সাধারণত হারবাল কসমেটিক্স তৈরি করা হয় বিশেষভাবে, এতে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। আমাদের দেশের নারীরা অনেকাংশে নির্ভর করে ভারতীয় প্রসাধন সামগ্রীর উপর। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এসব প্রসাধনীর বেশিরভাগই থাকে নকল আর এসব নকল প্রসাধনীর বেচাকেনার মূল স্থান হল পুরান ঢাকার চকবাজার, যেখান থেকে এসব পণ্য চলে যায় ঢাকা থেকে শুরু করে সারাদেশে। এসব প্রসাধনী ব্যবহার করে প্রথম প্রথম ত্বক উজ্জ্বল হলেও ধীরে ধীরে নকল প্রসাধনী ত্বকের অনেক ক্ষতি করে। ত্বক কে রুক্ষ, কালো করে দেয়। ত্বকে মেছতা থেকে শুরু করে স্কিন ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আমাদের দেশে এ হারবাল প্রোডাক্ট হিসাবে ভারতীয় ব্র্যান্ড AYUR একটি বিশ্বস্ত নাম। দেশের রূপ সচেতন নারীরা ফেসিয়াল ক্রিম হিসেবে এক বাক্যে আয়ুরকে প্রাধান্য দেয়। পার্লারেও আয়ুর ফেসিয়াল মাসাজ ক্রিম দিয়ে যেকোনো ধরনের ফেসিয়াল করানো হয়।
কিন্তু বাজারে যেসব আয়ুর এর ফেসিয়াল ক্রিম পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই নকল। উপরে বা পাশে কমলা রঙের যে হারবাল আয়ুর মাসাজ ক্রিম দেখা যাচ্ছে, সেটা পুরাপুরি নকল। এরকম নকল আয়ুর মাসাজ ক্রিম আরও কয়েক রকম রঙের যেমন গোলাপি ,সবুজ, লাল বাজারে পাওয়া যায়, যা একটিও আসল ভারতীয় আয়ুর কোম্পানির অনুমোদিত না আর এই নকল হারবাল ক্রিম এর গায়ে অরেঞ্জ, এলভেরা, রোজ ফ্লেভার লেখা থাকে। এসব হারবাল মাসাজ ক্রিমে রং এবং ক্ষতিকারক কেমিকেল ছাড়া কিছু থাকে না। এসব কেমিকেল ত্বকের ১২ টা বাজানো ছাড়া ত্বকের কোনও উপকারেই আসে না। এসব ক্রিম এর গায়ে BSTI র কোন অনুমোদন নেই, নেই কোনও এক্সপাইরি ডেট এবং লেখা থাকে মেড ইন বাংলাদেশ। অথচ আমাদের দেশে আয়ুর এর কোনও নিজস্ব ফ্যাক্টরি পর্যন্ত নেই। বাজারে এসব নকল প্রোডাক্ট কোনও মাথা ব্যথা ছাড়া দোকানিরা বিক্রি করে যাচ্ছে। জায়গা ভেদে এসব ক্রিম এর দাম রাখা হয় ৪০-১০০ টাকা পর্যন্ত। এখন আসা যাক আসল আয়ুর হারবাল ক্রিমে। এটি বাজারে পাওয়া যায় সাদা কন্টেনারে । একমাত্র এটি ভারতীয় আয়ুর কোম্পানির তৈরি করা হারবাল মাসাজ ক্রিম। উপরে ডান পাশের ছবি টি আসল আয়ুর হারবাল ক্রিমের । এই হারবাল ক্রিম টি দুটি প্যাকেজিং এ দোকানে পাওয়া যায়। একটি ১০০ এম এল এবং আরেকটি ২০০ এম এল। ১০০ এম এল এর দাম ১০০-১২০ টাকা এবং ২০০ এম এল এর দাম ২০০-২৫০ টাকা। এই হারবাল মাসাজ ক্রিমটি অনেক ভালো। কন্টেনার খুললে গোলাপ জলের সুন্দর ঘ্রাণ নাকে এসে লাগবে। এক সপ্তাহ পর পর এই মাসাজ ক্রিম দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকের লোমকূপে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার হবে।
কেনার আগে অবশ্যই তিনটি জিনিস খেয়াল রাখবেন
১। হলোগ্রাম
২।এস্পাইরি ডেট
৩। BSTI র অনুমোদন আছে কিনা।
এই তিন টি জিনিস খেয়াল রাখলে নকল প্রসাধনী থেকে কিছু টা হলেও সাবধান থাকা যাবে।
মুলত এসব ক্রিম তৈরি করা হয় চকবাজার এবং কেরানীগঞ্জ এর নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানা গুলোতে,অনেক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। নিচের ছবিতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে রং এবং কেমিকেল মিশিয়ে এসব হারবাল প্রসাধনী তৈরি করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রায়ই এসব ফ্যাক্টরি সনাক্ত করে জরিমানা করে। কিন্তু তাতেও এসব ভেজাল মিশ্রিত নকল প্রসাধনী সামগ্রী বাজারজাত করা বন্ধ হচ্ছে না। পার্লারের কাজে ব্যবহার করা এসব হারবাল মাসাজ ক্রিম এর প্রধান মার্কেট হল গাওসিয়া। গাওসিয়ার দোকান ঘুরে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৮০ ভাগ আয়ুর মাসাজ ক্রিমই নকল। আয়ুর এর আসল মাসাজ ক্রিম পাওয়া যাবে আল্মাস এবং প্রিয় সুপার স্টোর এর যেকোনো শাখা তে।
আশা করি আর্টিকেল টি ভালো লাগবে । আর্টিকেল টি পড়ার জন্য সবাই কে ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ তাপসী