ছুলি সমস্যা | চর্মরোগটির কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায় জানেন কী?

ছুলি সমস্যা | চর্মরোগটির কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

ছুলি সমস্যা - shajgoj.com

এই বৃষ্টি আর গরমে নানা রকম ফাঙ্গাল বা ছত্রাকজনিত রোগ অনেক বেশি দেখা যায়। ফাঙ্গাল ইনফেকশন (fungal infection) আমাদের বডি সারফেস (body surface) বা ত্বকেই বেশি হয়ে থাকে। এমনই একটি ফাঙ্গাল বা ছত্রাকজনিত রোগের নাম ছুলি। একে অনেক সময় স্থানীয়ভাবে ছইদ বা ছউদ ও বলা হয়। আসুন ছুলি সমস্যা সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেই!

ছুলি সমস্যা হওয়ার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধসমূহ

ছুলি - shajgoj.com

Sale • Face Wash, Acne Treatment, Dull Skin Treatment

    ছুলি একটি চর্মরোগ। ইংরেজী নাম পিটাইরিয়াসিস ভার্সিকোলার (pityriasis versicolor) বা টিনিয়া ভার্সিকালার (Tinea versicolor), গ্রীষ্মকালে বেশি হয়। চামড়ায় ঘাম বেশি জমা হলে ম্যালাসেজিয়া ফারফার (প্রাক্তন নাম পিটাইরোস্পোরাম অরবিক্যালার) নামের ঈস্ট খুব বৃদ্ধি পায়। এই ঈস্ট সাধারণ চামড়াতেও থাকতে পারে কিন্তু এত বেশি না। এরা ত্বকে কোন প্রকারে অসুবিধা না করেই পরজীবী হিসেবে অবস্থান করে এবং ত্বক নিঃসৃত তেল ও মৃত ত্বকের কোষকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। যদি কোন কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে পরিমাণ বেড়ে যায়, তখনই রোগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

    কারণ

    ১. গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়া

    ২. প্রচুর ঘামা

     

    ৩. তৈলাক্ত ত্বক

    ৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে

    ছুলি হয় বহু দিন থেকে অ্যান্টি-বায়োটিক গ্রহণে - shajgoj.com

    ৫. বহু দিন থেকে অ্যান্টি-বায়োটিক খেলে হতে পারে

    ৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে সংক্রমণ হতে পারে

    ৭. কারও হয়েছে, এ রকম ব্যক্তির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ থাকলে বা সংস্পর্শে এলে সংক্রমণ হতে পারে

    ৮. তরুণ বয়সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি

    ৯. সাধারণত ট্রপিক্যাল এলাকাতে আক্রান্ত বেশি হয়

    লক্ষণ

    ছুলি সমস্যা হলে সাধারণত ঘাড়ে বা পিঠে ছোট ছোট উপবৃত্তাকার ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়। ফর্সা ত্বকে গাঢ় (সাধারণত গোলাপি,খয়েরী), শ্যামলা ত্বকে হালকা রঙের। অনেকগুলো দাগ একসাথে মিশে বড় দাগের সৃষ্টি করতে পারে। গরম বাড়লে চুলকানি বা জ্বালাভাব থাকে। যেখানে বেশি হয়, সেখানে চামড়া উঠে যেতে পারে। শীতকালে ছুলি নিজে থেকেই কমে যায়।

    ছুলি সমস্যা সাধারণত কোথায় হয়?

    শরীরের বুক, পিঠ, গলা এবং হাতে বেশি দেখা দিয়ে থাকে। কোন কোন সময় বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে মুখেও দেখা দিতে পারে। এছাড়া অন্যান্য অংশেও হতে পারে।

    কিভাবে ছুলি সমস্যা নির্ণয় করা যায়?

    সাধারণত আক্রান্ত অংশ দেখেই রোগ নির্ণয় করা যায়। এছাড়া ত্বকের ফাঙ্গাস পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়।

    চিকিৎসা কী?

    চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরী। আপনার যদি ছুলি মনে হয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে যান এবং নিশ্চিত হয়ে ওষুধ সেবন করুন। ছুলি সমস্যার চিকিৎসা কেমন হতে পারে চলুন দেখে নেই-

    ১) সাধারণত সেলেনিয়াম সালফাইড কিংবা ছত্রাকনাশক অন্যান্য ওষুধ, সাবান বা শ্যাম্পু বা ক্রিম ব্যবহার করতে বলা হয়।

     

    ২) মুখে খাওয়ার জন্য ছত্রাকনাশক ওষুধ দেয়া হয়।

    ৩) প্রপিওলিন গ্লাইকল/সোডিয়াম থায়োসালফেট দেয়া হয়।

    একেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে একেক রকম চিকিৎসা পদ্ধতি। চিকিৎসা করলে অধিকাংশ সময়েই আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়।

    ওষুধ ব্যবহারবিধি

    প্রথমে গোসল করে গা শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর ছত্রাকনাশক ক্রিম দিনে ২ বার লাগাতে হবে কমপক্ষে ২ সপ্তাহ। শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এসব কিছুই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে।

    ছুলি সমস্যা উপশমে যত্ন

    ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে চলতে হবে। কিভাবে করতে পারেন তা নিচে বলা হলো-

    ১. নিয়মিত ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করতে হবে।

    ২. গ্রীষ্মকালে সুতির জামাকাপড় পরতে হবে।

    ৩. যতদূর সম্ভব কম ঘামার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য রোদে বেশি যাওয়া যাবে না।

    ছুলি সমস্যা উপশমে মেনথল যুক্ত সাবান - shajgoj.com

    ৪. মেনথল যুক্ত সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে।

    ৫. বাচ্চাদের পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

    ৬. তৈলাক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলতে হবে।

    ছুলি সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

    সাধারণভাবে সবারই নিজের যত্ন নেয়া উচিত যাতে শুধু ছুলিই নয়, অন্যান্য ছত্রাকজনিত রোগও যেন না হয়। সাধারণ কেয়ার নেয়া আপনারা সবাই জানেন। তবুও বলছি-

    ১. গরমকালে পাতলা ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নেয়া জরুরী

    ২. গরমে শরীরে ঘাম ও তেল নিঃসরিত হয়ে থাকে, যা ফাঙ্গাসের বৃদ্ধির সহায়ক, গোসল এবং সাবান ব্যবহারের মাধমে ঘাম ও তেল দূর করতে হবে।

    ৩. গোসলের পর গা ভালো করে শুকানো। তেমনি ঘর্মাক্ত অবস্থায় বেশিক্ষণ না থাকা।

     

    ৪. রোদ থেকে বাঁচার জন্য সানব্লক এবং ছাতা ব্যবহার করা।

    ৫. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা।

    ৬. দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়া।

    ৭. ভালো ব্র্যান্ড-এর প্রসাধনী ব্যবহার করা।

     

    ৮. পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।

    ৯. প্রচুর পানি পান করা।

    ১০. সর্বাঙ্গীণ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।

    এভাবেই ছুলি চিনুন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন এবং সুস্থ থাকুন!

     

    ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ

    185 I like it
    22 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort