পিতা-পুত্রের বিরোধ প্রতিকারে মায়ের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?

পিতা-পুত্রের বিরোধ প্রতিকারে মায়ের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?

পিতা-পুত্রের বিরোধ দেখা দিয়েছে

ঘড়ির কাঁটা রাত ১০:৩০ পেড়োলো! মাধ্যমিক কিংবা সদ্য উচ্চ মাধ্যমিকে পা দেয়া ছেলের জন্য গম্ভীর মুখে রাতের খাবার না খেয়ে বাড়ির প্রবেশ পথে পায়চারি করতে থাকে অপেক্ষারত বাবা। ছেলে দরজায় পা দিল। ধীরে ধীরে শুরু হলো বাবা আর ছেলের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক! তখন এমন দূরহ পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিবেন মা, তা যেন মাথায় আর কাজ করে না। দ্বিধাদ্বন্দ্বে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়।

পিতা-পুত্রের বিরোধ কাহিনী

প্রায় প্রতিদিনই পিতা-পুত্রের বিরোধ কাহিনী ঘটে। ছেলে ঘরে ঢোকা মাত্রই শুরু হয়ে যায় তুমুল অশান্তি। এই বয়সে বাড়ির নিয়ম কানুন না মেনে এত রাত অবধি ছেলের বাড়ির বাইরে প্রত্যহ আড্ডা দেয়াটা মেনে নেয়া যায় না। অথবা রাত ২টা পেড়িয়ে যায়, ৩টা বা কখনো সারা রাত কম্পিউটারে গেমস খেলা, দিনের সকল কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটা, অমনোযোগিতা, এমনকি স্কুল-কলেজে যেতেও অনাগ্রহ প্রকাশ করা… এসব তো আছেই। ফল স্বরুপ যা হয় আর কি! বাবা-ছেলের চিৎকার চেঁচামেচি পাড়া-পড়শির ঘুমতো যায়ই, সেই সঙ্গে পিতা ও পুত্রের রাগ করে নাওয়া-খাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া ভাংচুরতো আছেই। দুজনেই দোষারোপ করছে সংসারের হাল ধরা সেই “মা বা স্ত্রী“ নামক সত্তাটিকে, যিনি  প্রতিটি সম্পর্কের বিনি সুতো। সংসারের দুই পুরুষের যত গর্জন তর্জন সব সইতে হয় মা-কে। মা হিসেবে এমন পরিস্থিতে আপনার কী করণীয়?

Sale • Bath Time, Baby Care, Feminine Cleanser

    পিতা-পুত্রের বিরোধ রোধে মায়ের যেমন পদক্ষেপ নেয়া উচিত

    ১) ধৈর্য ধরুন

    যখন বাবা ও ছেলের মাঝে সব রকম বোঝাপড়ার সম্পর্ক ভেঙ্গে যায় এবং একটু একটু করে তাদের মধ্যে একটা কাঁচের দেয়াল তৈরি হয়, তখন প্রথমে নিজে শান্ত হন এবং ধৈর্য ধরুন। আপনিই পারবেন এই ঘৃণা, অবিশ্বাস ও অভিমানের কাঁচের দেয়াল ভাঙতে। সব সমস্যার যেমন সূচনা আছে তেমন তা সমাধানের পথও আছে। ভাবতে চেষ্টা করুন কোন অন্ধকার জগতে তলিয়ে যায় নি আপনার সংসার। আপনিই পারবেন বাবা ও ছেলের মধ্যে এমন তিক্ততাকে মুছে দিয়ে সম্পর্কটাকে আবারও সুন্দর করে তুলতে। এই পরিস্থিতি থেকে নিস্তার পেতে প্রয়োজন আপনার আত্মবিশ্বাস ও দুই পুরুষের ওপর আপনার প্রভাব।

    ২) নিরপেক্ষভাবে বোঝান

    স্বাভাবিক এবং নিরপেক্ষভাবে দুই জনকে বোঝাবার চেষ্টা করুন। এমনও হতে পারে দু’জনের প্রত্যেকেই ভাবতে পারে যে আপনি তার প্রতিপক্ষ দলের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন। তবুও লেগে থাকুন যত কষ্ট হোক।  যে কোন একজন যখন একা থাকবে, ভালো মুডে থাকবে, তখন প্রসঙ্গটি ধীরে-সুস্থে সুন্দরভাবে তুলুন ও বোঝানোর চেষ্টা করুন। কী কথা বলবেন, কিভাবে বলবেন তা আগেই গুছিয়ে নিন মাথার ভেতর একদিনে সব ঠিক হয়ে যাবে না। আপনাকে আস্তে আস্তে পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সতর্ক থাকুন যাকে বোঝাবেন সে যেন কোনভাবেই বুঝতে না পারে অন্যজনের প্রতিও আপনার কোন পক্ষপাত আছে।

    ৩) যার যার ভুল ধরিয়ে দিন

    শুরু থেকেই কোন মনোমালিন্যের আঁচ পেলে, সতর্কতার সাথে এবং দৃঢ়ভাবে তা নির্মূল করার চেষ্টা করুন। নয়তো তর্কের হুঙ্কার শুনে সব কাজ ফেলে দৌড়ে ছোটার দিন ফুরোবে না কোনদিন। উল্টো জীবন বিষিয়ে যাবে দুই পুরুষের চাপে। মনে রাখবেন, স্বামীর প্রতি আপনার কোন কারণে রাগ, ক্ষোভ বা অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু তার বহিঃপ্রকাশ যেন সন্তানের সামনে না হয়। যদি তার বহিঃপ্রকাশ ক্রমাগত ছেলের সামনে হতে থাকে তাহলে কিন্তু আপনি নিজের অজান্তেই ছেলের মনে একটা ঘৃণা কিংবা অপছন্দের জন্ম দিয়ে ফেলছেন নিজের জন্য। আবার উল্টো যদি বাবার কাছে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ছেলের ভুলগুলো তুলে ধরেন, তবে ছেলের প্রতিও কিন্তু বাবাকে বিষিয়ে তুলছেন আপনি নিজের অজান্তেই।

    মনে রাখবেন, মা বা স্ত্রী হবার আগে আপনি একজন নারী। এটিই আপনার মূল সত্তা। নারী মমতাময়ী, নারী ধীর-স্থির ও সহিষ্ণু। নারীর বুদ্ধির দীপ্তিময়তায় সব অন্ধকারকে জয় করতে পারে কেবল একজন নারীই। আপনার নারী সত্তাই পারবে প্রভাত আলোর হাস্যজ্জ্বল ছটায় সংসারের সব সম্পর্ককে নিবিড় ডোরে বেঁধে রাখতে। সকলকে আগলে সংসারকে মজবুতভাবে টিকিয়ে রাখতে মায়ের মতো জাদুকর আর কোথায় আছে বলুন!

     

    ছবি- সাটারস্টক

    4 I like it
    3 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort