আমার বয়স ২২। ভার্সিটি শেষ করে ইন্টার্নশিপ করছি আজ দু’মাস হলো। ভার্সিটিতে পড়াকালীন সময়ে স্কিনের তেমন কোন প্রবলেম ছিল না, মাঝেমাঝে দু-একটা পিম্পল উঠতো। আমার স্কিন টাইপ কম্বিনেশন, মানে টি-জোন অয়েলি, আর বাকি ফেইস স্কিন নরমাল। ভার্সিটি ছিল বাড়ির কাছে। নবাবের মত দেরি করে ঘুম থেকে উঠে রিকশায় চড়ে চলে যেতাম। কিন্তু ইন্টার্নশিপ করছি ব্যাংকে এবং বলাই বাহুল্য, এখন হাঁটাও লাগে, বাসেও চড়া লাগে। সারাদিনে যে কী পরিমাণ ধুলোবালি লাগে, আর কী পরিমাণ ঘাম ঝরে, তা বলাই বাহুল্য। আমি স্কিনকেয়ারে নতুন কোন প্রোডাক্ট যোগ করার আগে বেশ চিন্তাভাবনা করে নেই। কারণ আমার আম্মু সবসময় বলেন, মেকআপ-এর চেয়ে স্কিনকেয়ারটাই বেশি ইম্পরটেন্ট। কারণ আমার স্কিনটাই আমার বেস্ট মেকআপ যেটা আমাকে সবসময় ক্যারি করতে হবে আয়ুষ টারমারিক ফেইস ওয়াশ।
[picture]
এক ফ্রেন্ডের পরামর্শে লিভার আয়ুশের অ্যান্টি পিম্পল টারমারিক ফেসওয়াশ (Lever ayush pimple clear turmeric face wash) আর ফেইস ক্রিমটা কিনে ইউজ করা শুরু করি। কারণ আমি বাজেটের মধ্যে স্কিনের জন্য সেইফ প্রোডাক্ট চাচ্ছিলাম। আর আমি ছোটবেলা থেকেই আম্মুকে দেখেছি কাঁচা হলুদের ফেইসপ্যাক, বডিপ্যাক মাখতে, আমার আম্মু বরাবরই সুন্দর। আর আমি অলস(!)।
আয়ুশের প্রোডাক্টে কাঁচা হলুদ আছে দেখে আমি ইন্টারেস্টেড হই। গত দেড় মাস ধরে আমি প্রোডাক্টগুলো ইউজ করছি। আজকে ফেইসওয়াশ-টা নিয়ে কথা বলবো। নেক্সটে ক্রিমটা নিয়ে কথা বলবো।
প্যাকেজিং
তো সবার আগে আমি যেটা নিয়ে কথা বলবো, সেটা হলো, প্রোডাক্টের আউটলুক। মানে প্যাকেজিং। হালকা হলদে রঙের ফ্লিপ টপ ক্যাপের টিউবে আসে প্রোডাক্টটি। ওপরে কয়েকটা কাঁচা হলুদ এবং একটা কাঠের বাটিতে কাঁচা হলুদের গুঁড়ো, সবুজ পাতার ছবি দেয়া আছে, দেখলেই আয়ুর্বেদের একটা ফীল আসে। টিউবের পেছনের অংশে সম্পূর্ণ বাংলায় এর ব্যবহারবিধি, মূল উপাদান বিষয়ক সমস্ত ইনফরমেশন দেয়া আছে। বারকোড দেয়া আছে। এবং উৎপাদনের তারিখ থেকে দুই বছর পর্যন্ত এর মেয়াদ দেয়া আছে।
মূল উপাদান এবং তাদের কার্যকারিতা
এই পিম্পল ক্লিয়ার ফেইসওয়াশে আছে কাঁচা হলুদের নির্যাস, যা ত্বককে দূষণমুক্ত করে তোলে এবং সেই সাথে অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। আর আছে নালপামারাদি তেল। যেটা সম্পর্কে আমি খুব বেশি কিছু জানতাম না। পরে ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখলাম, এটা প্রাচীন আয়ুর্বেদের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা উপাদান। যেটা স্কিন র্যাশ, ইনফেকশন সারিয়ে তোলে, ন্যাচারালি স্কিন টোন ব্রাইটেন করতে সাহায্য করে। নালপামারাদি তেলটা মূলত উশিরা, পিপুল, আমলকর মত কিছু উপাদানের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়।
স্মেল, টেক্সচার, কনসিসটেন্সি, কালার
সত্যি কথা বলতে এর স্মেলটা আমার খুব বেশি পছন্দ হয়নি। কিন্তু হার্বাল জিনিসপত্রের স্মেল মনে হয় একটু স্ট্রং-ই হয়। টেক্সচার এবং কনসিসটেন্সি দেখতেই পাচ্ছেন, হালকা থকথকে ধাঁচের। আর রংটা হালকা হলুদ, যেটা আসলে এর মধ্যে থাকা কাঁচা হলুদের কথাই মনে করিয়ে দেয়। ওভারঅল পুরো প্রোডাক্টটা দেখলে আয়ুর্বেদের একটা ফীল আসে।
ব্যবহার করছি যেভাবে
আমি প্রতিদিন সকালে ও রাতে দুইবেলা এটা ব্যবহার করি। পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ভেজা হাতে ফেইসওয়াশ নিয়ে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করি কিছুক্ষণ। তারপর ঠাণ্ডা পানির ঝাপটায় মুখ ধুয়ে ফেলি। হ্যান্ডব্যাগেও আমি ফেইসওয়াশ-টা ক্যারি করি এবং অফিস থেকে কোথাও যাবার হলে ঐটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নেই।
দরদাম
To be honest, এই প্রাইস রেইঞ্জের প্রোডাক্টের কাছ থেকে এরকম পারফরম্যান্স আমি এক্সপেক্ট করি নাই। ৪০ এম.এল.-টা ব্যাগে ক্যারি করি, ঐটার দাম ৯০/-। আর বাসায় যেটা ইউজ করছি, ৮০ এম.এল. এর, ঐটার দাম ১৬০/-।
So, for me, it’s a good deal….
আমার এক্সপেরিয়েন্স
আমার স্কিনের ডালনেস অনেকটাই কমেছে, পিম্পল ওঠাও কমেছে। ওভার অল আমার এক্সপেরিয়েন্স বেশ ভালো। কারণ এই দামে আয়ুর্বেদিক প্রোডাক্ট is a great deal for me। আমি রিপারচেজ করবো। পরবর্তীতে ফেস ক্রিম-টার রিভিউ লিখবো।
আর আমি এটা কিনেছিলাম শপ.সাজগোজ.কম-এর অনলাইনে অর্ডার করে। তাছাড়াও যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার-এ অবস্থিত তাদের ফিজিক্যাল শপ-এও পাবেন।