ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে আমাদের কতই না আয়োজন! স্কিনের ব্রাইটনেস ফিরিয়ে আনতে কোন প্রাকৃতিক উপাদান কার্যকরী ভূমিকা রাখে, সেটা জানা আছে কি? স্বাস্থ্যোজ্বল ত্বক পেতে একটি বড় বাঁধা হলো ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব। বাংলাদেশের মত নাতিশীতোষ্ণ দেশে গরমের প্রাদুর্ভাবের কারণে আমাদের সবাইকেই ত্বকের তৈলাক্তভাব নিয়ে কম বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়! আমরা অনেকেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রূপচর্চা করতে পছন্দ করি আর মনে মনে আশা করতে থাকি “আহা! যদি একটা প্যাকেই সব উপকারিতা একই সাথে পেয়ে যেতাম!” সব না হলেও কিছু কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের প্যাকে একই সাথে কয়েক ধরনের উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। এমনই একটি কার্যকরী উপাদান হচ্ছে মুলতানি মাটি। ত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এই প্রাকৃতিক উপাদান কতটা বেনিফিসিয়াল এবং কীভাবে প্যাক বানিয়ে এটি ব্যবহার করা যায় সেটাই এখন আমরা জানবো।
ত্বকের যত্নে মুলতানি মাটি
ত্বকের যত্নে মুলতানি মাটির ব্যবহার একেবারে নতুন নয় তা আমরা সবাই জানি। দাদি-নানীদের কাছ থেকে পাওয়া রূপচর্চার টোটকাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কথা আমরা শুনে এসেছি, তাই না? মুলতানি মাটির কথা প্রাচীন আয়ুর্বেদেও পাওয়া যায়। কিন্তু এর কার্যকারিতা সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই ভালোভাবে জানি না। স্কিন কেয়ারে মুলতানি মাটির উপকারিতাগুলো কী কী সেটা এখন আপনাদের জানাবো-
- ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব দূর করে
- ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস পরিষ্কার করতে সাহায্য করে
- কালো ছোপ ছোপ দাগ আর ব্রণের স্পট দূর করতে কার্যকরী
- ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে আর ডেড স্কিন সেলস দূর করে
- সানট্যান কমাতে সাহায্য করে
ত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে মুলতানি মাটি
আজকাল আমরা সকলেই স্কিন কেয়ার রুটিন কম বেশি মেনে চলার চেষ্টা করি। সপ্তাহে ১/২ দিন একটু ফেইস প্যাক বা মাস্ক না লাগালেই নয়, তাই না? সেক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদানের প্রতি আমরা সবাই একটু দুর্বল, যেহেতু এসকল উপাদানে সাইড ইফেক্টস বা রিঅ্যাকশনের সম্ভাবনা কম থাকে! ঘরোয়া রূপচর্চায় সপ্তাহে অন্তত একবার ফেইস মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। কীভাবে প্যাক বানিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়, সেটা দেখে নিন তাহলে। ত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে ও উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এই ঘরোয়া প্যাকগুলো ট্রাই করতে পারেন।
১) মুলতানি মাটির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে মোটামুটি ঘন পেস্ট বানিয়ে নিন। পেস্টটি মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে প্রয়োজনমতো লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে এ পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
২) মুলতানি মাটির সাথে লিকোরিস পাউডার আর টকদই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। একইভাবে মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে আলতো করে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে তুলে নিন। এ পদ্ধতিতে মুলতানি মাটি ব্যবহার করলে ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর হবে। মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে এই প্যাকটি দারুণ কাজ করে।
৩) সানট্যান কমাতে অ্যালোভেরা জেলের সাথে মুলতানি মাটির প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যালোভেরা জেল ও মুলতানি মাটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে ১৫/২০ মিনিট ফেইসে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলবেন। এতে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও কোমল।
রাজকন্যা মুলতানি মাটি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা
মার্কেটে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মুলতানি মাটি পাওয়া যায়। কিন্তু খোলা প্যাকেট বা নাম না জানা ব্র্যান্ডকে বিশ্বাস করতে ভয় তো হয়! প্রাকৃতিক উপাদানের ক্ষেত্রে তো ব্যাপারটা আরো বেশি জরুরি হয়ে যায়। সাজগোজে যেহেতু অথেনটিক প্রোডাক্টস পাওয়া যায় তাই আমার সবসময়ই ভরসা শপ.সাজগোজ.কম। এখানে খুঁজে পেয়ে গেলাম রাজকন্যা মুলতানি মাটি। এক কথায়, বেস্ট একটি প্রোডাক্ট এটি! আমি ব্যবহার করেছি মুলতানি মাটির সাথে লিকোরিস পাউডার আর টকদই মিশিয়ে। রাজকন্যা ব্র্যান্ডের লিকোরিস পাউডারটাও সাজগোজ থেকেই পেয়ে গিয়েছিলাম ভাগ্যক্রমে।
কী কী বেনিফিট পেয়েছি?
প্যাকটি ব্যবহার করে মুখ ধুয়ে নেয়ার পর স্কিন খুবই ফ্রেশ আর ব্রাইট মনে হচ্ছিল। খেয়াল করে দেখলাম, আমার নাক ও থুঁতনির হোয়াইটহেডস অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। মুখে হাত বুলিয়ে মনে হচ্ছিল বেশ মসৃণ লাগছে আগের থেকে। ভালো অভিজ্ঞতার কারণে প্রোডাক্টটি এখন আমার সাপ্তাহিক রুটিনের একটা অংশে পরিণত হয়েছে।
তাহলে আমরা জেনে নিলাম ত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান সম্পর্কে। ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্টের সাইড ইফেক্ট না থাকলেও স্কিনে স্যুট করার একটা ব্যাপার থাকে। সবার ত্বকে সব উপাদান স্যুট করে না এটা আমরা সবাই জানি। তাই ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া উচিত। আপনি চাইলে অনলাইনে অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। এছাড়াও তাদের দুটি ফিজিক্যাল স্টোর আছে সীমান্ত সম্ভারে আর যমুনা ফিউচার পার্কে, সেখানে গিয়ে দেখে শুনেও কিনে নিতে পারেন আপনার প্রয়োজনীয় স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার বা মেকআপ প্রোডাক্ট। সবাই ভালো থাকবেন।
লিখেছেন- মাশতুরা শিকদার খুশবু
ছবি- সাজগোজ