পানামের প্রাচীন আভিজাত্য এখন নতুন রূপে! কি, এই লাইনটা দেখে একটু চমকে গেলেন? ‘পানাম’ স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ডের নামটা দেখে আমারও বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছিলো! এই শহরের আছে প্রাচীন ঐতিহ্য ও আভিজাত্য। ব্র্যান্ডের ব্যাপারে একটু পরেই আসছি। রিসেন্টলি আমি ট্রাই করেছি পানামের অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ফেইস ওয়াশ। অয়েলি ও একনে প্রন স্কিনের জন্য যারা বাজেট ফ্রেন্ডলি ফেইস ওয়াশ খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি একটি বেস্ট অপশন। আজকে আমি আমার পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্স থেকে এই প্রোডাক্টটির রিভিউ শেয়ার করবো।
প্রাচীন পানামের রূপচর্চার উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন
পানাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁতে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক শহর। প্রাচীন স্থাপনা বা নিদর্শনের পাশাপাশি পানাম সিটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে রূপচর্চার অনেক গল্প। সুলতানী আমলে পানাম ছিলো সোনারগাঁর রাজধানী। সেকালে পানামের অভিজাত পরিবারের নারীরা রূপচর্চায় ব্যবহার করতেন বিভিন্ন প্রাকৃতিক সামগ্রী। সেই ঐতিহাসিক শহরের নামে ব্র্যান্ড নেইম দেখে আমার বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। আর তাদের এই কনসেপ্টটাও বেশ ইনোভেটিভ।
প্রথমেই ব্র্যান্ড নিয়ে কিছু কথা
প্রাচীন পানামের রূপচর্চার সামগ্রী ও তাদের বিউটি সেন্স থেকে ইন্সপায়ার্ড হয়ে এই ব্র্যান্ডটি ইস্টাব্লিশ হয়েছে। আমি এই প্রথম হিস্টোরিক্যাল সিটির নামে দেশীয় কোনো ব্র্যান্ড দেখলাম। প্রোডাক্ট প্যাকেজিং ও ইনগ্রেডিয়েন্ট সিলেকশনের ব্যাপারটাও বেশ প্রশংসনীয়। পানামের প্রাচীন আভিজাত্যের রেশ ধরে পানাম ব্র্যান্ড স্কিন কেয়ার রেঞ্জে নিয়ে এসেছে দুইটি ফেইস ওয়াশ। একটি হচ্ছে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ফেইস ওয়াশ ও আরেকটি হচ্ছে বিটরুট ফেইস ওয়াশ। দেশীয় ব্র্যান্ড হওয়াতে বাজেটের মধ্যেই বেস্ট কোয়ালিটি এনশিওর করে পানাম।
পানামের ফেইস ওয়াশের বিশেষত্ব কী?
ব্র্যান্ড নিয়ে তো প্রথমেই জেনে নিলাম, এবার আসি এই ফেইস ওয়াশের রিভিউতে। এর স্পেশালিটি আসলে কী? বাজারে এত ফেইস ওয়াশ আছে কিন্তু এটা কেন আমি পারসোনালি রেকমেন্ড করছি, সেটা জানতে চান? চলুন এক নজরে জেনে নেই এই ফেইস ওয়াশটির বিশেষ দিকগুলো কী-
- বাজেট ফ্রেন্ডলি
- অ্যালকোহল ও প্যারাবেন ফ্রি
- জেন্টল ফেইস ওয়াশ তাই টিনেজাররাও ব্যবহার করতে পারবে
- কোনো ধরনের ইরিটেশন হয় না
অয়েলি ও একনে প্রন স্কিনের জন্য অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
আমার মতো যাদের স্কিনে পিম্পল বা র্যাশ হওয়ার টেন্ডেন্সি আছে, তাদের জন্য এই ফেইস ওয়াশটি হাইলি রিকমেন্ডেড। কেননা এতে আছে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার! এই উপাদানটির হেলথ বেনিফিট সম্পর্কে আমরা সবাই জানি, কিন্তু স্কিনের জন্য এটা কতটা বেনিফিসিয়াল সেটা অনেকেই জানেন না। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
১) পি এইচ লেভেল রিস্টোর করে
