আমার বোনের ফেইস-এ অনেক পরিমাণে ব্ল্যাকহেডস হয়। তাই নানা উপায়ে ৩-৪ সপ্তাহ পর পরই এগুলো পরিষ্কার করতে হয়। নাহলে মুখটি কালচে দেখায়। এই সমস্যার একটি সহজ সমাধান হচ্ছে ব্ল্যাক পিল-অফ মাস্ক ব্যবহার করা।
বাজারে এখন অনেক ধরনের ব্ল্যাক ম্যাজিকাল পিল-অফ মাস্ক পাওয়া যায়। আপনি হয়তো অনেক ভিডিও দেখেছেন ব্ল্যাক ম্যাজিকাল পিল-অফ মাস্ক-এর, যা দিয়ে ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস ও স্কিন-এর ময়লা ক্লিন করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
আমার বোন অনেক গুলো ব্যবহার করার পর খুব ইফেকটিভ একটি ব্ল্যাক পিল-অফ মাস্ক পেয়েছে শেষমেশ। ভাবলাম সেটার রিভিউ-টাই আজকে লিখে ফেলি।
প্রোডাক্ট-টি হচ্ছে ফেমাস আর বাজেট-সুলভ চায়না স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড-এর ন্যাচারাল বিউটি অলিভ ফেসিয়াল ব্ল্যাক মাস্ক।
পিল-অফ নামটি থেকেই বুঝা যাচ্ছে এই মাস্কটি টেনে তুলে ফেলতে হয়। এই মাস্ক-এর আসল ম্যাজিকটা হচ্ছে অ্যাক্টিভেটেড চারকোল। অ্যাক্টিভেটেড চারকোল মাস্ক-টি টেনে তুলে ফেলার জন্য ত্বকের ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস, বন্ধ হয়ে থাকা লোমকূপের পোরস খুলে দিয়ে সব ময়লা চুম্বকের মতো চুষে তুলে ফেলে।
[picture]
প্রোডাক্ট ক্লেইম
এই মাস্কটি জলপাই, অ্যালোভেরা ও দুধ সমৃদ্ধ। এটা শুষ্ক ত্বকের হাইড্রেশন-এর জন্য চমৎকার কাজ করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘ই’ ও ভিটামিন ‘বি’, যা ত্বকের জন্য একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে এবং ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখে।
দুধের সাথে অলিভ এবং অ্যালোভেরা সংমিশ্রণের এই ব্ল্যাক মাস্কটি আপনার ত্বকে চকচকে, রেশমী, প্রদীপ্ত করে এবং পরিচ্ছন্ন সৌন্দর্য তৈরি করে। এছাড়াও ত্বকের অপ্রয়োজনীয় ছোট লোমগুলোও পরিষ্কার করে ফেলে, তাই ত্বক আরো উজ্জ্বল এবং পরিষ্কার হয়ে যায়। এই প্রশংসাগুলো আমি নিজ চোখে দেখার পরই করছি।
প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন
প্লাস্টিকের টিউবে ১২০ গ্রাম পরিমাণ থাকে। যা খুবই ট্র্যাভেল-ফ্রেন্ডলি। টিউবটি সাদা ও সবুজ। মাস্কটি জেট ব্ল্যাক কালার, আঠালো এবং স্ট্রং একটি মিষ্টি সুগন্ধ আছে।
দাম ও কোথায় পাবেন
আমার মতে সবার কাছে প্রোডাক্ট-এর এই দিকটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর দাম মাত্র ৬৫০/- টাকা। আমার মতে প্রোডাক্টের কোয়ালিটি অনুযায়ী দামটিও ঠিকঠাক আছে। যা আপনি যমুনা ফিউচার পার্ক ও ধানমণ্ডি সীমান্ত স্কয়ার-এর সাজগোজ শপ-এ পেয়ে যাবেন। এছারা আপনি তাদের অনলাইন-এও অর্ডার করতে পারেন।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
