আচ্ছা মেকাপ এক্সপার্টদের ভিডিও দেখে দেখেই তো মেকাপের হাতে খড়ি আমাদের! তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করেই তো মেকাপে পটু হয়ে ওঠা। কিন্তু এই মেকাপ এক্সপার্ট বা আর্টিস্টদের সম্পর্কে কতটুকুই বা জানি আমরা। কৌতূহল তো থেকেই যায়। এই কৌতূহল কমাতে সাজগোজ তার মেকাপপ্রেমী বন্ধুদের জন্য ফ্রাইডে স্প্যাশাল ইন্টারভিউ হলে কেমন হয় বলো তো? কি নিশ্চয়ই ভালো! আজকে সাজগোজের বন্ধুদের জন্য হাজির করা হল সৌন্দর্যের যাদুতে বিশ্বাসী আনিকা আলমকে। যার লক্ষ্য হলো নারীদেরকে নিজেদের সৌন্দর্য সম্পর্কে উপলব্ধি দেয়া এবং সামান্য মেকাপেই তাদেরকে মোহনীয় করে তোলা। তিনি মেকাপের ক্ষেত্রে কৃত্রিমতা পছন্দ করেন না। ন্যাচারাল বিউটিটাকে অক্ষত রেখে মেকাপের মাধ্যমে নারীর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলাই তার কাজ। সাজগোজের মেকাপপ্রেমী বন্ধুদের জন্য তিনি দিয়েছেন দারুণ কিছু মেকাপ টিপস।
চলুন তাহলে আর সময়ক্ষেপণ না করে প্রথমে জেনে নিই আনিকা আলম সম্পর্কে। লস অ্যাঞ্জেলসের সেফোরা এবং মেকাপ ফরেভারে বেশ কিছু মেকাপের কোর্স করেছেন আনিকা আলম। তিনি এয়ার ব্রাশ মেকাপের উপর একটি ডিপ্লোমাও করেছেন। লাক্সারি ব্র্যান্ডের মেকাপ, এয়ার ব্রাশ মেকাপ এবং প্রি মেকাপ ফেসিয়ালের মাধ্যমে ন্যাচারাল লুকিং, ফ্লোলেস এবং গ্লোয়িং মেকাপ লুকের দিকেই ফোকাস করেন তিনি।তার মতে মেকাপের জন্য খুব রিলাক্সিং এবং লাক্সারিয়াস পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। আর তাই মেকাপের সময়ে স্ট্রেসমুক্ত হয়ে রিলাক্স থাকতে পারবেন আপনি।
নিজেকে মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে গড়ার শুরুটা হয়েছিলো কবে এবং কীভাবে ?
বেশ অনেকদিন ধরেই মেকাপ করছি। কিন্তু এই বছরের মার্চ মাস থেকে কাজটাকে প্রফেশনালি শুরু করেছি । এর আগে আমি লস অ্যাঞ্জেলসে ফ্রি-ল্যান্সার মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছি। আমার কাস্টোমারদের প্রসংসা ও ভালোবাসাই আমাকে এতো দূর নিয়ে এসেছে।
মেকাপে ইন্সপিয়ারেশন কোথায় পান?
মেকাপের লেটেস্ট ট্রেন্ডগুলো আমি সবসময়ে ফলো করি। নিজের মেকাপটা সবসময়ে নিজেই করতে পছন্দ করি আমি। কারণ মেকাপে পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে আমি অন্য কারো উপর বিশ্বাস করতে পারিনা। আমি ইউটিউবে মেকাপ টিউটোরিয়ালের ভিডিওগুলো দেখি বেশ অনেক দিন থেকেই। সেখানে নতুন কিছু ভালো লাগলেই নিজের মেকাপে ট্রাই করি। বেশ কয়েকজন মেকাপ আর্টিস্টের টিউটোরিয়াল থেকে ইন্সপায়ারড হয়েছি আমি যেমন Chloe Morello, Nikki Tutorials, Huda Beauty ইত্যাদি। এছাড়াও লস অ্যাঞ্জেলসে আমি বেশ কিছু মেকাপ ক্লাসও করেছিলাম।
মেকাপ আর্টিস্ট না হলে কী হতেন?
