আচ্ছা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যদি দেখেন ত্বকটা শুষ্ক হয়ে আছে, তার ওপর যদি থাকে ব্রণ আর ব্রণের দাগ, কেমন লাগে বলুন তো? আমরা অনেকেই ত্বকে ব্রণ, ত্বকের দাগ আর ইরিটেশনের জন্য না বুঝে শুনে ময়েশ্চাইজার অ্যাপ্লাই করি। যা আসলে আমাদের ত্বকের জন্য কার্যকরী নয়। কিন্তু এমন একটি ময়েশ্চারাইজার পেলে তো ভালোই হয়, যা ব্যবহারে ত্বকে কোনরকম ইরিটেশন হবে না। আর একই সাথে ত্বকের দাগ আর ইরিটেশন দূর করবে। তাই আজকে বলবো, এমনই একটি কোরিয়ান ময়েশ্চারাইজারের কথা। সেটি হচ্ছে- NEOGEN – Surmedic Azulene Soothing Cream এমনই একটি ক্রিম।
বেশ কিছু দিন ধরেই আমি এই NEOGEN – Surmedic Azulene Soothing Cream টি ব্যবহার করছি। আমার ত্বক বেশ কিছুদিন ধরে খুবই শুষ্ক হয়ে গিয়েছিল এবং সাথে ব্রণ তো ছিলই। তারপর আমি এই ক্রিমটি ব্যবহার শুরু করি। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমার এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করা যাক।
কী কী রয়েছে এতে?
কোরিয়ান এই ক্রিমটিতে ত্বকের উপযোগী দারুণ সব ইনগ্রিডিয়েন্ট আছে। যা ত্বককে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের পিগমেন্টেশন, ব্রণ কমিয়ে ত্বকে রাখে ময়েশ্চাইজড। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদানগুলো হচ্ছ-
- সিন্টেলা এশিয়াটিকা এক্সট্র্যাক্ট
- এশিয়াটিক এসিড
- অ্যাভোকাডো অয়েল
- জোজোবা সিড অয়েল
- শিয়া বাটার
- লিকোরিস রুট এক্সট্র্যাক্ট
- ল্যাভেন্ডার ফ্লাওয়ার এক্সট্র্যাক্ট
- সোডিয়াম হায়ালুরোনেট
এখন বলা যাক, এর প্রধান একটি উপাদান ‘আযুলিন’ নিয়ে।
আযুলিন কী?
এই প্রোডাক্টটির লিখা আছে আযুলিন। কিন্তু এই আযুলিন কি? আমরা অনেকেই জানি না। এটি ক্যামোমাইল এক্সট্র্যাক্ট থেকে নেওয়া হয়, যা খুব সুন্দর নীল রঙের হয়ে একটি উপাদান। আর ঠিক এই কারণেই এই ক্রিমটির রঙ সুন্দর নীল। আযুলিনে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা ত্বককে সুদিং একটি ইফেক্ট দেয় এবং ত্বকের ইরিটেশন কমাতে সাহায্য করে। ত্বকে আযুলিনের ব্যবহার ত্বকের দাগ দূর করা এবং ত্বকের সেলগুলো রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। আর একই সাথে ব্রণ এবং পিগমেন্টেশন কমায়।
ক্রিমটির কার্যকারিতা
১। ত্বকের ইরিটেশন কমায়
ক্রিমটিতে থাকা ‘Guaiazulene’ উপাদানটি ত্বকে একটি সুদিং ইফেক্ট দেয়। যার ফলে স্কিনের ইরিটেশন কিংবা রোদে গেলে যে ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাব হয়, সেই প্রবণতা কমিয়ে আনে।
২। ত্বকের ব্যারিয়ার ইম্প্রুভ করে
স্কিনের ব্যারিয়ার শক্তিশালী না থাকলে স্কিনের ময়েশ্চার কমতে থাকে। এতে থাকা ‘Ceramide’ উপাদানটি ত্বকের ব্যারিয়ারকে ইম্প্রুভ করতে সাহায্য করে।
৩।ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে
ক্রিমটি আমাদের ত্বকে দীর্ঘ সময়ের জন্য হাইড্রেশন দিতে করতে সাহায্য করে। কারণ এতে রয়েছে সেরামাইড, অ্যাভোকাডো এবং শিয়া বাটার। হাইড্রেশনের পাশাপাশি ত্বককে রাখে ময়েশ্চারাইজড।
৪।ন্যাচারাল কালার ব্যবহার
ক্রিমটিতে কোন আর্টিফিশিয়াল কালার ব্যবহার করা হয় নি। ক্যামোমাইল এক্সট্র্যাক্ট থেকে কালার নেওয়া হয়, যা খুব সুন্দর নীল রঙের হয়ে থাকে। ঠিক এই কারণেইই কিন্তু এই ক্রিমটির কালারও নীল।
৫। ব্রণের প্রবণতা কমিয়ে আনে
ক্রিমটিতে থাকা আযুলিনে আছে অ্যান্টি একনে প্রোপার্টিজ, যা ত্বকে ব্রণ এবং ব্রণের ব্লেমিশ দূর করতে সাহায্য করে।
৬। ত্বককে করে সফট
ক্রিমটিতে আছে শিয়া বাটার, যা ত্বকে পুষ্টি যোগায় এবং ত্বককে করে সফট।
৭। পিগমেন্টেশন কমিয়ে আনে
ব্রণের দাগ বা ত্বকে কোনো রকম পিগমেন্টেশন থাকলে এই ক্রিমটিতে থাকা উপাদান তা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
৮। ফাইনলাইনস এবং রিংকেল কমাতে সাহায্য করে
আযুলিন উপাদানটি ব্যবহারে অ্যান্টি এজিং বেনিফিটস পাওয়া যায়। চোখের নিচের ভাঁজ, ত্বকে ফাইনলাইনস বা রিংকেল কমাতে এই ক্রিমটি খুবই কার্যকরী।
কোন ধরনের স্কিনে ব্যবহার করা যাবে?
এই ক্রিমটি সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যাবে। আর যাদের সেন্সেটিভ স্কিন তাদের জন্যও একদম পারফেক্ট এই ক্রিমটি। এর ব্যবহারে ত্বকে কোন ধরনের ইরিটেশন হয়না।
কখন ব্যবহার করতে পারবেন?
আমি দিনে এবং রাতে দুই বেলা ক্রিমটি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়া যখনই মনে হয় আমার ত্বক টানটান করছে তখনই আমি অ্যাপ্লাই করে নেই।
স্মেল নিয়ে ভাবছেন?
আমরা অনেকেই প্রোডাক্ট ব্যবহারে কোন রকম গন্ধ বা স্মেল পছন্দ করি না। আর এই ময়েশ্চারাইজারটিতে কোনো এক্সট্রা স্মেল নেই।
প্যাকজিং এবং দাম
এই ক্রিমটির প্যাকেজিং তো আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ভেতরের ক্রিমটির রং নীলচে কালার, যা দেখতে খুব ভালো লাগে। কোরিয়ান সব প্রোডাক্টের দামই একটু বেশি হলেও আমি বলবো দামের সাথে প্রোডাক্টটির উপযোগিতাও খুবই ভালো। এই ময়েশ্চারাইজারের দাম ১৬৫০ টাকা মাত্র, যা এর কার্যকারিতা অনুযায়ী খুবই ভালো।
আমার ভালো লেগছে যে বিষয়টি
এই ময়েশ্চারাইজারের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টি হলো এটি ব্যবহারের পর ত্বকে দারুণ সুদিং একটি ইফেক্ট দেয়, যা আমার খুবই ভালো লেগছে। আর এই ক্রিমটির কালারও আমার খুবই পছন্দের।
কোথায় পাবেন?
আমি সবার প্রথমে অনলাইনে এই প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে পারি। আমি এটি শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনেছি। অনেক সময় এই প্রোডাক্টের উপর ডিসকাউন্ট থাকে। আপনারা চাইলে সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপও ভিজিট করতে পারেন, যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আশা করছি, রিভিউটি আপানাদের ভালো লেগেছে। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর থাকবেন।