বয়স বাড়ার সাথে সাথে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়বে এটা খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। আমরা সবাই জানি ২৫/৩০ এর পর স্কিনে একটু একটু করে ফাইন লাইনস, রিংকেলস সবারই দেখা দেয়। কিন্তু এই বয়সের আগেই বিশের কোঠায় পা দিতে না দিতেই যদি চোখের আশেপাশে রিংকেলস দেখা দেয়, তাহলে তো চিন্তার শেষ থাকে না! তাই একটা নির্দিষ্ট বয়স থেকেই আমাদের অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্ট শুরু করা উচিত। সবসময় যে অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্ট পার্লারে গিয়ে করতে হবে এমন কোনো কথা নেই! আমি ঘরে বসেই খুব কম খরচে কেমিক্যাল ফ্রি অ্যান্টি এজিং ফেইস মাস্ক বানিয়ে ফেলি, যেটা আমার স্কিনে লং টার্ম বেনিফিট দেয়। অ্যান্টি এজিং ফেইস মাস্ক দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে খুব সহজেই ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়, সেটাই আজ আমরা জানবো।
স্কিনে আর্লি এজিং সাইন কেন দেখা দেয়?
বয়সের আগেই স্কিনে এজিং সাইন ভিজিবল হওয়ার কিছু কারণ আছে। আমাদের লাইফ স্টাইল, সান ড্যামেজ, ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন, ত্বকের যত্ন না নেওয়া এগুলোর কারণে আমাদের প্রি ম্যাচিউর এজিং হতে পারে। আমরা রেগুলার লাইফে এমন অনেক ভুল করছি যেগুলোর কারণে খুব তাড়াতাড়ি ত্বক বুড়িয়ে যাচ্ছে! তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমি আজকে শেয়ার করবো কীভাবে আপনারা খুব সহজেই প্রি ম্যাচিউর এজিং প্রিভেন্ট করতে পারবেন কার্যকরী ফেইস মাস্ক দিয়ে! তবে বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করা কিন্তু মাস্ট। ক্লেনজিং-টোনিং-ময়েশ্চারাইজিং-সান প্রোটেক্টিং এই স্টেপগুলো মেনটেইন করার পাশাপাশি স্কিন কেয়ার রুটিনে ইনক্লুড করুন অ্যান্টি এজিং ফেইস মাস্ক। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক।
অ্যান্টি এজিং ফেইস মাস্ক
ত্বকের যত্ন নিতে প্রাকৃতিক উপাদান এবং অরগানিক সামগ্রী আমার খুবই পছন্দ। “রাজকন্যা স্কিন টাইটেনিং উপটান” আমার হলিগ্রেইল প্রোডাক্ট। কারণ এই উপটানে এমন কিছু অ্যান্টি এজিং ইনগ্রেডিয়েন্টস আছে যা স্কিনকে ভেতর থেকে ক্লিন করার পাশাপাশি স্কিনের রিংকেলস, ফাইন লাইনস কমায়। প্রথমে আমরা জানবো রাজকন্যা স্কিন টাইটেনিং উপটানে কী কী উপাদান আছে।
রাজকন্যা স্কিন টাইটেনিং উপটানে কী কী উপাদান আছে?
