সারাদিন শেষে রাতে যখন আমরা ঘুমাতে যাই, ঠিক তার আগেই দরকার স্কিনকে ডিপলি ক্লিন করে নেয়া। এটা মিস হয়ে গেলে স্কিনে হতে পারে নানা সমস্যা। বিশেষ করে যখন মেকআপ করা হয়, তখন খুব ভালোভাবে ক্লিন করা খুবই প্রয়োজন। তাছাড়া প্রতিদিনই নাইট টাইমে কিছু বেসিক স্কিন কেয়ার করা প্রয়োজন। নাইট টাইম কেয়ার রুটিনে মাত্র কয়েকটি স্টেপ ফলো করলেই ক্লিন ও রিফ্রেশিং ত্বক পাওয়া যায়। তবে চলুন জেনে নেয়া যাক, কীভাবে সহজ উপায়ে রাতের বেলায় ত্বকের যত্ন নিতে হবে। এই নাইট টাইম স্কিন কেয়ার রুটিনটি অল টাইপ স্কিনের জন্য।
নাইট টাইম স্কিন কেয়ারের স্টেপগুলো জেনে নিন
১। ডাবল ক্লেনজিং
২। টোনিং
৩। সিরাম অ্যাপ্লাই
৪। ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই
৫। আই ক্রিম অ্যাপ্লাই
সবার প্রথমে ডাবল ক্লেনজিং
সারাদিনের ডার্ট, পল্যুশন বা মেকআপ শুধুমাত্র ফেইস ওয়াশ দিয়ে পুরোপুরি ক্লিন করা সম্ভব নয়। এর জন্য ডাবল ক্লেনজিং করতে হবে। সারাদিন শেষে ঘুমানোর আগে ডাবল ক্লেনজিং এর নাম শুনলেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই! কারণ এতে সব মিলিয়ে ৬-৭ মিনিটের মতো সময় লাগে। প্রথমে মাইসেলার ওয়াটার অথবা অয়েল ক্লেনজার ব্যবহার করা যেতে পারে। এরপর স্কিনের ধরন অনুযায়ী একটা ভালোমানের ফেইস ওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
পি এইচ ব্যালান্স করতে টোনার
ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ক্লিন করার পর স্কিনের পি এইচ ব্যালান্স ঠিক রাখতে প্রয়োজন টোনার। টোনার ইউজের ক্ষেত্রে দুই রকম প্রক্রিয়া ফলো করা যেতে পারে। টোনার কটন প্যাডে নিয়ে তা পুরো ফেইসে লাগিয়ে নিতে হবে। অথবা কেউ যদি চায় কটন প্যাডে না নিয়ে হাত দিয়ে লাগাবে, সেটাও করতে পারবে, তবে সেক্ষেত্রে হাত ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কয়েক ফোঁটা টোনার হাতের আঙুলে নিয়ে তা আলতো করে পুরো ফেইসে লাগিয়ে নিন। এতে করে স্কিন পরবর্তী স্টেপ এ সিরাম বা ময়েশ্চারাইজার লাগানোর জন্য উপযোগী হয়ে যাবে।
সিরামের ব্যবহার
সিরাম ত্বকের নির্দিষ্ট কিছু প্রবলেমকে টার্গেট করে কাজ করে। তাই সিরাম ব্যবহারের আগে ত্বকে কী ধরনের প্রবলেম হচ্ছে সেটা আগে জানা জরুরি। তা না হলে যে কোনো সিরাম লাগালে ত্বকে পাল্টা প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সিরাম লাগানোর সবচেয়ে ভালো সময় হল নাইট টাইম। কারণ যেহেতু সিরাম নির্দিষ্ট প্রবলেমকে টার্গেট করে কাজ করে, তাই এই সময়ে সিরাম লাগালে তা স্কিনে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে পারে। টোনার লাগানোর পর সেটা পুরোপুরি ফেইসে শোষিত হয়ে গেলে সিরাম অ্যাপ্লাই করা যাবে। পরিষ্কার হাতে ২-৩ ফোঁটা সিরাম নিয়ে তা ড্যাব ড্যাব করে লাগিয়ে নিন। ব্যস, হয়ে গেলো!
অল টাইপ স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজার
ময়েশ্চারাইজার সব ধরনের স্কিনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শরীরের সতেজতার জন্য যেমন খাদ্য প্রয়োজন, ঠিক তেমনই স্কিনকে সতেজ রাখতে ময়েশ্চারাইজার দরকার। স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তা ঘনত্বের ভিত্তিতে অ্যাপ্লাই করা হয়। কম ঘনত্বের প্রোডাক্ট আগে ব্যবহার করতে হবে এবং তুলনামূলক বেশি ঘনত্বের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট শেষের দিকে ইউজ করবেন। সেই হিসেবে সিরাম এর থেকে ময়েশ্চারাইজার বেশি ঘনত্বের হওয়াতে ময়েশ্চারাইজার স্কিন কেয়ার স্টেপের শেষে অ্যাপ্লাই করতে হবে। সিরাম লাগানোর ১০-১৫ মিনিট পর ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন যেন সিরাম পুরোপুরি স্কিনে বসে যায়। সিরামের পর ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করলে তা স্কিনকে ভালোভাবে হাইড্রেট করে।
চোখের সতেজতা ধরে রাখতে আই ক্রিম
চোখের এরিয়া স্কিনের সবচেয়ে সেনসিটিভ পার্ট, তাই এর যত্ন নিতে হবে একটু আলাদাভাবে। আই ক্রিম স্কিন কেয়ার স্টেপের শেষে লাগানো হয়। রিং ফিঙ্গারে নিয়ে আই ক্রিম আই এরিয়াতে আলতোভাবে লাগাতে হবে। আই ক্রিম লাগানোর উপযুক্ত সময় হল নাইট টাইম, কারণ এটা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে পারে আই এরিয়াতে।
নাইট টাইমে অল টাইপ স্কিনেই এই স্টেপগুলো ফলো করলে সহজেই পাওয়া যাবে ফ্রেশ, হেলদি স্কিন। প্রতিদিন স্কিনের জন্য অল্প কিছু সময় দেয়ার ফলে যদি স্কিন ফ্রেশ ও সুন্দর থাকে, তবে সেটাই ভালো হবে! কারণ প্রতিদিন স্কিনের প্রতি অবহেলা করে দিতে পারে স্কিন ড্যামেজ, যেটা রিপেয়ার করা কঠিন। তাই আমরা রোজ নাইট টাইমে একটু যত্ন করে স্কিনকে রাখতে পারি হেলদি।
স্কিন ও হেয়ার কেয়ারের জন্য অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে সাজগোজের ৬টি ফিজিক্যাল শপ ভিজিট করতে পারেন। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ণ মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) এ অবস্থিত। অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিজের ব্যাপারে সচেতন হবেন।
ছবি- সাজগোজ