প্রত্যেকেই তাদের শরীরে দৃঢ়, সুন্দর ও টানটান ত্বক চান। কিন্তু স্বভাবতই বাস্তবে ত্রুটিহীন হওয়া সম্ভব না। ধারণাটা হলো, ত্রুটিহীন হওয়া না বরং যেভাবে রয়েছে সেইভাবেই খুঁতগুলো মেনে নেওয়া এবং ত্বক যেন সুস্থ থাকে তা সুনিশ্চিত করা। আর টানটান ত্বক স্বভাবতই সুস্থ দেখায়। তাই ত্বকের যত্ন নিতে যে তেলগুলির ব্যবহারে আপনার ত্বককে টানটান করে তুলতে পারবেন, সেই তেলগুলির একটি লিস্ট এখানে আমরা শেয়ার করবো আজ। টানটানে দৃঢ় ত্বক আমরা সকলেই চাই। মোটের ওপর ঢিলা ত্বক মোটেই আরামদায়ক নয় এবং দেখতেও অপ্রীতিকর। আনন্দের বিষয় এই যে, এই তেলগুলো আপনি আপনার ঢিলা ত্বককে ঠিক করতে ব্যবহার করতে পারবেন।
এতে কিছুটা সময় নেবে, কিন্তু শেষমেষ এটি আপনার ত্বককে সামগ্রিকভাবে টানটান হওয়ার দিকে নিয়ে যাবে। এটি শুধু আপনার ত্বককে টানটানই করবে না বরং আপনার ত্বককে মসৃণ, কোমল ও উজ্জ্বলও করে তুলবে। এখন একসাথে এতগুলো উপকার কে বা না চাইবে? তাই এই তেলগুলো ব্যবহার করুন ও ধৈর্যশীল হওয়ার কথা মনে রাখুন, কারণ কোন ঘরোয়া প্রতিকারই রাতারাতি ম্যাজিক করতে পারে না। এর জন্য সময় ও ধৈর্যের প্রয়োজন এবং কোন কিছু যদি আপনি প্রথমবার ব্যবহার করতে যান তবে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়ার কথা মনে রাখবেন।
এবার চলুন আর একটি কথাও না বাড়িয়ে ত্বকের যত্ন নিতে তেলগুলো গুণাগুণ সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক।
ত্বকের যত্ন নিতে ১৫ টি তেল
১. নারকেলের তেল
ত্বকের যত নিতে নারিকেল তেলের জুরি নেই। এমন একটা ত্বকের সমস্যা নেই যা কিনা নারকেল তেল সমাধান করতে পারে না। টানটানে ত্বক পেতে পুরো শরীরে নারকেলের তেল মালিশ করুন। ভাল ফল পাওয়ার জন্য দিনে দুইবার এই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করুন।
২. ক্যাস্টর অয়েল
ক্যাস্টর অয়েল স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ যা কোলাজেন তৈরিতে সত্যিই সাহায্য করে। এটি একটি কার্যকরী উপায় যার সাহায্যে আপনি ত্বককে টানটান রাখতে পারবেন।
৩. তিলের তেল
তিলের তেল জিঙ্কে সমৃদ্ধ, যা কোলাজেনের (collagen) উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য। এটি ত্বককে টানটান করতে সাহায্য করে। ঢিলে ত্বকের থেকে নিস্তার পেতে এই তেলকে শরীরে ও মুখের জন্য ব্যবহার করা যায়।
৪. অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল ভিটামিন ই তে সমৃদ্ধ, যা সুস্থ ত্বকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং ব্লক। সেরা ফলাফলের জন্য প্রতিদিন অন্তত একবার করে আপনার ত্বক অলিভ অয়েল দিয়ে মাসাজ করুন।
৫. আমন্ড অয়েল
আমন্ড অয়েল আরেকটি তেল, যা ভিটামিন ই তে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (Anti-oxidant), যা ত্বকীয় টিস্যুকে ভালো রাখে, ঢিলে ও ঝুলে পড়া ত্বককে মেরামত করতে সাহায্য করে।
৬. আরগান অয়েল
ত্বকের যত্ন নিতে আরগান অয়েল অন্যতম একটি উপাদান। কারন এতে আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ই, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন, যা ত্বককে হাইড্রেট (Hydrate) করে।
৭. গ্রেপসিড অয়েল (দ্রাক্ষা বীজ তেল)
এতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস (Anti-oxidants)। এটি অ্যান্টি-এজিং (Anti-Aging) তেল হিসেবে স্কিন-এ খুব ভালো কাজ করে। স্কিনকে নরম করে টানটান রাখতে সহায়তা করে। দারুণ একটি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এই তেলটি।
৮. ক্যামেলিয়া সিড অয়েল
এই তেলে আছে ওমেগা (Omega) ৬ ও ৯, যা ত্বককে স্মুদি ও সফট করে এবং হাইলি ময়েশ্চারাইজড রাখে।
৯. ক্যারট সিড অয়েল
গাজরের গাছের শুকনো বীজ থেকে তৈরি এই তেল ত্বকের রিঙ্কেল কমিয়ে ঝুলে যাওয়া রোধ করে। ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমায়।
১০. ল্যাভেন্ডার অয়েল
এই তেল এনভায়রনমেন্টাল পল্যুশন (Environmental Pollution) ও ইউভি রে (UV RAY) থেকে ত্বককে রক্ষা করে প্রিম্যাচিউর এজিং থেকে ত্বককে বাঁচায় এবং ত্বককে স্মুদ করে।
১১. টি ট্রি অয়েল
স্কিনকে অ্যাকনে ও ব্ল্যাকহেডস মুক্ত রাখে। ত্বককে কোমল ও মসৃণ রাখে।
১২. সানফ্লাওয়ার সিড অয়েল
এই তেলে আছে ভিটামিন ই, যা ত্বককে নারিশ ও হাইড্রেট করে দারুণভাবে।
১৩. রোজমেরি অয়েল
ত্বকের পুরানো সেল দূর করে নতুন সেল তৈরি করতে সাহায্য করে।
১৪. রোজ অয়েল
এতে আছে ভিটামিন এ, সি, ডি ও ই ত্বকের জালা-পোড়া রোধ করে, লালচে ভাব দূর করে এবং ত্বককে স্মুদ করে।
১৫. লেমনগ্রাস অয়েল
এই তেল একটি অ্যাস্ট্রিনজেন্ট (Astringent) এর মত কাজ করে ত্বকের পোরস ও অতিরিক্ত তেল কমায় এবং মসৃণ ও টানটান ত্বক পেতে সহায়তা করে।
এইতো জেনে নিলেন কয়েকটি খুব প্রয়োজনীয় হারবাল তেলের কথা। আসলে প্রকৃতি আমাদের চারপাশটা এত কার্যকরী উপাদানে সাজিয়ে রেখেছে, যদি সেগুলোর সঠিক ব্যবহার করা যায় তবে আর ত্বকের যত্নের জন্য ম্যান-মেইড কেমিকেল ভরা প্রোডাক্ট কেনার প্রয়োজন পড়ে না।
তাই ত্বকের যত্নে এবার প্রাকৃতিক উপাদানগুলোও রাখুন পছন্দের রুটিনে।
ছবি – সংগৃহীত: তামিল.সামায়াম.কম, ওআরগিপিক.কম, পিনটারেস্ট.কম,হেলথলাইন.কম, নিউপর্টি.কম, ১জুম.মি