শরীরকে সবসময় ফিট রাখাটা যেমনটা আমরা কঠিন ভাবি, তেমন কঠিন কিন্তু নয়। শুধু একটু সৎ ইচ্ছা ও ধৈর্য যদি থাকে! কিছু রেগ্যুলার রুটিন মেনে চললে অনায়াসেই শরীরের সুস্থতা নিশ্চিত সম্ভব। অসুস্থ শরীরের ক্লান্তিভার যেন আমাদের সুস্থভাবে জীবনযাপনের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে, তা কিছু প্রয়োজনীয় হেলথ কেয়ার টিপস দিয়েই আজকের রামাদান হেলথ কেয়ার ৩ পর্বটি সাজালাম।
রামাদান হেলথ কেয়ার ৩ পর্বের টিপসসমূহ
১) প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা এবং নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম হলো সুস্থতার চাবিকাঠি। যাদের কায়িক পরিশ্রম কম হয়, তাদের অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। বাড়তি চর্বি, মিষ্টি, আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিঙ্কস, ফাস্টফুড এবং সবরকম প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে বেশি বেশি ফলমূল আর শাক-সবজি খাবার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
২) ফলমূল ও শাকসবজি
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম এবং ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। ফলমূল, শাকসবজি এবং ওরাইজেনল সমৃদ্ধ খাবার আপনার হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৩) চিবিয়ে খাবার অভ্যাস করুন
পাকস্থলীতে গ্যাস সৃষ্টি হয় এমন খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। দ্রুত না খেয়ে ধীরে ধীরে ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৪) শর্করা জাতীয় খাবার খান
সেহরিতে বিভিন্ন রকম ভালো শর্করা জাতীয় খাবার খান। যেমন- ঢেঁকি ছাটা চাল, বাসমতি চাল, লাল আটার রুটি ইত্যাদি। এগুলো ধীরে ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘসময় পেট ভরা লাগে বলে ক্ষুধা লাগে না।
৫) প্রচুর পানীয় পান করুন
ইফতারের পর তাৎক্ষণিক এনার্জি পেতে ফলের রস, দুধ, চিনিযুক্ত লেবুর শরবত- এগুলো বেছে নিতে পারেন। পানিস্বল্পতা বা ডিহাইড্রেশন-কে দূরে রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
৬) পর্যাপ্ত সময় ঘুমান
প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমান। আপনার সুস্থতা এবং সার্বিক পারফরম্যান্স কিন্তু আপনার ঘুমের অভাবের জন্য ভালো নাও হতে পারে।
৭) নিজেকে সময় দিন
নিজের ভালোলাগার কাজের জন্য আলাদা করে সময় বের করুন,যেমন– বই পড়া, সামাজিকতা বজায় রাখা, কোন শখ লালন করা ইত্যাদি। নিজেকে সময় দিলে মস্তিষ্ক শান্ত হবে এবং দুশ্চিন্তা কমবে। এতে করে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন।
৮) নিজের কাজে মনোযোগ দিন
নিজের কাজ এবং টাইমলাইনে মনোযোগ দিন। সময়ের সব কাজ সময়ে শেষ করতে পারলে আপনি কর্ম জীবন নিয়ে ভালো অনুভব করবেন এবং চাপ বোধ করবেন না।
৯) সঠিক সময়ে পানি পান করুন
প্রতিবার খাবার গ্রহণের অন্ততপক্ষে আধঘণ্টা আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। খাবার গ্রহণের পরপর পানি পান করবেন না, এতে করে হজমে অসুবিধা অনুভব করতে পারেন। খাবার গ্রহণের ৩০ মিনিট পর পানি করতে পারেন।
১০) কোলেস্টরল কমাতে কুকিং অয়েল খান
ভোজ্যতেলে থাকা ওরাইজেনল এবং পিইউএফএ খারাপ কোলেস্টরল কমায় এবং আপনার হার্ট হেলথ ভালো রাখে।আর ওমেগা ৩ (পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড) এবং অরিয্যানল সমৃদ্ধ কুকিং অয়েল খান। এটি আপনার শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করবে।
উপরিউক্ত নিয়মগুলো আপনার সুস্থ জীবনযাপনে সহায়ক হবে। সন্তানদের খাওয়া-দাওয়া ও সুস্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখাটা খুব জরুরী। কারণ এই ব্যাপারগুলো ছোটবেলা থেকেই অভ্যাসে পরিণত করতে হয়। আশা করছি, এই টিপস আপনাদের কাজে আসবে। সুস্থ থাকুন সবাই।
ছবি- সংগৃহীত: shutterstock