সরাসরি মাস্ক-টি লাগিয়ে ফেললে কোন কাজ করবে না। ভালো ফল পেতে হলে একটুতো কষ্ট করতেই হবে। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের কিছু টিপস দিচ্ছি যা খুবই কার্যকরী হবে। প্রথমে মুখটি খুব ভালো করে ফেইস ওয়াশ দিয়ে ধুয়ে একটি ছোট টাওয়েল সহনীয় গরম পানিতে বিজিয়ে পুরো মুখে চেপে ধরে স্টিম করে নিবেন। এভাবে ২-৪ মিনিট কয়েকবার মুখ স্টিম করে নিন। এরপর অ্যালোভেরা জেল-এর সাথে ১ চামচ চিনি মিশিয়ে আলতোভাবে পুরো মুখে কিছুক্ষণ মাসাজ করে স্ক্রাব করে নিন। এতে আপনার ব্ল্যাকহেডস ও লোমকূপের ময়লাগুলো নরম হয়ে যাবে আর মাস্ক-এর সাথে ময়লা সহজেই ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এরপর ফ্ল্যাট মাস্ক-গুলোতে মাস্ক-টি নিয়ে ঠোঁট ও চোখের জায়গাটুকু বাদ দিয়ে ঘন লেয়ার করে পুরো মুখে লাগিয়ে ভালোভাবে ব্ল্যাক পিল-অফ মাস্ক-টি লাগিয়ে নিন। মনে রাখবেন মাস্ক-টি লাগানোটা কোন জায়গায় পাতলা হয়ে গেলে সেখান থেকে টান দিয়ে উঠানো যাবে না, এতে ময়লা ও পরিষ্কার হবে না। তাই একটু পুরু করে লাগাতে হবে। ২০-২৫ মিনিট লাগবে মাস্ক-টি পুরোপুরি শুকাতে। আমার তাই লেগেছে। অনেকের আরেকটু বেশি সময়ও লাগতে পারে। অপেক্ষা করুন ও হাত দিয়ে হালকা করে করে ধরে দেখুন পুরোপুরি শুকিয়েছে কিনা। ভালোমত শুকিয়ে গেলে মুখটি কয়েকবার হা করে করে ঠোঁট ও থুতনির চারপাশ দিয়ে মাস্ক-টি একটু আলগা করে নিন। এরপর থুতনি ও জ-লাইন এর থেকে শুরু করুন উপরের দিকে টেনে উঠাতে হবে। এভাবে পুরো মুখ থেকে মাস্ক-টি তুলে উপটানের মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন ঠাণ্ডা শশার রস দিয়ে অথবা গোলাপ জল দিয়ে। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সব শেষে আপনার পছন্দের ময়েশ্চারাইজার ক্রিমটি লাগিয়ে ফেলুন। এতে করে মুখটিতে পুরো ফেসিয়াল-এর মত কার্যকারিতা পাবেন এবং খুব ভালো পরিষ্কার হবে।
রেটিং
আমার বোনকে এভাবেই ব্যবহার করতে দেখেছি যেটা খুবই ইফেকটিভ রেজাল্ট দিচ্ছে। তাই আমিও ভাবলাম, এভাবে এটা ব্যবহার করা শুরু করবো মাঝে মধ্যে। আমি এটার রেটিং দিবো ৮/১০। কারণ প্রপারলি মুখ পরিষ্কার করতে আরও অনেক কিছুই করতে হয় কিন্তু এই মাস্ক-টি আসলেও ভালো। ত্বককে বেশ স্মুথ করে ও ব্রাইট দেখায়।
এই ন্যাচারাল বিউটি অলিভ ফেসিয়াল ব্ল্যাক মাস্ক ব্যবহার করে আপনারা ভালো ফলাফল পাবেন আমার বিশ্বাস। আমার এই রিভিউ ও ব্যবহারের টিপস থেকে আশা করি আপনাদের হেল্প হবে।
লিখেছেন- নিকিতা বাড়ৈ
ছবি- স্টাইল২৪৭.পিকে