আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপরই পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। এই ঈদে ঘর-গৃহস্থলির কাজ অনেক বেড়ে যায়। এই ঈদে কুরবানি দেয়া, মাংস কাটা-পরিষ্কার করা তার পাশাপাশি মাংস ভাগ করে গরিব-দুঃখী ও আত্মীয়দের মাঝে বণ্টন করতে অনেকটা সময় লেগে যায়। তারপরে বাসায় ঈদের রান্না আর অতিথি আপ্যায়ন তো আছেই। তাই কিছু কাজ এখন থেকে গুছিয়ে রাখলে অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। চলুন দেরি না করে দেখে নিই, কুরবানির আগের রান্নাঘরের কিছু প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কিছু টিপস।
রান্নাঘরের আগাম প্রস্তুতি
(১) কুরবানির সময় মাংসের বিভিন্ন আইটেম রান্না হয়ে থাকে, তাই তার জন্য প্রয়োজনীয় মসলা যেমন- কাবাব মসলা, গরম মশলা ইত্যাদি তৈরি করে এয়ার টাইট বক্সে রেখে দিন।
(২) ভেজা মসলা মানে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, জিরা আগে থেকেই কেটে বেটে/ ব্লেন্ড করে নিন।
(৩) ভেজা মসলাগুলো ব্লেন্ড করে ছোট ছোট বক্স বা আইস কিউব বক্সে রেখে বরফ করে এরপর সেগুলোকে জিপ-লক ব্যাগ বা পলি ব্যাগে রেখে দিতে পারেন। এতে প্রয়োজনের সময় ১/২ টা মসলার কিউব দিয়ে সহজেই তরকারি রান্না সেরে ফেলতে পারবেন। আস্ত গরম –মসলাও কিনে হাতের কাছে রেখে দিন।
(৪) কুরবানির মাংস কাটার জন্য দরকার ধারালো ছুরি/ বটি, তাই এখনই এইগুলোতে ধার করিয়ে নিন। তবে সাবধান বাসায় বাচ্চা থাকলে, তাদের চোখের আড়ালে রাখুন।
(৫) উৎসবে রান্নার জন্য বড় হাড়ি-পাতিল প্রয়োজন। তাই বাসায় কেনা থাকলে সেগুলো বের করে ভালোভাবে ধুয়ে হাতের নাগালে রাখুন। আর যদি মনে করেন আপনার প্রয়োজনীয় পাতিল কেনার দরকার তবে এখনই কিনে ফেলুন।
(৬) অতিথি আপ্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বাসন-কোসন ধুয়ে, মুছে নিন ঈদের ২/১ দিন আগে।
(৭) ফ্রিজ পরিষ্কার করে কিছু জায়গা খালি করে রাখুন। মাংস সংরক্ষণ করতে লাগবে।
(৮) ঘর গোছানোর আগে বাসার সব ঝুল ঝেড়ে নিন, বাথরুমেও ঝাড়ার কথা ভুললে চলবে না কিন্তু।
(৯) এরপর বাসার মেঝে ভালোভাবে মুছে নিন। আজকাল ফ্লোর ক্লিনার পাওয়া যায় খুব সহজেই, তা দিয়ে ফ্লোর মুছে নিন। এছাড়া ঘরের পোকামাকড় দূর করার জন্য পানির সাথে বোরক্স পাউডার বা ভিনেগার মিশিয়ে নিতে পারেন।
(১০) ব্লিচিং পাউডার কিনে রাখুন, কুরবানির পরে দুর্গন্ধ দূর করতে এটা ব্যবহার করা হয়।
(১১) বাজারে পলিব্যাগ পাওয়া যায়, যেটা পাউন্ড হিসাবে বিক্রি করে থাকে। বিভিন্ন সাইজের পাওয়া যায়। কিছু পলিব্যাগ কিনে রাখতে পারেন, বাসার মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ ও বিলিবণ্টনের মাংস দিতেও অনেক সুবিধা হবে।
(১২) যেহেতু মাংস কাটাকাটিই প্রধান বিষয় এসময় তাই বাড়ির ছোট বড় সবারই চাওয়া থাকে মাংস কাটবে, সে ক্ষেত্রে একটু বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ডেটল/ স্যাভলন, তুলা, ব্যাণ্ডেজ ইত্যাদি হাতের কাছে রাখবেন।
(১৩) ফ্রিজে মাংস রাখার আগে একবার ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে পারলে খুব ভালো হয়।
এইসব ছোটখাট কাজ আপনাকে ঈদের দিনে বাড়তি ঝামেলা থেকে রেহাই দিবে। আমরা জানি আপনারও হয়তো নিজস্ব কিছু টিপস আছে, আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিচের কমেন্ট সেকশনে। ভালো কাটুক আপনার ঈদ-উল-আযহা!
ছবি – সাটারস্টক
লিখেছেন – ফাতেমা সিকদার