১) রাইস পাউডার
রাইস পাউডারে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা আমাদের স্কিনের এজিং প্রিভেন্ট করে। হেলদি স্কিন সেলস প্রোমোট করতে সাহায্য করে। ইউভি রে থেকে যে ড্যামেজ হয়, সেটা কমিয়ে ফেলে।
২) মুলতানি মাটি
আমরা সবাই জানি মুলতানি মাটি আমাদের স্কিনের জন্য কতটা উপকারি! মুলতানি মাটি স্কিনের অতিরিক্ত তেল দূর করে একনে কমাতে সাহায্য করে। সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোলের পাশাপাশি স্কিনের রোমকূপ পরিষ্কার রাখে।
৩) লেনটিল পাউডার
লেনটিল পাউডারকে বলা হয় বেস্ট ন্যাচারাল এক্সফোলিয়েটর, কেননা এটা আমাদের স্কিনের ডেড সেলস রিমুভ করে স্কিনকে সফট করে। ব্ল্যাকহেডস রিমুভ করতেও হেল্প করে।
৪) Gond katira
এই উপাদানটি আমাদের স্কিনের রিংকেলস ও ফাইন লাইনস কমায়। তাই এটা আমাদের স্কিনের জন্য খুবই উপকারী।
৫) রোজ পাউডার
রোজ পাউডারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা স্কিনের ইরিটেশন কমায়, ফ্ললেস ও হেলদি স্কিন পেতে হেল্প করে।
৬) লেমন পিল পাউডার
লেবুর খোসা স্কিনকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। স্কিনে গ্লো ফিরিয়ে এনে রিংকেলস, একনে, কালো দাগ এগুলো কমাতেও হেল্প করে।
স্কিন টাইপ ও কনসার্ন বুঝে অ্যান্টি এজিং মাস্ক
উপাদানগুলো তো জানা হলো, এখন আমরা জানবো কীভাবে ব্যবহার করতে হবে এই অ্যান্টি এজিং মাস্ক। এটি সব স্কিন টাইপেই ব্যবহার করা যাবে। চলুন তাহলে জেনে নেই ব্যবহারের নিয়ম।
অয়েলি টু কম্বিনেশন স্কিনের জন্য
- রাজকন্যা স্কিন টাইটেনিং উপটান এর সাথে গোলাপজল মিশিয়ে ভালোভাবে মাস্কটি মিক্স করে নিতে হবে।
- এরপর চোখের এরিয়া বাদ দিয়ে পুরো মুখে মাস্কটি লাগিয়ে নিবেন।
- ১০-১৫ মিনিট পর নরমাল পানি দিয়ে মুখ আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলবেন।
- এভাবে সপ্তাহে ২ দিন মাস্কটি লাগাতে পারেন।
ড্রাই স্কিনের জন্য
- রাজকন্যা স্কিন টাইটেনিং উপটান এর সাথে দুধ আর গোলাপজল মিক্স করে নিতে হবে।
- পুরো মুখে, গলায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিয়ে ১০/১৫ মিনিট পর ধুয়ে নিতে হবে।
অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্টের পাশাপাশি সানট্যান দূর করতে
- রাজকন্যা স্কিন টাইটেনিং উপটান পাউডার এর সাথে পরিমানমতো টকদই ও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।
- এরপর মুখ ও গলায় ভালোভাবে মাস্কটি অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে।
- শুকিয়ে গেলে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- এই মাস্কটি সানট্যান রিমুভের পাশাপাশি স্কিনটোন ব্রাইট করতেও সাহায্য করবে।
গ্লোয়িং স্কিন পেতে
- উপটান পাউডার এর সাথে এক চামচ মধু এবং ২ চামচ দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
- এই মাস্ক চোখের এরিয়া বাদ দিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে নিন।
- ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- এই মাস্কটি স্কিনকে গ্লোয়িং করবে, সেই সাথে অ্যান্টি এজিং বেনিফিট তো পাবেনই।
এক্সট্রা টিপস
রাজকন্যা স্কিন টাইটনিং উপটানকে ন্যাচারাল ফেইস স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে ভেজা মুখে অল্প একটু উপটান নিয়ে জেন্টলি আপওয়ার্ড পজিশনে আলতো হাতে ম্যাসাজ করতে পারেন ১ মিনিট। এরপর নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এতে ডেড স্কিন সেলস রিমুভ হয়ে স্কিন হবে সফট। সপ্তাহে একদিন এই প্রসেসটি ফলো করা যেতে পারে।
তাহলে জেনে গেলেন, কতো সহজে ঘরে বসেই অ্যান্টি এজিং মাস্ক বানিয়ে নিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। বেসিক স্কিন কেয়ারের পাশাপাশি এই এক্সট্রা কেয়ার আপনার স্কিনের প্রি ম্যাচিউর এজিং প্রিভেন্ট করে স্কিনকে রাখবে গ্লোয়িং এবং হেলদি। এই সবগুলো প্রাকৃতিক উপাদান যখন একটি মাস্কেই পেয়ে যাচ্ছেন, তখন আর কী লাগে! দামটাও একদম হাতের নাগালে। অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি, আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন।
ছবি- সাজগোজ