রূপচর্চায় মুলতানি মাটির ব্যবহার সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি মা, দাদিরা রূপচর্চায় মুলতানি মাটি ব্যবহার করতেন। আমরা নিজেরাও অনেকে মুলতানি মাটির ফেইস প্যাক ইউজ করেছি। কিন্তু স্কিনকে ডিপলি ক্লিন করা ছাড়াও মুলতানি মাটির যে আরও বেনিফিটস আছে, তা কি আমরা জানি? পোর মিনিমাইজ করতে ও একনে কন্ট্রোলে এই ক্লে দারুণ কার্যকরী! স্কিন কনসার্ন অনুযায়ী মুলতানি মাটির ৪টি ডিফারেন্ট ফেইস মাস্ক নিয়ে আজকের ফিচার।
মুলতানি মাটি
ফুলার’স আর্থ বা মুলতানি মাটি এমন একটি ন্যাচারাল ক্লে মাস্ক যা খুব সহজে স্কিনে অ্যাবজর্ব হয়ে স্কিনকে ডিপলি ক্লিন করতে সাহায্য করে। সেই সাথে স্কিনের ডার্ক স্পট ও হাইপারপিগমেন্টেশন রিডিউস করে। এটি সব ধরনের স্কিনেই স্যুট করে। মুলতানি মাটি ভারতের ‘মুলতান’ নামের একটি শহরে প্রথম পাওয়া যায়। মুলতানি মাটির ক্লেনজিং প্রোপারটিজ ও নানা রকম বেনিফিটসের জন্য আস্তে আস্তে স্কিনকেয়ারে এর জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে যায়। প্রাচীন ভারতের এই রূপচর্চার সামগ্রী এখন সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়।
কী কী বেনিফিটস আছে এই ক্লে মাস্কের?
- এটি স্কিনের ভেতর থেকে এক্সেস অয়েল, ইমপিওরিটিস বের করে স্কিনকে ডিপলি ক্লিন করে
- স্কিনকে জেন্টলি এক্সফোলিয়েট করে
- ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস দূর করে স্কিনে ন্যাচারাল হেলদি গ্লো দেয়
- স্কিনটোন ইমপ্রুভ করে
- ওপেন পোরস মিনিমাইজ করতে বেশ হেল্পফুল
- একনে কন্ট্রোল করতেও দারুণ কার্যকরী
মুলতানি মাটির ৪টি অ্যামেজিং ফেইস মাস্ক
১) ডিপ ক্লেনজিং
আপনার স্কিন টাইপ যদি অয়েলি হয়ে থাকে, তাহলে ১ চা চামচ মুলতানি মাটির সাথে পরিমাণমতো রোজ ওয়াটার মিক্স করে স্মুথ পেস্ট বানিয়ে ফেইসে লাগিয়ে রাখুন। হালকা শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই ফেইস মাস্ক ব্যবহার করলে স্কিনের অয়েলিনেস কমবে এবং পি এইচ লেভেল ব্যালেন্সড থাকবে। রোজ ওয়াটার স্কিনে সুদিং ফিল দেয়, সেই সাথে ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।
আর আপনার স্কিন যদি ড্রাই হয় তাহলে ১ চা চামচ মুলতানি মাটির সাথে পরিমাণমতো দুধ মিশিয়ে নিন। স্মুথ পেস্ট বানিয়ে ফেইসে ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করে নিন। ফেইস মাস্ক লাগিয়ে অপেক্ষা করুন কিছুক্ষণ। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ফেইস ক্লিন করে ফেলুন। দুধে প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটিক অ্যাসিড ও ভিটামিন ই থাকার কারণে এই মাস্কটি ড্রাইনেস কমিয়ে স্কিনে হাইড্রেশন প্রোভাইড করবে।
২) একনে কেয়ার ট্রিটমেন্ট
১ চা চামচ মুলতানি মাটির সাথে অ্যালোভেরা জেল আর মধু মিশিয়ে ফেইসে ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করে নিন। এরপর শুকিয়ে গেলে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহারে একনের সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে। অ্যালোভেরাতে আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপারটিজ যা একনে ও একনে কজিং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে ফাইট করে। মধুতে পেপটাইড আছে যা একনে কমাতে দারুণ কাজ করে। এই ফেইস মাস্ক ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস এর সল্যুশনেও খুবই হেল্পফুল।
৩) স্কিন ব্রাইটেনিং ট্রিটমেন্ট
ব্রাইট স্কিন পেতে মুলতানি মাটির সাথে মধু ও আলুর রস ভালোভাবে মিক্স করে ব্যবহার করতে পারেন। এবার মাস্ক পুরো ফেইসে লাগিয়ে অপেক্ষা করতে হবে ১০-১৫ মিনিট। এরপর নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আলুর ন্যাচারাল ব্লিচিং প্রোপারটিজ স্কিন লাইটেনিংয়ে হেল্প করে। এছাড়াও আলুতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও রিবোফ্লাভিন, যা ব্রাইটেনিং এর পাশাপাশি পোরস টাইট করে অ্যান্টি এজিং বেনিফিটস প্রোভাইড করে।
৪) পোর মিনিমাইজ করতে মুলতানি মাটি
ওপেন পোরস নিয়ে দুশ্চিন্তা? তাহলে মুলতানি মাটি হতে পারে আপনার হলি গ্রেইল ফেইস মাস্ক! পোর মিনিমাইজ করতে মুলতানি মাটি রোজ ওয়াটার অথবা শুধুমাত্র পানি দিয়েও মিক্স করে ফেইসে অ্যাপ্লাই করতে পারেন। শুকিয়ে গেলে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করলে পার্থক্যটা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। এই ফেইস মাস্কগুলো টিনেজ থেকে শুরু করে সবাই ব্যবহার করতে পারেন।
পোর মিনিমাইজ করতে, একনে কন্ট্রোলে ও ডিপ ক্লেনজিংয়ে মুলতানি মাটি কতটা বেনিফিসিয়াল সেটা জেনে নিলেন। তাহলে আজই স্কিনকেয়ারে অ্যাড করে নিন! বিশেষ করে যাদের স্কিন অয়েলি ও একনে প্রন, তাদের জন্য মুলতানি মাটি দারুণ কার্যকরী। সাজগোজে পেয়ে যাবেন ডিফারেন্ট ব্র্যান্ডের মুলতানি মাটি। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