কম বেশি আমরা সবাই ডিফারেন্ট টাইপের মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে পছন্দ করি। আমরা চাই আমাদের মেকআপ লুকটা এমন হোক যেন আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজেকে সবচেয়ে সুন্দর মনে হয়! কিন্তু মাঝে মধ্যে মেকআপ করার সময় এমন কিছু মিসটেক বা ভুল হয় যেগুলোর কারণে আমাদের ওভারঅল লুকটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনটা যেন না হয় সেজন্য আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কয়েকটি ইজি হ্যাকস যা দিয়ে ৫টি কমন মেকআপ মিসটেকস অল্প সময়েই ফিক্স করা সম্ভব।
৫টি মেকআপ মিসটেকস ও তার সল্যুশন
১) অতিরিক্ত মেকআপ প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করা
বলুন তো মেকআপের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আনওয়ান্টেড বিষয় কোনটা? কেকি মেকআপ, তাই না? অনেকেই আছেন যারা ফাউন্ডেশন কিংবা কনসিলার অ্যাপ্লাই করার সময় একবারে অনেকখানি প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করে ফেলেন। পরবর্তীতে দেখা যায় এই প্রোডাক্টগুলো ফেইসে প্রোপারলি ব্লেন্ড হচ্ছে না এবং খুব দ্রুত কেকি হয়ে যাচ্ছে।
শুধুমাত্র ফাউন্ডেশন কিংবা কনসিলারই বা বলছি কেন, অনেকে কনট্যুর পাউডার, ব্লাশ কিংবা হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করার সময়ও হেভি হ্যান্ডেড হয়ে একবারেই অনেকটা প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করে ফেলেন৷ পরে এগুলো ব্লেন্ড হতে চায় না এবং ফেইস প্যাচি দেখায়।
কীভাবে ফিক্স করবেন?
যদি ফেইসে অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন কিংবা কনসিলার অ্যাপ্লাই করে ফেলেন, তাহলে যে এরিয়াটা কেকি মনে হচ্ছে সেখানে শুরুতেই একটা ব্লটিং পেপার হালকা করে প্রেস করুন৷ এতে এক্সট্রা অয়েল ব্লটিং পেপার অ্যাবজর্ব করে নিবে। আর ফেইসের কেকিনেস ইনস্ট্যান্টলি কমে যাবে। যদি হাতের কাছে ব্লটিং পেপার না থাকে, তাহলে যেকোনো ভালো কোয়ালিটির ফেইস মিস্ট অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এতেও কিন্তু কেকিনেস কমে যায়। অন্যদিকে যদি ফেইসে অতিরিক্ত ব্লাশ, কনট্যুর পাউডার কিংবা হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করেন, তাহলে একটা ব্রাশে কিছুটা লুজ পাউডার নিয়ে সেই এরিয়াতে হালকা হাতে অ্যাপ্লাই করে নিন। তাহলেই দেখতে পাবেন প্যাচিনেস কমে গেছে!
২) ড্রামাটিকভাবে আইব্রো ড্র করা
সঠিকভাবে আইব্রো ড্র করার উপর আমাদের মেকআপ লুক কেমন হবে তা অনেকটাই ডিপেন্ড করে। অনেকেই রয়েছেন যারা নিজেদের ন্যাচারাল আইব্রো শেইপ ঠিক না রেখে পেন্সিল কিংবা আইব্রো পমেড দিয়ে ড্রামাটিকভাবে নিজেদের আইব্রো ড্র করেন। এতে দেখা যায় মেকআপ লুকের সাথে আইব্রো ম্যাচ হচ্ছে না এবং এটা দেখতেও আন ন্যাচারাল লাগে।
কীভাবে ফিক্স করবেন?
শুরুতেই একটা পরিষ্কার স্পুলি নিন। এবার স্পুলির সাহায্যে আইব্রোর হেয়ার একবার উপরের দিকে এবং পরেরবার নিচের দিকে ব্রাশ করুন। এভাবে ব্রাশ করলে আইব্রোতে অ্যাপ্লাই করা পেন্সিল কিংবা পমেডের পিগমেন্ট ইভেনলি আইব্রোতে ডিসট্রিবিউট হয়ে যাবে এবং এতে আইব্রোর এক্সট্রা ড্রামাটিক ভাবটাও ফিক্স হয়ে যাবে সাথে সাথে।
৩) আইশ্যাডো ফল আউট হওয়া
অনেক সময় আইশ্যাডো অ্যাপ্লাই কিংবা ব্লেন্ড করার সময় আমাদের চোখের নিচে কিংবা গালে আইশ্যাডো ফল আউট হতে দেখা যায়। বিশেষ করে যদি বেইজ মেকআপ আই মেকআপের আগে করা হয়, তাহলে এই ফল আউটের কারণে বেইজ মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পসিবিলিটি থাকে।
কীভাবে ফিক্স করবেন?
সামান্য স্কচটেপ ছিঁড়ে নিয়ে সেটা রোল করে নিন। এমনভাবে রোল করুন যাতে রোলের মাঝখানে নিজের আঙুল ঢোকানোর জায়গা থাকে। তারপর সেই রোলটা হাতের উপরে দু’বার রাব করে নিন, যাতে স্কচটেপের আঠা কিছুটা কমে যায়। তারপর যেখানে আইশ্যাডো ফল আউট হয়েছে, সেখানে খুব সাবধানে সেই রোল করা স্কচটেপটা ড্যাব করতে থাকুন। এভাবে ড্যাব করলে যেকোনো ফর্মুলার আইশ্যাডো ফেইস থেকে উঠে আসবে এবং বেইজ মেকআপও নষ্ট হবে না। তারপর লুজ পাউডার দিয়ে সেই এরিয়াটা আবার সেট করে নিন।
৪) মাশকারা ছড়িয়ে যাওয়া
অনেক সময় মাশকারা অ্যাপ্লাই করার পর দেখা যায় সেটা আইলিডে কিংবা চোখের নিচের এরিয়াতে ছড়িয়ে গেছে। এতে আই মেকআপ লুক দেখতে আর ফ্ললেস লাগে না। খুবই স্বাভাবিক! বিগেইনারদের ক্ষেত্রে এই ভুলটা খুবই কমন।
কীভাবে ফিক্স করবেন?
মাশকারা ছড়িয়ে পড়লে তা ফিক্স করা খুবই সহজ। প্রথমে একটা কটনবাডে অল্প একটু মেকআপ রিমুভার কিংবা মাইসেলার ওয়াটার নিয়ে নিন। তারপর যেখানে যেখানে মাশকারা ছড়িয়ে গেছে সে এরিয়া কটনবাড দিয়ে ক্লিন করতে থাকুন। আস্তে আস্তে সময় নিয়ে কাজটা করুন। এরপর দরকার হলে আইলিডে আইশ্যাডো আরেকটু ব্লেন্ড করে আই মেকআপ লুক ফিক্স করতে পারেন।
৫) লিপস্টিক ছড়িয়ে পড়া
মেকআপের একদম লাস্ট স্টেপে লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করা হয়। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় তারা লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করতে গেলে সেটা তাদের ঠোঁটের এরিয়ার বাইরে ছড়িয়ে যায়। আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, এমন হলে সেটা পুরো মেকআপ লুকটাকেই নষ্ট করে দিতে পারে, তাই না? খুব সহজেই কিন্তু এই সমস্যাটি ফিক্স করা যায়।
কীভাবে ফিক্স করবেন?
প্রথমে একটা চিকন ও পরিষ্কার লিপ লাইনার ব্রাশে আপনার স্কিন শেইডের সাথে মিলিয়ে কনসিলার নিন। তারপর যেখানে লিপস্টিক ছড়িয়ে গেছে খুব কেয়ারফুলি সেখানে অ্যাপ্লাই করে ব্লেন্ড করে নিন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ফুল কভারেজ কনসিলার ব্যবহার করতে হবে।
৫টি কমন মেকআপ মিসটেকস ও এগুলোর ইনস্ট্যান্ট সল্যুশন জানা হলো। এভাবে আপনারা মেকআপ মিসটেকগুলো খুব সহজেই ফিক্স করে নিতে পারবেন। অনেকে মনে করেন মেকআপ করলে স্কিন ড্যামেজ হয়ে যায়। এটা কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল ধারণা! যদি আপনি ভালো কোয়ালিটির মেকআপ প্রোডাক্টস ইউজ করেন, তাহলে সেগুলো রেগুলার ইউজ করলেও আপনার স্কিনের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে দিনশেষে ডাবল ক্লেনজিং করতে ও স্কিনের যত্ন নিতে ভুলবেন না।
বেস্ট ডিলে দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেকআপ, স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টস পেয়ে যাবেন সাজগোজে। তাই ভিজিট করতে পারেন সাজগোজের অ্যাপ, ওয়েবসাইট কিংবা ফিজিক্যাল স্টোরে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