর্বাধিক সমাদৃত কাজল। এ কাজল লাগাতে যেমন সুবিধা, তেমনি এর স্থায়ীত্ব ও ভালো। ব্র্যান্ডেড পেন্সিল লাইনার সহজে ছড়ায় না এবং কিছু কিছু লাইনার আছে পানি নিরোধোক কাজ ও করে থাকে বলে গ্রীষ্ম-বর্ষা সব ঋতুতেই ব্যবহার উপযোগী।
আমাদের দেশে পাওয়া যায় এমন কিছু পেন্সিল লাইনারের মধ্যে নিয়র, জর্ডানা, জ্যাকলিন, আয়োনি, পারসোনি, লা ফেম, মেবিলিন, লরিয়েল, ল্যাকমে, মিস এন্ড মিসেস অন্যতম। এগুলোর দামও খুব বেশি নয়, ৭০-৩০০ টাকার মধ্যে আর পাওয়া যাবে ছোট-বড় সব দোকানে। বাইরের ভালো কাজলের মধ্যে আছে ম্যাক, শ্যানেল, ক্লিনিক, গার্লিন ইত্যাদি। এদের দাম পড়বে ১৯০০-২৫০০ টাকার মধ্যে।
লিকুইড লাইনারঃ
লাইনারের এই প্রকারটিই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পুরনো। সেই ৫০-৬০ বা তারও আগের দশক থেকে আমাদের দেশে লিকুইড লাইনারের প্রচলন ছিল। এর ব্যবহার ও অনেক সহজ, আর এর ব্রাশের সাহায্যে ইচ্ছামত লাইনিং করা যায়-মোটা বা সরু ঠিক যেমনটি আপনি চান। প্রচলিত কিছু লিকুইড লাইনারের মধ্যে রয়েছে-ল্যাকমে, লা ফেম, প্রেস্টিজ, রেভলন, আয়োনি, লা-স্পল্যাশ, জ্যাকলিন। দাম-১৫০-৭০০ টাকার মধ্যে।
রঙিন লাইনারঃ
চিরায়ত কালো কাজলের বাইরেও এখন বিভিন্ন রঙের কাজল পাওয়া যায়। কিশোরী থেকে শুরু করে তরুণীরা এমনকি মধ্য বয়সীরাও এখন রঙিন লাইনার বেছে নিচ্ছে। এর ব্যবহারে আলাদা করে আই-শ্যাডো লাগানোর ঝক্কি কমে যাবে অনেকটাই , আর তাই ব্যস্ততার ভীড়ে কম সময়ে করতে পারা এ ফ্যশন এখন এত জনপ্রিয়। সহজলভ্য রঙিন লাইনারের মধ্যে আছে জর্ডানা, জ্যাকলিন, মিস এন্ড মিসেস, এভার বিউটি ইত্যাদি। এদের দাম ৮০-২৫০ টাকা।
জেল লাইনারঃ
আজকাল জেল লাইনারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে আর এটা ব্যবহার করাও সহজ। কয়েকবার ব্যবহারেই আপনি এতে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারেন। জেল লাইনারের সবচেয়ে বড় গুণ হল এর পিগমেন্টেশন, এটি আপনাকে মনের মত গাঢ় রঙ দেবে আর এর স্থায়ীত্বও অন্য সব লাইনারের তুলনায় বেশি। আমাদের দেশে এভার বিউটি, নিট্রো, মেবিলন এসবের জেল লাইনার পাওয়া যায়। দাম পড়বে ২৫০-১২০০ টাকা পর্যন্ত। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে – ববি ব্রাউন, ম্যাক ফ্লুইড লাইন, লরিয়েল ইত্যাদি।
অটো লাইনারঃ
শার্পিং এর ঝামেলা এড়াতে বাজারে এসেছে অটো লাইনার। এটা বিশেষ ধরনের পেন্সিল লাইনার। এ লাইনার প্লাস্টিক হোল্ডার এ থাকে এবং রোলিং এর সাহায্যে ব্যবহার করতে হয়, তাই এটা ভ্রমণ উপযোগীও বটে। এ লাইনার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমাদের দেশে পাওয়া যায় এমন কিছু বিখ্যাত অটো লাইনার হচ্ছে মেবিলিন কোলোসেল, ল্যাকমে আইকোনিক, রেভলন কালারস্টে, মিবিলিন আই ডিফাইনড, লরিয়েল ইনফ্লেইবল, মিস এন্ড মিসেস, জর্ডানা। এদের দাম ২৫০-৭০০ টাকার মধ্যে।
পাউডার বা ডাস্ট লাইনারঃ
আইশ্যাডো পাউডারের মত কিছু আই লাইনার পাওয়া যায়, যেগুলোকে সাধারণত ডাস্ট লাইনার বলা হয়ে থাকে। অনেকে একে আই শ্যাডোই ভেবে থাকে। এসব পাউডার লাইনার গুলো স্মোকি আই মেক-আপ করতে বেশি ব্যবহার করা হয়।
ওয়াটার প্রুফ লাইনারঃ
উপরোক্ত কোন ধরনের লাইনারেই যদি ওয়াটারপ্রুফ গুণাগুন থেকে থাকে, তবে সে ধরনের লাইনারকে ওয়াটার প্রুফ লাইনার বলে। সাধারণত এ ধরনের লাইনারের দাম একটু বেশি হয়। বাজারে রেভলন, লা ফেম, মেবিলিন প্রভৃতি ব্র্যান্ডের ওয়াটার প্রুফ লাইনার পাওয়া যায়।
এসব কাজল কিনতে পাবেন বসুন্ধরা সিটি, আলমাস, প্রিয়, বডি লাইন, গাউসিয়া, ইস্টার্ণ প্লাজা, মৌচাক ও যে কোন ভালো কসমেটিকসের দোকানে। প্রসাধনী কেনার সময় অবশ্যই ভালো দোকান থেকে কিনবেন, বিশেষ করে চোখের প্রসাধনী। কেননা চোখ স্পর্শকাতর জায়গা, যদি আপনার প্রসাধনী টি নকল হয় তবে চোখের ক্ষতির ভয় থাকে। তাই দেখে-শুনে ভালো পণ্য কিনুন। সবার জন্য শুভ কামনা।
লিখেছেনঃ রোজা স্বর্ণা
ছবিঃ মেবেলিন.কম