স্কিনের আপার ব্যারিয়ার প্রোটেক্ট করে পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার দারুণ কার্যকরী। এক্সেস সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোল করে এটি স্কিনের অতিরিক্ত তেলতেলেভাব দূর করে।
২) একনে ব্রেকআউটস কমিয়ে আনে
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টিজ, যা একনে বা পিম্পলস প্রিভেন্ট করে।
৩) পোরস ক্লিন রাখে
এই উপাদানটিতে আছে অ্যাসিটিক অ্যাসিড ও আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড, যা মাইল্ডলি স্কিন এক্সফোলিয়েট করে। এটি ক্লগড পোরসকে আনক্লগ করে। ত্বকের গভীর থেকে ডার্ট, ইমপিওরিটি ও পল্যুশন দূর করে।
টেক্সচার ও স্মেল
গ্রিন অ্যাপেলের মতো মাইল্ড ও রিফ্রেশিং ফ্রেগ্রেন্স আছে, যেটা আমার খুবই পছন্দের। জেল টাইপের টেক্সচার, কোনো বিডস থাকে না। একদমই মাইল্ড, প্রথমবার ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবেন।
প্যাকেজিং ও দরদাম
এর প্যাকেজিংটা বেশ আই ক্যাচি। পানামের ফেইস ওয়াশটিতে লিক প্রুফ ওভাল শেইপের ক্যাপ থাকে। ব্যাগেও ক্যারি করা যায় খুব সহজে। আর বেস্ট পার্ট হচ্ছে এটি খুবই রিজেনেবল। স্টুডেন্টদের বাজেট নিয়ে ইস্যু থাকে, সেক্ষেত্রে এই ফেইস ওয়াশটি হতে পারে ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট চয়েস।
কীভাবে ব্যবহার করতে হবে?
হাতের তালুতে অল্প ফেইস ওয়াশ নিয়ে ভেজা মুখে আলতোভাবে ম্যাসাজ করলেই হবে, একদমই সিম্পল প্রসেস। যেভাবে ক্লেনজার ব্যবহার করতে হয়, সে রকমই আর কী! টিনেজ থেকে শুরু করে ছেলে-মেয়ে সবাই এটি ব্যবহার করতে পারবে। সব ধরনের ত্বকেই স্যুট করবে, কিন্তু অয়েলি ও একনে প্রন স্কিনের জন্য এটি ভালো কাজ করে। ফেইস ওয়াশ দিয়ে ত্বক ক্লিন করে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে।
কেমন ছিল আমার এক্সপেরিয়েন্স?
ব্র্যান্ডের নাম দেখে ইন্টারেস্টেড হয়ে প্রোডাক্টটি পারচেজ করলেও প্রোডাক্টের কোয়ালিটি ও প্যাকেজিং দেখে আমি খুবই ইমপ্রেসড। গরমে আমার স্কিন কিছুক্ষণ পর পরই তেলতেলে হয়ে যায়। সেই সাথে মাঝে মধ্যে একনে ব্রেকআউটস এর প্রবলেম তো হয়ই। তাই আমি অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ফেইস ওয়াশটি ট্রাই করেছি।
১) এটি ক্লেনজার হিসাবে খুবই ভালো। ডার্ট, জার্মস, তেলতেলেভাব দূর করে ফেইস ক্লিন করে নিমিষেই। আমি রেগুলার ২ বার, সকালে ও রাতে এটি ব্যবহার করি।
২) এর সুইট আর রিফ্রেশিং স্মেল আমার বেশ ভালো লাগে। প্রতিবার ওয়াশের পর স্কিন ব্রাইট ও ফ্রেশ দেখায়।
৩) এটি লাইট ওয়েট ও ট্রাভেল ফ্রেন্ডলি। আমি বাইরে কোথাও গেলে ইজিলি ব্যাগে ক্যারি করতে পারি।
এই ছিল আমার ওভারঅল এক্সপেরিয়েন্স। আমি তো ডেফিনেটলি আবার পারচেজ করবো। এরপর বিটরুট ফেইস ওয়াশ ট্রাই করবো ভাবছি। আপনাদের এক্সপেরিয়েন্স যদি থাকে, তাহলে অবশ্যই জানাবেন কমেন্ট সেকশনে। সেলফ কেয়ারের প্রোডাক্ট পারচেজ করতে আমার ভরসার জায়গা হচ্ছে সাজগোজ। আপনারা চাইলে সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ, যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত সম্ভারে অবস্থিত, সেখান থেকে কিনতে পারেন অথেনটিক প্রোডাক্ট আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন।
ছবি- সাজগোজ