কেমন হবে এবার ইদে রাতের বেলার মেকআপ? - Shajgoj

কেমন হবে এবার ইদে রাতের বেলার মেকআপ?

rsz_sm688857

“যাক বাবা!! অবশেষে ইদের শপিং শেষ হলো। যে ড্রেস-গুলো এবার কিনেছি, দেখলে সবাই একেবারে হা হয়ে যাবে। গর্জিয়াস যে ড্রেস-টা কিনেছি, ওটা পড়ব আত্মীয়ের বাসায় রাতের বেলার দাওয়াতে। কিন্তু মেকআপ?? সেটা কিভাবে কি করলে ভালো হবে সেটাই তো বুঝতে পারছি না। আর যা গরম তাতে রাতের মেকআপ কিভাবে সুন্দর হবে এবং সাথে লং লাস্টিং-ও হবে সেটাই তো বড় চিন্তা।”

উপরের মানুষটি আপনি? তবে, এই আর্টিকেল-টি আপনার জন্যেই।

Sale • Face Primer, Loose Powder, Foundation

    গতকালের পর্বে জেনেছিলেন ইদে দিনের বেলার মেকআপ সম্পর্কে। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, এবারের ইদে রাতের বেলার মেকআপ কেমন হওয়া উচিত এবং কিভাবে তা লং লাস্টিং হবে। চলুন তবে, জেনে নেই।

    [picture]

    ফেইস মেকআপ

    ১. গতকালের পর্বে বলেই দিয়েছিলাম যে, মেকআপ-এর আগে কিভাবে স্কিনকে প্রিপেয়ার করবেন। তবে, আরও একবার বলে দেই। মেকআপ-এর শুরুতে স্কিন ক্লিন করে নিন আপনার পছন্দের ফেসওয়াশ দিয়ে। এরপর একটা স্ক্রাবার দিয়ে ফেস এবং লিপ স্ক্রাবার দিয়ে লিপস স্ক্রাবিং করে নিন। স্ক্রাবিং-এর পালা শেষ হলে লাগিয়ে নিন একটা শীট মাস্ক। ১৫ মিনিট পর শীট মাস্ক টি তুলে ফেলে ফেইস-এ রয়ে যাওয়া সিরাম টুকু প্যাটিং মোশনে স্কিনে ম্যাসাজ করে নিন। সকালে মেকআপ-এর আগে যদি আপনি স্ক্রাবিং এবং শীট মাস্ক ব্যবহার করে থাকেন, তবে রাতের জন্যে আর দরকার হবে না।
    এরপর লাগান আপনার স্কিন-এর টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার। রাতের বেলা সানস্ক্রিন-এর কোন দরকার নেই।

    ২. স্কিনকে প্রিপেয়ার করে নেওয়ার পরে ফেইস-এ একটা ভালো মানের প্রাইমার লাগান। প্রাইমার লাগাতেই হবে। এটা কিন্তু মাস্ট। ফেস-এ পোর থাকলে পোর মিনিমাইজিং প্রাইমার লাগাতে পারেন।

    ৩. এবার ফেইস-এ যে সকল স্থানে স্পট এবং ডার্ক সার্কেল আছে সেখানে কালার কারেক্টর লাগান। আপনার স্কিন যদি ফর্সার দিকে হয় তবে কোরাল/পিচ কালারের কারেক্টর লাগাবেন। আর স্কিন যদি মিডিয়াম/ডার্ক-এর দিকে হয় তবে লাগাবেন অরেঞ্জ কারেক্টর। অল্প করে দাগের উপর লাগিয়ে আঙ্গুল/ব্রাশ-এর সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিবেন।

    ৪. এবার পালা ফাউন্ডেশন-এর। যে কোন অকেশন-এ আমি সবসময় ফুল কভারেজ  ফাউন্ডেশন-ই ব্যবহার করতে বলি। কারণ, মেকআপ মানেই লেয়ার-এর পর লেয়ার ফাউন্ডেশন, আমার কাছে একদমই ভালো লাগে না। যার কারণে ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন-ই বেছে নেয়ার কথা বলা। কারণ, ফাউন্ডেশন ফুল কভারেজ হলে পরিমাণে কম লাগে, ভালো কভারেজ পাওয়া যায় এবং ফেইস-এর দাগ ঢাকতে এক্সট্রা করে কন্সিলার-এর দরকার হয় না।

    আপনি চাইলে ফাউন্ডেশন-এর আগে ফেইস-এ অথবা ফাউন্ডেশন-এর সাথে লিকুইড ইল্যুমিনেটর মিক্স করে লাগাতে পারেন। এতে ফেইস-এ একটা হেলদি গ্লো আসবে। আপনার স্কিনের শেইড-এর সাথে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন লাগাবেন এবং একটি ড্যাম্প বিউটি স্পঞ্জ/ব্রাশ-এর সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিবেন।

    তবে হ্যা, শুধু মুখে ফাউন্ডেশন লাগালেই হবে না। আপনার ঘাড়-গলা এবং কানকে বাদ দিবেন না যেন। নয়ত মুখ,গলা, কান- সব আনইভেন দেখা যেতে পারে।

    ৫. এবার ক্রিম হাইলাইটিং এর জন্যে আপনার স্কিনের থেকে ২-৩ শেড লাইট একটা কন্সিলার নিয়ে আপনার চোখের নিচে, কপালে, নাকের উপরে, থুঁতনিতে, কন্টুরিং লাইনের নিচের দিকে লাগিয়ে নিন।  কন্সিলারটি ব্রাশ/বিউটি স্পঞ্জের সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিন।

