আজ আমাদের ত্বকের একটি গ্রোথ নিয়ে লিখব আর সেটা হলো- ত্বকে আচিল বা মোল সমস্যা। আমাদের অনেকের ত্বকেই মোল দেখা যায়। মোল সাধারণভাবে তেমন ক্ষতিকর নয়। তবু কখনো কখনো মোল থেকে ক্যান্সার হতে পারে। এজন্য ত্বক এই মোল অপসারন করা প্রয়োজন। অনেকে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য মোল অপসারণ করে থাকেন। চলুন জেনে নেই কী এই মোল, আচিল কেন হয় আর কিভাবেই বা এটি দূর করা যায়!
ত্বকে আচিল বা মোল নিয়ে যত কথা
ত্বকে আচিল বা মোল কী?
মোল এক ধরণের স্কিন গ্রোথ। এটি বাদামি বা কালো রঙের হতে পারে। ত্বকের যেকোন অংশেই হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই একটি অথবা গ্রুপ আকারে হয়। সাধারণত শিশুকালে-এর উৎপত্তি, তবে ৪০ বছরের আগে যেকোন সময়েই হতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মোল-ও পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। যেমন – রঙের পরিবর্তন, আকৃতির পরিবর্তন, ত্বক থেকে উঁচু হয়ে যাওয়া, লোম জন্মানো ইত্যাদি। কিছু কিছু মোলের পরিবর্তন হয় না, আবার কিছু কিছু মিলিয়ে যেতে পারে ত্বকের সাথে।
মোল কেন হয়?
আমাদের ত্বকের এক ধরনের কোষের নাম মেলানোসাইট। এই কোষগুলো পিগমেন্ট বা রঞ্জক পদার্থের জন্য দায়ী। এ কারণেই আমাদের একেক জনের ত্বকের রং একেক রকম। বেড়ে উঠার সময় এই কোষগুলো ত্বকের সব জায়গায় সমানভাবেই বৃদ্ধি পায়। কিন্তু যখন সমানভাবে না হয়ে কোন একটি নির্দিষ্ট জায়াগায় গুচ্ছাকারে বৃদ্ধি পায়, তখনই মোলের জন্ম হয়।
কিভাবে বুঝবেন মোল টি ক্যান্সার কিনা?
মোল সাধারণভাবে ক্যান্সার নয়। তেমন কোন ক্ষতি-ও করে না, সৌন্দর্যের ব্যাপারটি ছাড়া। তবু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার হতে পারে। যেমন- যদি দেখেন আপনার মোলটি ৩০ বছরের পর আবির্ভূত হয়েছে অথবা মোল-এর রং, আকার-আকৃতি, উচ্চতায় পরিবর্তন হয়েছে, মোল থেকে রক্তপাত হচ্ছে, ব্যথা বা চুলকানি হচ্ছে তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং পরীক্ষা করান।
মোল বা আচিল বা তিল দূর করার উপায়
১. সার্জিক্যাল উপায়
চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে মোল বা আচিল বা তিল দূর করা হয়। এটাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।
২. অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
বাড়িতে বসে মোল দূর করতে পারেন। এক টুকরো তুলায় অ্যাপল সাইডার ভিনেগার নিয়ে মোলের উপর রেখে ব্যান্ডেজ করে রাখুন। এভাবে প্রায় ১ ঘণ্টার মতো রাখতে হবে। প্রতিদিন ব্যবহার করুন যতদিন না মোল দূর হয়।
৩. ৫% আয়োডিন
সকালে এবং রাতে এক ফোটা করে ৫% আয়োডিন লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখুন। ১ সপ্তাহের মধ্যেই মোল উঠে আসবে।
৪. রসুন
আধা কোয়া রসুন মোলের উপর রেখে সারারাত ব্যান্ডেজ করে রাখুন। কিছুদিন পর মোল রিমুভ হবে।
৫. কলার খোসা
কলার খোসার ভেতরের অংশ মোলের উপর রাখুন। নিয়মিত ব্যবহারে মোল শুকিয়ে পড়ে যাবে।
৬. বেকিং সোডা আর ক্যাস্টর অয়েল
এক চিমটি বেকিং সোডার সাথে কয়েক ফোটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মোলের উপর সারারাত রাখুন। কিছুদিন ব্যবহারে মোল দূর হবে। তবে যাদের সেনসিটিভ স্কিন তাদের বেকিং সোডা ব্যবহার না করাই উত্তম।
৭. স্ট্রবেরি
মোল বা আচিলের উপর স্ট্রবেরি কেটে লাগিয়ে রাখুন। কিছুদিন ব্যবহারে মোল মিলিয়ে যাবে।
৮. আঙ্গুরের রস
কিছু আঙ্গুর নিয়ে রস করে মোলের উপর লাগান প্রতিদিন, কয়েকবার করে। এটা কিছুটা সময় সাপেক্ষ। কিন্তু নিয়মিত ব্যবহারে মোল থেকে মুক্তি পাবেন।
কিছু টিপস এবং সতর্কতা
১. যেকোন একটি উপায় মেনে এক সপ্তাহ দেখুন। যদি এর মধ্যে মোল অপসারণ না হয়, তবে অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করুন। কেননা ব্যক্তিভেদে পদ্ধতি পার্থক্যের সৃষ্টি করে। আপনার সাথে মানিয়ে যায়, এমন পদ্ধতি বাছাই করে নিন।
২. একটু সময় লাগলেও ধৈর্য্য ধরে চর্চা করুন।
৩. পটাশিয়াম খুব ভালো কাজ করে। উপরের পদ্ধতিগুলোর অধিকাংশই পটাশিয়াম সমৃদ্ধ।
৪. মোল কখনই খোঁচাখুঁচি করবেন না। এতে রক্তপাত হবে এবং পুনরায় ওই স্থানে মোল হবে।
৫. সার্জিক্যালি করতে গেলে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই করুন।
মোল বা তিল বা আচিল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে, যদি রিমুভ করতে চান সেক্ষেত্রে ঘরে বসেই করতে পারেন আবার চিকিৎসকের পরামর্শও নিতে পারেন। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই এক্ষেত্রে ভালো। যদি ক্যান্সারের লক্ষণ বলে মনে করেন, তবে শীঘ্রই চিকিৎসকের সাহায্য গ্রহণ করুন।
আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো প্রোডাক্ট কিনতে পারেন অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে। আবার যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার এ অবস্থিত সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ থেকেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি!
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ, সাটারস্টক