আমরা অনেকেই নামকরা গ্লোবাল ব্র্যান্ডের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করেছি। কভারেজ, প্রোডাক্ট কোয়ালিটি সবই ভালো কিন্তু দেখা যায় আমাদের দেশের আবহাওয়ায় অনেক সময় সেটা খুব দ্রুত মেল্ট করে। অনেক সময় স্কিনটোনের সাথে শেইড ম্যাচ করে না! এই প্রথম বাংলাদেশি স্কিনটোনের জন্য পারফেক্ট শেইডের ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন নিয়ে এলো নিরভানা কালার ব্র্যান্ড, যা আপনাকে দিবে লং লাস্টিং ফ্ললেস মেকআপ লুক। চলুন দেরি না করে বিস্তারিত জেনে নেই।
‘আমি তো একদমই মেকআপ করতে পারি না!’
অনেকেই আছেন মেকআপে একদম বিগেইনার। মানে কীভাবে মেকআপ করতে হয়, সেটাও বুঝতে পারেন না! আমিও কিন্তু ছিলাম এই দলে! মেকআপের স্কিল ডেভেলপ হয় প্র্যাকটিস করতে করতে। আর শুরুর দিকে শুধু ফাউন্ডেশন আর প্রেসড পাউডার দিয়েই কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। এরপর না হয় অ্যাডভান্স লেভেলে মানে কনট্যুরিং, ব্রোঞ্জিং এগুলো শিখলেন। বেসিক মেকআপ আইটেমের মধ্যে ফাউন্ডেশনের নামটাই সবার আগে আসে। যারা একদমই মেকআপ করেন না বা করতে পারেন না, তাদের জন্যও এই মেকআপ প্রোডাক্টটা মাস্ট হ্যাভ!
ফাউন্ডেশনের রাইট শেইড সিলেকশন কেন জরুরি?
স্মুথ ও ফ্ললেস বেইজ ছাড়া যত সুন্দর আইলুক বা লিপ কালার ক্যারি করেন না কেন, সেটা দেখতে কিন্তু ভালো লাগবে না। তাই সবার আগে প্রয়োজন পারফেক্ট বেইজ মেকআপ। আর পারফেক্ট বেইজ মেকআপের জন্য স্কিনটোনের সাথে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন সিলেকশন খুব জরুরি। ভুল ফাউন্ডেশন শেইড পিক করার কারণে কিছুক্ষণের মধ্যে মেকআপ কালচে হয়ে যায়, কেকি দেখায়, স্কিন আনইভেন লাগে। এমন ফর্মুলার ফাউন্ডেশন আপনাকে বেছে নিতে হবে যা লং লাস্টিং ও স্মুথ ফিনিশ দেয়।
Nirvana Color Face Perfect Liquid Foundation
বাংলাদেশের নম্বর ওয়ান কালার কসমেটিকস ব্র্যান্ড ‘Nirvana Color’ নিয়ে এসেছে ৪টি ডিফারেন্ট শেইডের ফাউন্ডেশন যা বাংলাদেশি স্কিনটোনের জন্য একদম পারফেক্ট! হাই এন্ড ব্র্যান্ডের ফাউন্ডেশন মতোই ফ্ললেস ফিনিশ দেয়। আমার কাছে মনে হয়েছে, এদেশের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই এই ফাউন্ডেশনগুলো নিয়ে আসা হয়েছে। তাই একদম ন্যাচারাল লুক দেয় এবং পারফেক্টলি সেট থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। শেইডগুলো দেখে নিন তাহলে-
১) Nirvana Color Face Perfect Liquid Foundation – Light Natural
২) Nirvana Color Face Perfect Liquid Foundation – Light Beige
৩) Nirvana Color Face Perfect Liquid Foundation – Light Golden
৪) Nirvana Color Face Perfect Liquid Foundation – Light Honey
কোন শেইডটা আপনার জন্য পারফেক্ট?
