ড্রয়িং রুমের কোনায় অথবা বেডরুমের বিছানার পাশে একগুচ্ছ ফুল দেখতে সবারই ভালো লাগে। আর সেটা থেকে যদি তাজা সুগন্ধ আসে তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু ঝামেলার ব্যাপার হল রোজ রোজ ঘরে তাজা ফুল রাখাটা হয়ত সবার জন্য সম্ভব নয়। কিন্তু বাঙালি মেয়েরা ঘর সাজাতে পছন্দ করে এটা সর্বজনবিদিত। আবার এখন বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন রকম প্লাস্টিকের ফুল সেগুলো দিয়েও অনেকেই ঘর সাজায়। কিন্তু কেউ যদি নিজের বানানো ফুল দিয়েই ঘরটা সাজিয়ে তাক লাগিয়ে দেয় সবাইকে তাহলে কেমন হবে?? আমাদের নিজেদের ঘরেই অনেক ফেলনা জিনিস আছে যেগুলো দিয়ে আমরা সহজেই ঘর সাজানোর উপকরণ বানিয়ে ফেলতে পারি, আমি আজকে তাই দেখাবো আপনাদের। যদিও ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে ধার করা আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে। তাহলে শুরু করা যাক –
সাদা ডেইজি ফুলঃ
যা লাগবেঃ
০১. সাদা কাগজ
০২. আঠা
০৩. সরু তার
০৪. সবুজ, হলুদ ও বাদামি কাগজ
০৫. কাঁচি ও টিস্যু পেপার
প্রথমেই ফুলের সাইজের জন্য দেখে নিন আপনার ফুলদানির আকৃতি। লম্বা হলে বড় সাইজের ফুল বানানোর জন্য বড় সাইজের কাগজ নিন আর ছোট হলে ছোট সাইজের কাগজ। নরম ফুল করতে চাইলে পাতলা ট্রেসিং পেপারও ব্যবহার করতে পারেন। এবার ছবির মত করে কাগজ কাটুন। খেয়াল করুন কাটা কাগজের মাঝে মাঝে কিন্তু কিছু পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে এবং পাপড়ির ডগা বানানোর জন্য গোলাকৃতির আকার দেয়া হয়েছে। এই অংশ টুকু আপনি চাইলে সাদা বা যেকোনো রঙের কাগজ দিয়ে করতে পারেন। আরেক্তু ক্রিয়েটিভিটি দেখাতে চাইলে খবরের কাগজ দিয়েও করা যায়।
ফুলের দণ্ড বানানোর জন্য নিন সরু তার এবং সেখানে সবুজ বা বাদামি পাতলা কাগজ আঠা দিয়ে পেঁচিয়ে নিন। এই কাগজ না থাকলে টিস্যু পেপার মার্কার দিয়ে রঙ করেও ব্যভার করতে পারেন। ফুলের মাঝের অংশ বা ওভারি বানাতে হলুদ পাতলা কাগজ প্রথমে একটা বল বানিয়ে সেটা দণ্ডের ডগায় লাগিয়ে আরেকটা কাগজ আঠা দিয়ে পেঁচিয়ে দিন। রঙ্গিন কাগজ না থাকলে আঠা শুকালে হলুদ জল রঙ দিয়ে একটু রঙ করে নিতে পারেন।
এবার আসা যাক ফুল বানানোর ধাপে। কেটে রাখা পাপড়ির কাগজটি এবার ফুলের মাঝখানের অংশ যে বানিয়েছেন তার চারপাশে একটু একটু করে প্যাঁচাতে থাকুন, তবে প্রতিবার পেচানোর আগে একটু করে আঠা লাগিয়ে নিবেন। ফুল প্যাঁচানো শেষ হয়ে গেলে পাপড়ি গুলোকে হাত দিয়ে চেপে চেপে একটু পেছনের দিকে গোলাকৃতির শেপ দিন ছবির মতো। সবুজ কাগজ একটু লম্বা করে কেটে ডগার দিকে ভি শেপ করে পাপড়ির নিচে আটকে দিলেও হয়ে গেল পাতা আর আপনার ফুল বানানোও শেষ। এবার ১০/১২ টী ফুল তৈরি করে সাজিয়ে ফেলুন আপনার ফুলদানী।
একই পদ্ধতিতে নিচের ছবি গুলো দেখে বানিয়ে ফেলতে পারেন আরেক ডিজাইনের ফুল।
এখানে কাগজটি রেনডমলি অনেকগুলো লম্বা শেপে কাটা হয়েছে।এবং সরু তারে সরাসরি প্যাঁচানো হয়েছে।
প্যাঁচানো হয়ে গেলে সাদা টিস্যু পেপার দিয়ে ফুলের অংশ আর তারকে এ্যটাচ করে দিতে হবে আঠা দিয়ে এবং সবুজ পেপার দিয়ে আবার পেঁচিয়ে দিতে হবে যেন সাদা কাগজ না দেখা যায়। তারপরে হাত দিয়ে চেপে ফুলের পাপড়ি গুলোকে ছরিয়ে দিলেই হয়ে গেল চমৎকার একটি ফুল। এই ফুলগুলো বেশি পরিমাণে ফুলদানিতে রাখলে ভালো দেখায়।
তাহলে আর দেরি করে লাভ নেই, কয়দিন পরেই ঈদ। নিজের তৈরি ফুল দিয়ে ঘর সাজিয়ে সবাইকে চমকে দিন। ঘর সাজানোর পাশাপাশি কারুশিল্পী হিসেবেও তকমা জুটে যেতে পারে।
লিখেছেনঃ ফোয়ারা ফেরদৌস
ছবিঃ গ্রসগ্রেইনফেবুলাস.ব্লগস্পট.কম