আর্দ্র ত্বক, অর্থাৎ ময়েশ্চারাইজড স্কিন হলো স্কিন কেয়ার রুটিনের একেবারে গোড়ার কথা। যখন ত্বক ভেতর থেকেই তৃষিত আছে, উপরের শুষ্ক স্তরে হাজারটা প্রোডাক্টের ব্যবহার ত্বকের ক্ষয় পূরণ করবে না। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে নিবিড় যত্ন চাই, আর সেটা ঋতুভেদে নয়, চাই সবসময়। ময়েশ্চাইজিং সম্পর্কে কতটা জানেন আপনি, কিংবা জানা দরকার কতটা, সেসবের ধারণা নিয়েই সাজানো এই লেখা।
কখন হবে ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার?
এই নিয়মটা জানা আছে ত্বক সচেতন অনেকেরই। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত আধাভেজা ত্বকে। শাওয়ার নেয়ার পর গা পুরোপুরি না মুছে তাতে যদি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যায়, সবচেয়ে ভালো ফল আশা করা সম্ভব। গোসলের সময় ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারাতে থাকে, তাই ওই সময় বাড়তি ময়েশ্চার প্রয়োজন হয় বেশি।
পানির চাহিদা মেটানো চাই
মানবদেহের কত ভাগ পানি, সাধারণ জ্ঞানের এই প্রশ্নের উত্তর মনে আছে তো? যে শরীরের বেশটা জুড়েই পানি রয়েছে, তাতে পানিশূন্যতা এলে অসুস্থতাও আসবে। পানিশূন্য শরীর মলিন ত্বকের বড় একটা কারণ। শরীর কিন্তু প্রতিনিয়ত পানি হারায়, এবং পানি সংগ্রহ করে রাখার ব্যবস্থা তার নেই। কাজেই পানির চাহিদা পূরণ করুন বারবার। প্রতিদিন অন্তত আট/দশ গ্লাস পানি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দেহের স্বাভাবিক চাহিদা, আর সম্ভব হলে তার চেয়ে কিছুটা বেশি পানি গ্রহণ করা ভালো।
[picture]
চোখের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে আই ক্রিম
আই ক্রিম খুব বেশি পরিচিত নাম নয় বেশিরভাগ মানুষের স্কিন কেয়ার রুটিনে। তবে আই ক্রিমের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ বটে। কেননা চোখের নিচের সংবেদী ত্বক কিছু অপরিহার্য তেল নিঃসরণ করে যা ত্বকতে কোমল রাখে। ক্যাফেইনযুক্ত সামগ্রী চোখের নিচের ত্বকে ব্যবহার করা যায়, যেমন টি-ট্রি অয়েল কিংবা কফির নির্যাস সমৃদ্ধ ক্রিম বা লোশন।
ঘুমের আগে চাই ময়েশ্চারাইজার
রাতে বিছানায় যাবার আগে ত্বককে তার খাবার দিয়ে তো ঘুম দিন। ময়েশ্চার আপনার ত্বকের খাদ্য, যেটা রাতের বেলা ভীষণ উপকারী। হাত-পায়ে লোশন দিলে নরম মোজা ব্যবহার করা যায় ঘুমের সময়।
আমন্ড তেলের জাদু
শোবার আগে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধে এক/দুই চা-চামচ আমন্ড তেল মিশিয়ে পান করুন নিয়মিত। এটি জাদুর মতোই কাজ করে ত্বককে ভেতর থেকে আর্দ্রতা ও পুষ্টি জোগান দিতে। তবে সেটা হতে হবে ১০০% খাঁটি।
ত্বকের বন্ধু বেবি লোশন
বাজারে যেসব ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায় বড়দের জন্য তাতে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে, বলাই বাহুল্য সেসব উপাদান ত্বকের মোটেও ভালো করবে না। তাই আস্থা রাখুন বেবি লোশনে। তবে কিছু বেবি লোশন বড়দের ত্বকের জন্য উপকারী নয়, যেগুলোয় প্যারাবেন এবং তেল রয়েছে। জনসন এমন একটি বেবি লোশন। ত্বক সংবেদনশীল হলে এমন প্রোডাক্ট ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এমন বেবি লোশন বেছে নেয়া ভালো যাতে এইসব উপাদান নেই।
নারকেল তেল, ভিটামিন ই আর ল্যাভেন্ডার অয়েল
যেকোন ধরণের ত্বকেই নারকেল তেল উপকারী ভূমিকা রাখে। ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষায় এই তেল ভীষণ কার্যকর। ভিটামিন ই এবং ল্যাভেন্ডার তেলও ত্বকের ভালো বন্ধু। এই তিন উপাদানের মিশ্রণে এমন একটি সামগ্রী বানিয়ে নিতে পারেন যা আপনার ত্বকে পুষ্টি জোগানো এবং ক্ষয়পূরণ করার কাজ বেশ ভালোভাবে করবে।
ছবি – হেলথ ডট স্টাফসওয়ার্ক ডট কম, সাটারস্টক
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব