পরিবারে নতুন একটি শিশুর আগমনটা অনেক আনন্দের। আর এই আনন্দকে ঘিরে থাকে নানান আয়োজন।সারাক্ষণ শিশুটির দিকে খেয়াল রাখাটাই তখন সবার মূল ব্যস্ততা হয়ে দাঁড়ায়।কিন্তু নবজাতক এই শিশুটির ত্বকের ঠিক মতো যত্ন নেয়া হচ্ছে তো?
নবজাতক শিশুদের ত্বক খুব স্পর্শকাতর হয়।আর তাই এই নরম ত্বকের জন্য চাই বাড়তি যত্ন।একটু সচেতন থাকলেই ত্বকের নানান সমস্যা এড়ানো যায় খুব সহজেই। জেনে নিন, নবজাতক শিশুর ত্বকের যত্নের জন্য কিছু পরামর্শ।
[picture]
গোসলের সময়
নবজাতক শিশুকে গোসল করানোর সময় অনেকেই সরিষার তেল মালিশ করেন।কিন্তু বাজারে যেই তেলগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর অনেকগুলোতেই থাকে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান। ফলে এই তেলগুলো শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।তাই এই তেলগুলো শিশুর নরম ত্বকে ব্যবহার না করাই ভালো।শিশুর ত্বকের উপযোগী বেবি অয়েলগুলোই মালিশ করে দিতে পারেন গোসলের আগে। সেই সঙ্গে গোসলের সময়ে গলার নিচে, পায়ের ভাজে, বগলে, কানের পেছনে স্থানগুলো পরিষ্কার করে দিন কারণ চামড়ার ভাজের কারণে শিশুদের ত্বকের এই স্থানগুলোতে ময়লা জমে থাকে।গোসলের সময়ে অবশ্যই মাইল্ড বেবি সোপ ব্যবহার করবেন।সাধারণ বডি ওয়াশ বা সাবান শিশুর ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
ত্বকে রোদ লাগানো
নবজাতক শিশুর জন্ডিস কমানোর জন্য অনেকেই শিশুকে দীর্ঘক্ষণ রোদে রাখেন।এতে শিশুর ত্বকের ক্ষতি হয়।কারণ সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি নবজাতকের স্পর্শকাতর কোমল ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর।যদি জন্ডিস কমানোর জন্য রোদে দিতেও হয় তবে সকাল ১০টার আগের রোদে দিন।সকাল ১০টার পর থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময়ের কড়া রোদ যেন শিশুর ত্বকে না পরে সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখুন।
শিশুর পোশাক ধোয়া
নবজাতক শিশুর পোশাক ধোয়ার ক্ষেত্রে হালকা গরম পানি ব্যবহার করা ভালো।এতে মলমূত্রের ব্যাকটেরিয়া থাকলে সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে।সেই সঙ্গে শিশুর কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্টটি পারফিউম এবং ফ্যাবরিক সফটনার ফ্রি হলে ভালো হয়।খেয়াল রাখবেন যেন নবজাতকের কাপড় ধোয়ার সময় ডিটারজেন্ট ভালো করে ধুয়ে ফেলা হয় এবং কড়া রোদে কাপড়টা শুকানো হয়।কাপড় ভালো করে না শুকিয়ে পরালে শিশুর ত্বকে র্যাশ হতে পারে।
ডায়াপার পরানো
শিশুকে ডায়াপার পরিয়ে রাখা হলে ত্বকে অনেক সময় র্যাশ উঠতে দেখা যায়।এই সমস্যাটা কিছুটা কমানোর জন্য একবার ডায়াপার খুলে দেয়ার পর পারফিউম ফ্রি ওয়েট টিস্যু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে দিবেন।খেয়াল রাখবেন ত্বক যেন আলতোভাবে পরিষ্কার করা হয়।বেশি ঘষে পরিষ্কার করলে শিশুর ত্বকের ক্ষতি হবে।এরপর কিছুক্ষণ ডায়াপার পরাবেন না।বাতাসে ত্বকটা পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে ব্যারিয়ার ক্রিম লাগিয়ে নিন।ব্যারিয়ার ক্রিম হিসেবে যে কোনো ডায়াপার পরানোর জন্য উপযোগী অ্যান্টি র্যাশ ক্রিম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন।এরপর ডায়াপার পরিয়ে দিন।
ছবি – ম্যাজিকাল মোমেন্টস ফ্যামিলি ফটোগ্রাফি
লিখেছেন – নুসরাত শারমিন