    ৬. এবার সব কিছু সেট করার পালা। লং লাস্টিং মেকআপ পেতে বেকিং করতে পারেন। একটি বিউটি স্পঞ্জ-এ অনেকখানি লুজ পাউডার নিয়ে যে সকল স্থানে কন্সিলার লাগিয়েছেন, সেখানে লাগিয়ে নিন। ৫ মিনিট অপেক্ষা করে এক্সট্রা পাউডার-গুলো একটি পাউডার ব্রাশ-এর সাহায্যে ঝেড়ে ফেলে দিন এবং একইসাথে পুরো ফেইস-টা সেট করে নিন।

    ৭. এবার কনট্যুরিং  করে নিবেন। গরমে ক্রিম কনট্যুরিং না করে পাউডার কনট্যুরিং করে নিন। চিকস-এর নিচে, কপালে হেয়ার লাইনে, নাকের দুই পাশে, থুঁতনির নিচে কনট্যুরিং করে নিন এবং ব্লেন্ড করে নিন।

    ৮. ফেইস-এ একটু কালার যোগ করতে ব্লাশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন পিংক, কোরাল, অরেঞ্জ, ব্রাউন, মভ, পিচ ইত্যাদি কালার। ব্লাশ ব্রাশ-এর সাহায্যে চিকস-এ লাগিয়ে ব্লেন্ড করে নিন।

    ৯. এবারে আমার সবথেকে ফেভারিট পার্ট। পাউডার হাইলাইটিং। যেহেতু রাতের বেলার লুক, তাই এই পার্ট-টি মিস না করাই উচিত। হাইলাইটার ব্রাশ-এর সাহায্যে পাউডার হাইলাইটার নিয়ে চিক বোনে, কপালে, আইব্রো বোনে, আইব্রো-এর উপরের দিকে, নাকের উপরে, থুঁতনিতে এবং ঠোঁটের উপরে লাগিয়ে নিন।

    ১০. এবারে বেইজ মেকআপ-টাকে লং লাস্টিং করার জন্যে এটিকে লক করতে হবে। এজন্যে ভালো মানের একটা সেটিং স্প্রে লাগিয়ে নিন। এতে করে মেকআপ নষ্ট হবে না এবং মেকআপ-এর পাউডারি ভাবও দূর হবে। বেইজ মেকআপ-এর শেষে এবং পুরো মেকআপ শেষ করার পর আর একবার স্প্রে করে নিবেন।

    আই মেকআপ

    ১. ইদের আই মেকআপ একটু গর্জিয়াস-ই হবে।  তাই আমি বলবো আগে আই মেকআপ করে তারপর বেইজ মেকআপ করতে। এতে করে আই মেকআপ-এ ফলআউট হলে তা আপনি আগেই ক্লিন করে ফেলতে পারবেন মেকআপ ওয়াইপস-এর সাহায্যে।এছাড়া ফেইস বেকিং-এর সময়টাতেও আই মেকআপ করতে পারেন এতে করে এক্সট্রা লুজ পাউডার ঝেড়ে ফেলার সময় আই মেকআপ-এর ফলআউট-গুলো চলে যাবে।

    ২. আই মেকআপ-এর শুরুতে আইব্রো-গুলো এঁকে নিন। এজন্যে আপনি আইব্রো পেন্সিল অথবা আইব্রো পমেড ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে একটু ড্রামাটিক-ভাবেই এঁকে নিতে পারেন। এরপর একটা আইব্রো সেটিং জেল দিয়ে আইব্রো-গুলো সেট করে নিন। এবার আপনার হাইলাইটিং কন্সিলার-টি দিয়ে আইব্রো-এর চারদিকে লাগিয়ে আইব্রো ডিফাইন করে নিন। এতে দেখতে বেশ সুন্দর লাগবে।

    ৩. আই মেকআপ হিসেবে আপনি  কাট ক্রিজ, হাফ কাট ক্রিজ, গ্লিটারি আই মেকআপ, স্মোকি, গ্লিটার কাট ক্রিজ, হেলো স্মোকি আই, স্পটলাইট আই মেকআপ ইত্যাদি ট্রাই করতে পারেন। দেখতে বেশ ভালো এবং ট্রেন্ডি লাগবে। আইশ্যাডো হিসেবে বেছে নিন- ব্রাউন, রেড, ব্লু, গ্রিন, পিচ, কোরাল,ইয়েলো, পিংক, পার্পেল, গোল্ডেন, সিলভার, রোজ গোল্ড, অরেঞ্জ, কপার, শ্যাম্পেইন, পার্ল, ব্রোঞ্জি, ব্ল্যাক ইত্যাদি কালার।

    ৪. আইলাইনিং করে নিন পছন্দ মতো। এছাড়া মাসকারা লাগাতে একদম ভুলবেন না। চাইলে ফলস আইল্যাশ ট্রাই করতে পারেন।

    লিপস্টিক

    দিনের বেলার মেকআপ পর্বে বলেছিলাম, ডার্ক কালার-গুলো রাতের মেকআপ-এর জন্যে তুলে রাখতে। এবার তারই পালা এসে গেছে। লিপস্টিক হিসেবে আপনার পছন্দসই যে কোনো ডার্ক কালার-ই বেছে নিতে পারেন। যেমন- রেড, ব্রাউন, ম্যাজেন্টা, পার্পেল, বারগেন্ডি ইত্যাদি। চাইলে লাইট কালার-গুলো যেমন- ন্যুড, কোরাল, পিংকিস ব্রাউন, পিচ ইত্যাদিও লাগাতে পারবেন।

    এই তো ছিলো, ইদের রাতের বেলার মেকার সম্পর্কে খুঁটিনাটি। আপনাদের আমি কিছুটা আইডিয়া দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, আপনাদের হেল্প হবে। ভালো থাকুন এবং পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দে ইদ কাটান।

    লিখেছেন- জান্নাতুল মৌ

    0 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort