বহুদিন আগে চুলের শ্যাম্পু কন্ডিশনার-এ সবসময় সিলিকন অ্যাডেড প্রোডাক্টের ব্যাড ইফেক্ট নিয়ে লিখেছিলাম। রেগ্যুলার সিলিকন ইউজ করলে হেয়ারের শাইন এবং হেলথ লং টার্মে খুবই বাজেভাবে নষ্ট হয়। আপনাদের সুবিধার্থে লেখাটা আরেকবার দেখে নিতে পারেন এখানে, সাথে কথা হবে প্লাম অলিভ হেয়ার মাস্ক নিয়ে।
কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে মার্কেটে অ্যাভেইলেবল প্রায় সব কন্ডিশনার বা মাস্কই আমাদের এই “১ ধোয়াতেই সিল্কি চুল!!”-এর মতো আকাশ কুসুম স্বপ্নটা সত্যি করতে পারবে না যদি না তাতে গাদা গাদা সিলিকন দেয়া না থাকে…!!
[picture]
কিন্তু ঐযে! সিলিকনতো আর রোজকার হেয়ার কেয়ারে ইউজ করলে আমাদের ফিউচারের চুলটা আর অমন সিল্কি সিল্কি থাকবে না, তাই না? তাই সুযোগ থাকলে সিলিকন ফ্রি কন্ডিশনার আর হেয়ার মাস্কই ইউজ করা উচিত রেগ্যুলার হেয়ার কেয়ারের জন্য; প্লাম অলিভ ম্যাকাডেমিয়া মেগা ময়সচারাইজিং মাস্ক তেমনই একটি হেয়ার মাস্ক।
প্লাম অলিভ হেয়ার মাস্ক কেন ভালো?
১. এটা কিন্তু শুধু একটা কন্ডিশনার নয়! এতে আছে ম্যাকাডেমিয়া ,অলিভ অয়েল এবং শিয়া বাটার! এই অসাধারণ উপাদানগুলো ড্রাই, রাফ, ড্যামেজড চুলে অ্যাড করে ময়েশ্চার।
২. এই মাস্কের ভিটামিন বি৫ চুলে দেয় একটা স্পেশাল প্রোটেকশন শিল্ড যা রোদের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করে।
৩. এটা কেমিক্যালি ট্রিটেড চুলের জন্য একটা পারফেক্ট চয়েস।
৪. আর এই মাস্কটা সপ্তাহে ১-২ বার ইউজ করাই যথেষ্ট!
৫. আর এটা কি বলেছি যে প্লাম মেগা ময়েশ্চারাইজিং মাস্ক হচ্ছে একটা ৭ ফ্রি ফর্মুলা?
- এটা সিলিকন ফ্রি (এটা বলেছি আগেই)।
- প্যারাবেন ফ্রি।
- সালফেট ফ্রি।
- অ্যালকোহল ফ্রি , তাই হেয়ার ড্রাই হবে না!
- জিঙ্ক ফ্রি, স্ক্যাল্প-এ কোনও ইরিটেশন হবে না।
- ফ্যালেটস ফ্রি, তাই কোনও টক্সিক সাইড ইফেক্ট হবে না।
- প্রোপাইলিন গ্লাইকল ফ্রি, তাই লং টার্ম ইউজেও কোনও প্রবলেম হবে না।
উপাদান
মাস্কটি ঠিক কী কী দিয়ে তৈরি তা খুব ক্লিয়ারলি প্যাকেজে লেখা আছে। নিজেই দেখে নিন!
প্যাকেজিং
মাস্কটা আসে একটা বড় সাইজের সাদা জারে করে। আর ক্যাপটা স্ক্রু ক্যাপ। অনেকের কাছে ট্র্যাভেল-এর জন্য এই প্যাকেজিং-টা একটু বেশিই বড় মনে হতে পারে। কিন্তু পরিমাণ হিসেবে ঠিক আছে। এই জারে আপনি পাবেন ২৫০ গ্রাম প্রোডাক্ট। যা আমার কোমর সমান চুলের ৫-৬ মাসের ইউজের জন্য যথেষ্ট! চুল ছোট হলে আরও বেশিদিন ইজিলি এক জার মাস্কে চলে যাবে।
দাম ও প্রাপ্তিস্থান
পাওয়া যাবে যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার-এ অবস্থিত শপ.সাজগোজ.কম-এর ফিজিক্যাল শপদু’টোতে। তাদের অনলাইনে অর্ডার করেও কিনতে পারবেন। ২৫০ গ্রামের দাম পড়বে ১৮৬২/- টাকা।
প্লাম অলিভ হেয়ার মাস্ক কিভাবে ইউজ করব?
প্লাম মেগা ময়েশ্চারাইজিং মাস্কের রঙ একদম সাদা। এধরনের পোস্ট শ্যাম্পু হেয়ার মাস্ক সাধারনত শ্যাম্পুর পর জাস্ট চুলের এক্সেস পানি একটু নিংড়ে নিয়ে ইউজ করতে হয়। আর অবশ্যই একদম পুরো চুলে এটা দেবার দরকার নেই। মাথার সব ভেজা চুল একদিকে এক কাঁধের উপরে নিয়ে আসুন। এবার কানের ঠিক নীচ থেকে মাস্ক মাখা স্টার্ট করুন। আমার চুল বেশি ড্রাই হওয়ায় আমি মোটামুটি এক টেবিল চামচ সাইজ মাস্ক ইউজ করি কানের নীচ থেকে চুলের আগা পর্যন্ত কভার করতে। আপনার চুলের প্রয়োজন এবং ঘনত্ব ভেদে মাস্কের পরিমাণ কতটুকু হবে সেটা আপনি একবার ইউজ করলেই বুঝতে পারবেন।
আমি প্রথম কয়েকবার এই মাস্কটা চুলে দিয়ে ১৫ মিনিট রেখে তারপর পরিস্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলেছি। এরপর থেকে সময় সংকুলান না হওয়ায় ৫-৭ মিনিট করে চুলে রাখি। এতেও খুব ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়। চুল হয় সফট, ম্যানেজেবল আর সিল্কি। আর চুলে মাস্কের সফট স্মেলটা ২ দিনের মতো থাকে!
তাই সপ্তাহে ২ বার শ্যাম্পুর পর ৫-৭ মিনিট চুলে এই মাস্কটা ইউজ করে দেখুন আপনার চুলে এটা কেমন ইফেক্ট দেয়।
কিছু ভালো আর খারাপ দিক
- প্লাম অলিভ হেয়ার মাস্ক একদম সেইফলি আপনাকে সিল্কি জটামুক্ত ম্যানেজেবল চুল দিতে পারবে।
- এতে ক্ষতিকর কোনও উপাদান নেই।
- যেকোনো সিলিকন হেয়ার মাস্ক বা সিরামের মতই কার্যকরী।
- রিবনডেড বা কালার করা চুলের জন্য এর চেয়ে ভালো অপশন আর কিছু হতেই পারে না!!
- আমার চোখে প্লাম মেগা ময়েশ্চারাইজিং মাস্কের কোনও খারাপ দিক চোখে পড়ে নি।
আশা করি আপনারাও এই চমৎকার প্রোডাক্টটি ট্রাই করবেন এবং কেমন লাগলো সেটা আমাদের জানাবেন। আজ এটুকুই!
ছবি- সাজগোজ