১) কুল-পিংক আন্ডারটোনের লাইট শেইডের ফাউন্ডেশন হিসেবে Light Natural শেইডটি স্যুইটেবল। Mac এর NC 17, NW 15 যারা ব্যবহার করেন, তারা নিশ্চিন্তে এই শেইডটি নিতে পারেন। Maybelline Fit me Liquid Foundation 115 শেইডটা যারা ইউজ করেন, তাদের জন্য পারফেক্ট।
২) যাদের স্কিন ফেয়ার অ্যান্ড গোল্ডেন-পিচ আন্ডারটোনের, তারা Light Beige শেইড ট্রাই করতে পারেন। NC 25, NC 30 শেইড হলে আপনার জন্য এটি পারফেক্ট। Maybelline Fit me Liquid Foundation 220 শেইডটা যারা ইউজ করেন, তাদের জন্য স্যুইটেবল।
৩) যাদের স্কিনটোন উজ্জ্বল শ্যামলা অর্থাৎ গোল্ডেন ওয়ার্ম আন্ডারটোন, তাদের ক্ষেত্রে Light Golden শেইডটি পারফেক্ট হবে। NC 38, NC 40 যারা ব্যবহার করেন, তারা নিশ্চিন্তে এই শেইডটি নিতে পারেন। Maybelline Fit me Liquid Foundation 230 শেইডটা যারা ইউজ করেন, তাদের জন্য পারফেক্ট।
৪) একটু ট্যানড বা ডাস্কি স্কিনটোনকে গ্ল্যামারাস লুক দিতে ট্রাই করুন Light Honey শেইডটি। যাদের মিডিয়াম ডার্ক স্কিনটোন, অর্থাৎ NC 42, NC 44 ব্যবহার করেন, তারা এই শেইডটি সিলেক্ট করতে পারেন। Maybelline Fit me Liquid Foundation 320 শেইড যারা ইউজ করছেন, তাদের জন্য পারফেক্ট এটি।
এই ফাউন্ডেশনটি কেন সাজেস্ট করছি?
খুব শখ করে বিদেশ থেকে ফেমাস কালার কসমেটিকস ব্র্যান্ডের ফাউন্ডেশন এনেছিলাম। শেইড তো ম্যাচ করেই নি, আর বাইরে বের হলে ফেইস ঘামতো। আসলে আমাদের দেশের আবহাওয়ার জন্য সেটার ফর্মুলা হয়তো পারফেক্ট ছিলো না। আর স্কিনটোন তো এশিয়ানদের একটু ডিফারেন্ট, সেটা আমরা সবাই জানি! তাই শেইড ম্যাচ করতে একটু ঝামেলা হয়, তাই না? আমার এক কলিগের সাজেশনে আমি নিরভানা কালারের ফাউন্ডেশন ট্রাই করি। Light Beige শেইডটি আমার জন্য একদম পারফেক্ট।
স্কিনে সুন্দরভাবে ব্লেন্ড হয় আর একদম ন্যাচারাল ফিনিশ দেয়, আমি তো প্রথমবার ব্যবহার করেই একদম ফ্যান হয়ে গেছি! স্পেশালি বাংলাদেশি স্কিনটোন নিয়েই এই ব্র্যান্ডটি কাজ করছে। বাজারে এত বিদেশি ব্র্যান্ডের ফাউন্ডেশন থাকতে আমি কেন নিরভানা কালার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট সাজেস্ট করছি, সেটা নিশ্চয়ই জানতে চান। চলুন দেখে নেই-
- একবার অ্যাপ্লাই করলে ন্যাচারাল সফট ফিনিশ পাবেন আর দু’বার অ্যাপ্লাই করলে ফুল কভারেজ পাবেন
- ফুল কভারেজ হলেও বিল্ডেবল ফর্মুলা মানে মেকআপ লুক কেকি হবে না
- লাইট ওয়েট ফর্মুলা অর্থাৎ স্কিনে একদমই হেভি ফিল হবে না
- ব্লেমিশ বা স্কিনের যেকোনো দাগ, ডার্ক সার্কেল হাইড করে ইনস্ট্যান্টলি
- খুব সহজেই স্কিনে ব্লেন্ড হয়ে যায়
- লং লাস্টিং ও ফ্ললেস লুক দেয়
- ৪টি ভিন্ন শেইড অপশনস থাকায় ইজিলি আপনি স্কিনটোনের সাথে ম্যাচ করে শেইড বেছে নিতে পারবেন
রেগুলার ব্যবহার করতে পারবো কি?
অবশ্যই! আপনি রেগুলার লুক বা পার্টি লুক, যেকোনো সময়ই এই ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে দিনশেষে ডাবল ক্লেনজিং করতে ভুলবেন না। প্রথমে অয়েল বেইজড ক্লেনজার দিয়ে ফেইস ক্লিন করে এরপর রেগুলার ফেইস ওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে ওয়াশ করে নিন।
ফাউন্ডেশন অক্সিডাইজ করবে নাতো?
অনেক সময় দেখা যায় মেকআপ করার কিছুক্ষণ পরই সেটা কালচে হয়ে যায় বা অক্সিডাইজ করে! ভালো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট ইউজ করলেও এই সমস্যাটা ফেইস করেন অনেকে। এর কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করা আর ভালোভাবে মেকআপ ব্লেন্ড না করা। অল্প পরিমাণে প্রোডাক্ট নিয়ে ধীরে ধীরে কভারেজ বিল্ড আপ করুন। ফাউন্ডেশন ব্রাশ বা ভেজা বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে সময় নিয়ে ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করুন। ফাউন্ডেশন অক্সিডাইজ করবে না, বরং লং লাস্টিং হবে।
সেটিং পাউডার অ্যাপ্লাই করতে হবে কি?
ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন সেটিং পাউডার বা প্রেসড পাউডার দিয়ে সেট করে নেওয়া উচিত। এতে পারফেক্ট ও ফ্ললেস মেকআপ লুক পাওয়া যায় ইনস্ট্যান্টলি। আর মেল্টিং বা ফাউন্ডেশন সেপারেটিং এর চান্স থাকে না। আর আপনার স্কিন যদি অয়েলি হয়, তাহলে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাইয়ের আগে ম্যাটিফাইং প্রাইমার অ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না। আর ওপেন পোরস থাকলে বেছে নিন পোরস মিনিমাইজিং প্রাইমার।
ফাউন্ডেশনের প্যাকেজিং ও দরদাম
প্যাকেজিংটা বেশ সুন্দর, দেখলেই পছন্দ হবে। ৩০ মি.লি. পরিমাণে থাকে। কাঁচের বোতল ও পাম্প সিস্টেম, ব্যবহার করতে বেশ সুবিধা হয়। প্রোডাক্ট লিকেজের চান্স নেই, ক্যাপ দেওয়া থাকে। আমি ব্যাগেও ক্যারি করি। প্রোডাক্ট কোয়ালিটি অনুযায়ী দাম ঠিকই মনে হয়েছে। এত ভালো কভারেজ, একদম লাইট ওয়েট, দাগছোপ কভার করে ফ্ললেস মেকআপ লুক দেয় ইনস্ট্যান্টলি। আমরা স্কিনের জন্য অবশ্যই ভালো জিনিসটাই বেছে নিবো, রাইট?
সব কিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে যেকোনো বিদেশি ব্র্যান্ডের ফাউন্ডেশনকেও সমানে সমানে টক্কর দিতে পারে এটি। বাংলাদেশের এই ধরনের ব্র্যান্ড নিয়ে আমার রীতিমতো গর্ব হয়। অনলাইনে অথেনটিক বিউটি প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