মেকাপ আর্টিস্ট না হলে সম্ভবত আমি একজন ডিপ্লোমেট হতাম। কারণ আন্ডারগ্রাজুয়েশনে পলিটিকেল সাইন্স এবং ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস কোর্সগুলো মেজর ছিলো আমার।
তিনটি জিনিষের নাম বলুন যেগুলো মেকাপ ব্যাগে থাকা উচিত?
লিপস্টিক, লিপস্টিক, লিপস্টিক। ভালোভাবে মেকাপ করতে পারলে পুরো মেকাপটা বাসা থেকেই কমপ্লিট করে বাইরে যেতে পারবেন এবং সারাদিন মেকাপটা ভালোও থাকবে। তাই শুধু লিপস্টিকটাই প্রয়োজন হবে মেকাপ ব্যাগে।
মেকাপের কমন মিস্টেকগুলো কী?
কেকি, ত্বকের রং এর সাথে বেমানান ফাউন্ডেশন এবং আইশ্যাডো ঠিকমতো ব্লেন্ড না করা।
আপনার পছন্দের এবং অপছন্দের দুটি লেটেস্ট মেকাপ ট্রেন্ড সম্পর্কে বলুন।
‘কাট এন্ড ক্রিজ’ আই মেকাপটি খুবই পছন্দ করি। ‘গ্লিটার লিপ্স’ এর ট্রেন্ডটা একদম আনকমফোর্টেবল মনে হয় আমার কাছে। অবশ্য অস্বীকার করা যায় না যে ‘গ্লিটার লিপ্স’ দেখতে বেশ গ্ল্যামারাস লাগে।
আপনার পছন্দের কিছু মেকাপ প্রোডাক্টস সম্পর্কে বলুন।
‘টু ফেসড’ এর ‘বেটার দ্যান সেক্স’ মাশকারাটি আমার খুব পছন্দ। আর লিপস্টিকের ক্ষেত্রে এখন আমার পছন্দের তালিকায় আছে কালারপপের ‘Poppin’ শেডটি। সেই সঙ্গে ‘দ্যা বাম’ এর লুম্যানাইজার ছাড়াতো মেকাপটাই অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।
ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটা ছিলো?
নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখার অভ্যাস আছে আমার। খুব বেশি আলোচিত হওয়াটা আমার কাছে কখনোই স্বাচ্ছন্দ্যের মনে হতো না। আর তাই নিজেকে এবং নিজের কাজগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে শেয়ার করাটা আমার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিলো। আমি এখনও এই চ্যালেঞ্জটার সাথে নিজেকে অভ্যস্ত করে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
যারা মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইছে তাদের ব্যাপারে কি পরামর্শ দিবেন?
আপনি যদি মনে করেন যে আপনি ভালো মেকাপ করতে পারেন এবং কাজটা উপভোগ করেন তাহলে অবশ্যই এই পেশাটি বেছে নেয়া উচিত। তবে আপনার কাজটা অন্য সবার চাইতে একটু আলাদা হতে হবে।
আপনার কাছে মেকাপ করতে চাইলে কীভাবে যোগাযোগ করতে হবে?
আমাকে ফোন করলেই হবে। কিংবা আমার ফেসবুকের পেজে ম্যাসেজও করতে পারেন চাইলে। আমার ফেসবুক পেজের লিংকটা হলো- https://www.facebook.com/AniqaAlamMUA/
ক্যারিয়ার এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে আর কিছু?
আমি সব সময়ে ছোট্ট একটা কথায় বিশ্বাস করি। আর তা হলো আপনি যদি আপনার স্বপ্নগুলোকে অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে থাকেন তবে অবশ্যই আপনি একদিন বিশ্বটাকে জয় করতে পারবেন।
সাজগোজের পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ।
সাজগোজকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।