পোলাও-রোস্ট নামটা শুনলে উৎসব উৎসব আমেজটা এসেই যায়। পোলাও-এর সাথে আমরা যে কোন মাংসের রোস্ট খেয়ে থাকি। আজকে আমরা দেখবো কিভাবে খাসীর পায়ার রোস্ট বানাতে হয়। এই রোস্ট বানাতে কী কী উপকরণ লাগবে তা দেখে নেই চলুন।
[picture]
রোস্টের মশলার উপকরণ
- ছোট এলাচ- ৫ টি
- বড় এলাচ- ২ টি
- তেজপাতা- ২ টি
- দারুচিনি- ২ টুকরো
- লং- ১০ টি
- গোলমরিচ- আধা চা চামচ
- কাবাব চিনি- আধা চা চামচ
- জিরা- ১ চা চামচ
- মৌরি- ১ চা চামচ
- শাহী জিরা- আধা চা চামচ
- ধনে- ১ টেবিল চামচ
- জয়ফল- ১ টি
- জয়ত্রি- ২ গ্রাম(আনুমানিক)
রোস্ট রান্নার উপকরণ
- খাসীর রান- ১ কেজি ওজনের
- ঘি- ১ কাপ
- দই- ১/২ কাপ
- পেপের চামড়া সহ বাটা- ২ টেবিল চামচ
- শুকনো মরিচের গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ
- হলুদ গুঁড়ো- ১ চিমটি
- লবণ- ১ চা চামচ
- আদা বাটা- ১ চা চামচ
- রসুন বাটা- ১ চা চামচ
- দুধ ভালো করে জ্বাল দেয়া- ০.৫ কাপ
- কাঠবাদাম বাটা- ১ টেবিল চামচ
- পেয়াজ কুঁচি- ১ কাপ
- পোস্ত বাটা- ১ টেবিল চামচ
- আলু বোখারা- ৪ টি
- কিশমিশ- ১ টেবিল চামচ
- কেওড়ার জল- ১ টেবিল চামচ
- গোলাপ জল- ১ টেবিল চামচ
প্রণালী
– একটি প্যান নিয়ে তা খুব ভালো করে গরম করে সব মশলাগুলো একসাথে দিয়ে চুলো বন্ধ করে নাড়তে হবে। চুলো বন্ধ করার কারণ হল, চুলো জ্বালিয়ে রাখলে মশলাগুলো পুড়ে যাবে এবং পরে পুরো রোস্টটাই তিতা লাগবে। মশলাগুলো হয়ে এসেছে কিনা তা বুঝবেন যখন তা খুব সুন্দর গন্ধ ছড়াবে আর অল্প সোনালী বর্ণ ধারন করবে। এবার মশলা নামিয়ে গরম অবস্থাতেই একটি মিক্সারে নিয়ে সব একসাথে গ্রাইন্ড করে নিতে হবে।
– এবার খাসীর রানটি নিয়ে ছুরি দিয়ে রানের মাঝে মাঝে খুব গভীর ভাবে চিরে দিতে হবে যাতে মশলা খুব ভালোভাবে ভিতরে ঢুকে।
– ম্যারিনেশনের জন্য এবার চলে যাই। একটি বাটিতে টক দই, পেপে বাটা, আদা-রসুন বাটা, হলুদ বাটা, লাল মরিচ গুঁড়ো, লবণ ও যে মশলাটা করে নিয়েছেন তা থেকে ১ টেবিল চামচ পরিমান মশলা দিয়ে দিয়ে দিন। তারপর সব একশাথে মাখিয়ে নিন। এবার মিক্সচারটি ভালোভাবে মাংসের গায়ে লাগান, খেয়াল রাখুন যাতে কাটা যায়গার ভেতরেও খুব ভালোমত মশলা ঢুকে। এবার এটিকে একটি প্লাস্টিক র্যাপ শিট দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে দিন। তারপর এটিকে ফ্রিজে রেখে দিন।
– এবার একটি প্যানে এক কাপ ঘি খুব ভালো করে গরম করে তাতে পেয়াজ কুঁচি ঢেলে দিন। পেয়াজটা বেরেস্তা না করে অল্প সোনালী কালার না হওয়া পর্যন্ত অনবরত নাড়ুন। এবার মাংস বের করে মাংসের গা থেকে মশলার মিক্সচারটি ছাড়িয়ে নিন। মশলা ফেলে দিবেন না, পরে ওটা রোস্টে দিতে হবে। এবার রানটি নিয়ে প্যানে দিয়ে দিন। চুলো পুরো আঁচে দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার ঢাকনা নামিয়ে মাংস উলটিয়ে দিন, আবার ঢাকনা দিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। দু’পাশই যাতে খুব ভালোভাবে রান্না হয়। হয়ে গেলে দেখবেন মাংসে খুব সুন্দর একটি কালার এসছে এবং মাংস অল্প কুঁচকে গেছে। এবার এতে পস্ত বাটা, বাদাম বাটা, ম্যারিনেশনের যে মশলাটা ছিল তা দিয়ে দিন। অল্প কিছু টমেটো কুঁচি দিয়ে দিন। এবার ভালোমত সব মিক্স করে নিন। এবার এতে গরম দুধটুকু দিয়ে দিন। মাংসের রানটা যেহেতু বড়, একপাশ হতে হতে অন্যপাশ শুকিয়ে যেতে পারে। তাই কিছুক্ষণ পর পর গ্রেভি তুলে নিয়ে মাংশের উপর দিয়ে দিতে হবে যাতে মাংসের দুই পাশেই ঠিক মত গ্রেভি ঢুকে মাংসটি নরম হয়।
– এবার তাতে আলু বখোরা দিয়ে দিন। ঢাকনা দিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। ঢাকনা নামিয়ে মাংস আবার উলটিয়ে দিন। গ্রেভি-টা কিন্তু বার বার তুলে মাংসের উপর লাগিয়ে দিতে হবে। এবার চুলার আঁচ অল্প কমিয়ে আবার ঢাকনা দিয়ে অপেক্ষা করুন পাঁচ মিনিট। এই প্রক্রিয়াটি ততক্ষণ রিপিট করতে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি দেখছেন মাংস নরম হয়ে এসেছে।
– এবার এতে কেওড়ার জল, কিশমিশ, এক চা চামচ পরিমান গোলাপ জল, ৮-১০ টি আস্ত কাঁচা মরিচ দিয়ে দিন। মরিচ দেয়াতে খুব সুন্দর একটি ফ্লেভার আসবে। এবার ঢাকনা দিয়ে দিন, অপেক্ষা করুন পাঁচ মিনিট। আগের একই প্রক্রিয়া বার বার রিপিট করুন। আনুমানিক ৪০ মিনিট লাগে রানের রোস্ট হতে। যখন দেখবেন মাংস হয়ে এসেছে, একটি চ্যাপ্টা বাটি নিয়ে মাংসটি তুলে নিন। গ্রেভি মাংসের উপর ছড়িয়ে দিন। সব শেষে এর উপর পেয়াজ বেরেস্তা দিয়ে দিন, চাইলে কিছু বাদাম কুঁচিও দিতে পারেন।
তৈরি হয়ে গেল মজাদার খাসীর রানের রোস্ট। এটির সাথে পোলাও তো বটেই, পরোটা, নান দিয়েও এটি খেতে কিন্তু দারুণ মজা লাগবে!